ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের মূর্তি যাঁরা ভেঙেছেন, তারা ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ করেছেন। এই মূর্তিভঙ্গকারীদের যত দ্রুত সম্ভব শাস্তির ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। এর জন্য বিদ্যাসাগরের মূর্তিটি, কলেজের যে ঘরে ছিল তার সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখলেই তো ল্যাঠা চুকে যায়। এই ফুটেজ দেখতে এত দেরি হচ্ছে কেন? অপরাধীদের শনাক্ত কি করা গেল? এই ধরনের প্রশ্নগুলির উত্তর রাজনৈতিক জটিল ঘূর্ণিপাকে আরও কঠিন হয়ে যাচ্ছে। অগত্যা বেশ কিছু ‘সারকামস্ট্যানশিয়াল এভিডেন্স’ বা ‘পারিপার্শ্বিক প্রমাণের সাহায্য নিতে হচ্ছে। কংগ্রেস নেতা অরুণাভ ঘোষ যেমন বলেছেন : ‘আমি বিজেপির ঘোর বিরোধী, কিন্তু পারিপার্শ্বিক প্রমাণ বলছে বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙা তৃণমূলেরই কাজ।
পারিপার্শ্বিক প্রমাণের ভিত্তিতেই যদি বিদ্যাসাগর কলেজে বিদ্যাসাগরের মূর্তিভঙ্গকারীদের চিহ্নিত করতে হয়, তবে ইতিহাসটাকেও একটু বুঝে নিতে হবে। বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙার রেকর্ড এ রাজ্যে এখনও পর্যন্ত স্বীকৃতভাবে একটি দলেরই রয়েছে;যারা গণতান্ত্রিক আন্দোলনের প্রতি আস্থা হারিয়ে, এমনকী ভারতবর্ষের সংবিধানের প্রতিও যাবতীয় অসম্মান ও অনাস্থা দেখিয়ে কেবল অগণতান্ত্রিক উপায়েই ক্ষমতা দখল করতে চায়নি, চীনের প্রেসিডেন্ট মাও জে দঙের প্রতি বিশেষ আনুগত্য দেখিয়ে ভারতের মাটিতে বসে, ভারতেরই খেয়েপরে ভারত ভূখণ্ডকে চীনের ক্রীতদাসে পরিণত করতে চেয়ে, চীনের চেয়ারম্যান, আমাদের চেয়ারম্যান’ স্লোগানে মাতিয়ে দিয়েছিল, চলতি কথায় যাদের নকশাল বা মাওবাদী বলা হয় ১৯৭০-এর গোড়ায় কলেজ স্কোয়ারে বিদ্যাসাগরের মর্মরমূর্তির শিরচ্ছেদ করে তারা ‘বুর্জোয়াতন্ত্র’, ‘সাম্রাজ্যবাদের দালালি’র বিরুদ্ধে বিজয়-নিশান উদ্দীপিত করেছিলেন।
বর্তমান সময়ে মাওবাদীদের অস্তিত্ব কোথায় ? প্রথমত, ছত্তিশগড়- লালগড় ইত্যাদির জঙ্গলবহুল এলাকায় রয়েছে। সে সমস্ত জায়গায় একপ্রকার নারকীয় দুষ্কৃতীরাজ চলে। যারা এগুলি সরাসরি পরিচালনা করে তাদের শিক্ষা-দীক্ষা বিশেষ নেই কিন্তু শহরে বসে যারা এদের মদত জোগায়, যাদের ‘শহুরে নকশাল’ বা ‘আরবান নকশাল’ বলে চিহ্নিত করা হয়েছে, এই দ্বিতীয় প্রকার নকশাল-গোষ্ঠী শুধুমাত্র ভারতবর্ষের সুরক্ষাই নয়, ভারতীয় কৃষ্টি ও সংস্কৃতির পক্ষেও বিপজ্জনক। এদেরকে এখন আরেকটি বিশেষ নামেও চিহ্নিত করা হচ্ছে, সেটি হলো—‘টুকরে টুকরে গ্যাং’। অর্থাৎ যারা স্লোগান দেয় ‘কাশ্মীর মাঙ্গে আজাদি’, ‘মণিপুর মাঙ্গে আজাদি’, ভারত তেরে টুকরে হোঙ্গে, ইনসাল্লাহ, ইনসাল্লাহ। বাঙ্গলায় এদের মুখপত্রটিকে সবাই চেনে, যাদের সম্পাদকীয় স্তম্ভের উপরে বঙ্গিমচন্দ্র রচিত দেশপ্রেমোদ্দীপক স্তোত্র থাকে, আর সম্পাদকীয়গুলি প্রধানত তীব্র ভারতবিদ্বেষে পরিপূর্ণ থাকে। এই বাজারি’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে পত্রিকার দোর্দণ্ডপ্রতাপ ও সর্বময়ী কর্তীর একটি উত্তর সম্পাদকীয়, অমিত শাহের মিছিল আর বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙাকে কেন্দ্র করে। অসামান্য চিত্রনাট্যে তিনি হাজির করেছেন তার বাড়ির ‘সুভাষিণী ব্যক্তিত্বময়ী পরিচারিকা’ মমতাজ, ও তার গাড়ির চালক রফিকুল ইসলামকে। এই দুই মুসলমান (ভুল করেও ভাববেন না এমন সাম্প্রদায়িক বিশেষণ স্বস্তিকার দেওয়া, খোদ লেখিকাই এক বিশেষ উদ্দেশ্যে এই চিহ্নিতকরণ করেছেন) চরিত্রই বেজায় ক্ষিপ্ত কেন বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙা হলো তা নিয়ে ? এবিষয়ে রফিকুলের মন্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ : ‘অবাঙালি গুন্ডা ছাড়া এমন কাজ কেউ করতে পারে না।
চিত্রনাট্য এগিয়েছে নিতান্ত মসৃণগতিতে, বাঙ্গালিয়ানার সঙ্গে ভারতীয়ত্ব পৃথক হয়েছে, জুড়ে গিয়েছে ভারতীয় মুসলমানত্ব।
আরও এককাঠি উপরে গিয়েছে বিদ্যাসাগরের নারী-সংস্কারের প্রভাব, মুসলমান সমাজকে কীভাবে প্রভাবিত করেছে মমতাজকে দিয়ে লেখিকা প্রত্যক্ষ করেছেন, ঠিক অনেকটা মমতা-কে দিয়ে যেমন বাঙ্গলার উন্নয়নকে প্রত্যক্ষ করা যায় সেভাবেই আর কী! তারপরেই ঝুলি থেকে বেড়াল বেরিয়ে পড়েছে। অমিত শাহের রোড শো নাকি মুসলমান অধ্যুষিত কলাবাগানের জনতাকে ভয় দেখাতে বাধ্য করা হয়েছিল। পাঠক নিশ্চয়ই এবার হাসতে শুরু করেছেন। সত্যি কথা বলতে কী, খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও এ জাতীয় তত্ত্ব আবিষ্কার করতে সমর্থ হননি। যা করেছেন বাজারি সংবাদমাধ্যমের ডিফ্যাক্টো এডিটর। সবশেষে তিনি মনের কথা বলেছেন, ২০১৯-এর নির্বাচন নরেন্দ্র মোদীকে পরাস্ত করার নির্বাচন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে এখন ভেবে লাভ নেই। সুতরাং মোদীকে হারাতে মমতাকেই ভোট দিন, এককাট্টা হয়ে, বাঙ্গালিত্ব বাঁচানোর তাগিদে।
কী ভাবছেন উক্ত সম্পাদকীয়তে বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙার গল্প শেষ পর্যন্ত তৃণমূলকে ভোট দিন’, ‘মোদীকে রুখুন’ প্রচারে পর্যবসিত হলো কেন? আসলে অঙ্কটা খুব জটিল। বিদ্যাসাগর কলেজের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদকের নাম জানেন তো?
সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘটনার দিন রাত থেকে একটি বাণী ছড়িয়ে পড়ছিল—“রাজ্যের প্রতিটি মাদ্রাসায় বিদ্যাসাগরের মূর্তি চাই।’শাক দিয়ে মাছ ঢাকার অতি কু-চেষ্টা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় করেছেন। সেগুলি ধোপে টেকেনি। এলাকাবাসী থেকে রাজ্যবাসী, এমনকী মুখে স্বীকার না করলেও মিডিয়াও বুঝে গিয়েছিল যে দুষ্কৃতীরা একটি শান্তিপূর্ণ মিছিলের ওপর। হামলা করার জন্য কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, বিদ্যাসাগর কলেজে তৃণমূলের পতাকা হাতে জমা হয়ে গো-ব্যাক স্লোগান, কালো পতাকা প্রদর্শন ইত্যাদি নােংরামি করছিল, বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙাও তাদেরই কাজ। নইলে সমস্ত ভাঙচুর হওয়া দ্রব্য অকুস্থলেই থাকলো, আর খালি বিদ্যাসাগরের মূর্তিই কলেজ চত্বরের বাইরে ফেলে প্রেসকে ডাকা হলো!
আসলে কয়েক বছর আগেও যা কল্পনা করা যেত না, এখন তাই বাস্তবায়িত হচ্ছে। মমতা ব্যানার্জির রাজত্বে সংখ্যালঘু তোষণের চরম পরিণামে বাঙ্গলার শিক্ষাঙ্গনগুলি সাম্প্রদায়িক বিষবাষ্পে পরিপূর্ণ হয়ে গিয়েছে। সেদিক থেকে নজর ঘোরাতেই বাংলা ও ভারতের আরবান নকশালরা ‘হিন্দুত্বে’র জিগির তুলে রাজ্যবাসীকে বিপদের জুজু দেখায়। যে উপাসনা-পদ্ধতিতে মূর্তিপুজো ঘৃণিত, বিদ্যাসাগর মূর্তি তাদের হাতেই কলুষিত হয়েছে কিনা এই সন্দেহ-প্রবণতা থেকেই বিদ্যাসাগরের মূর্তি চাই, প্রতিটি… জাতীয় বাণী রাষ্ট্র হয়ে যায় সোশ্যাল মিডিয়ায়। নজর ঘোরাতে নকশালি মুখপত্রের সেই উত্তর-সম্পাদকীয়টি যেভাবে সাজানো হয়েছে গল্প-গাছা দিয়ে, তাতে এই সন্দেহই আরও জোরাল হয়। এই প্রসঙ্গে বলি, ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী বিদ্যাসাগর কলেজের এক কৃতী ছাত্র সংবাদমাধ্যমের ভণ্ডামির প্রতিবাদ করে ফেসবুকে এক পোস্ট দেয় যে বিদ্যাসাগর মূর্তি ভাঙার দুষ্কৃতীকারীরা তৃণমূলিরাই। মুহূর্তে এই পোস্ট ভাইরাল হয়ে যায়। ছাত্রটির ওপর চাপ আসতে থাকায় রাতে সে ফেসবুক ডি-অ্যাকটিভ করতে বাধ্য হয়। কিন্তু ততক্ষণে যা হবার, তা হয়ে গিয়েছে। ফেসবুক, হোয়াটস অ্যাপে সবাই কপি-পেস্ট করতে থাকে এই বয়ান, যার প্রথম লাইনটি ছিল ‘আমি বিদ্যাসাগর কলেজের ছাত্র। সোশ্যাল মিডিয়া নাড়াচড়া করার অভ্যাস যাদের আছেন, তারা জানেন এসব ক্ষেত্রে অনেকে তলায় সংগৃহীত বা কালেকটিভ লিখে দেন। অনেকেরই আবার এসব ঋণস্বীকারের কোনও বালাই নেই। কিন্তু তাই বলে এসব ভাইরাল পোস্টের সারবত্তা বিন্দুমাত্র হারায় না। এখানে সুকৌশলে দেখা গেল ছাত্রটির পোস্ট সমেত বাদবাকি যেখানে যার যা চোখে পড়েছে সেসব তুলে ধরে এ সমস্তই বিজেপির আই টি সেলের প্রচার বলে চালানো হলো। প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে সবার মুখে ‘আমি বিদ্যাসাগর কলেজের ছাত্র’ গোছের সিম তৈরি হয়ে গেল। মিডিয়া হাউসগুলো পর্যন্ত সেই জলজ্যান্ত কৃতী গবেষণারত ছাত্রটির হদিশ’ করতে পারল না (সাংবাদিকতার কী করুণ অবস্থা, আমরা তাই তার সামাজিক নিরাপত্তার কারণে নামোল্লেখ করলাম না), সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘গসিপ’কেই তারা। ছাপার অক্ষরে লিখে দিল। বাজারি মিডিয়ার সেই দোর্দণ্ডপ্রতাপ লেখিকা সেই পরিকল্পিত স্রোতেই গা ভাসালেন বোধহয় পরিকল্পনা মাফিকই— সবার বয়ানে ‘দরজা পেরোতে’, কীভাবে দরজা পেটোতে পরিণত হলো এই প্রশ্ন তুলে ? কপি-পেস্ট করলে তাই হয় মাননীয়া! কাশ্মীরি । জাতীয়তাবাদ বোঝেন, জইশকে সমর্থন করে ভারত সরকারকে টোন কাটতে পারেন, আর এটুকু বুঝবেন না তা হতে পারে।
কী ভাবছেন, অহেতুক একটি বাজারি সংবাদমাধ্যমের পেছনে পড়েছি। ২০১৮-র ২৩ মার্চ ওই পত্রিকায় প্রকাশিত একটি চিঠি পড়ে নিন, যেখানে ত্রিপুরার বিলোনিয়ায় লেনিন মূর্তি ভাঙার পরিপ্রেক্ষিতে ওই চিঠিতে কলকাতায় নকশালদের বিদ্যাসাগর মূর্তি ভাঙাকে এমন ‘সিমপ্যাথাইজ করা হয়েছিল (মূর্তি ভাঙা নাকি মূর্তি গড়ার তাগিদে) যে সবাই বুঝে গিয়েছিল চোরের মন বোঁচকার দিকে পড়ে আছে। বাম-রাজত্বকালে বিলোনিয়ায় জমি-মালিকের জমি দখল করতে সুবিশাল লেনিনমূর্তি গড়ে তোলা হয়েছিল (যে কৌশলে বাম-তৃণমূল এরাজ্যে বহু বেসরকারিসরকারি জমি দখল করেছে), এই সত্যকে আড়াল করতে এবং অবশ্যই বিজেপিকে ‘অসভ্য, বর্বর’ হিসেবে চিহ্নিত করতে ও নকশালি বর্বরতার দাঁত-নখ আড়াল করতেই ওই ধরনের চিঠি লেখা আর তা প্রকাশিতও হয়েছিল। ভাঙার রাজনীতি মাওবাদী-নকশালেরাই করে,শহুরেরা কথায় আর গ্রামীণরা কাজে। সুতরাং নকশালি মুখপত্রের দৌলতেই এদের আরও একবার চেনার সুযোগ ‘বাঙ্গালি’ পাচ্ছে। সত্যিই, ‘চিনে নেওয়া গেল।
মূর্তি ভাঙার মতো একটি দুষ্কৃত-কর্মে যে হিন্দু-মুসলমান, বাঙ্গালিঅবাঙ্গালি এতসব সিরিয়াস বিষয় জড়িয়ে থাকতে পারে তা সাধারণভাবে ভাবা যায় না। কিন্তু যখন দেখা যায় জনৈক নকশাল সোশ্যাল মিডিয়ায় ভোট শুরুর প্রাক্কালে বিদ্যাসাগরমশাইকে ব্রিটিশ ‘দালালদের পাণ্ডা’আখ্যা দিয়ে তার “টিকি ধরে টান দেওয়ার আহ্বান জানায়, আর ভোটপর্ব শেষের মুখে ‘ধ্বংসের মুখোমুখি আমরা বলে ডাকছেড়ে ‘সিপিএম, তৃণমূল, নকশাল, অবেজেপি’ সবাইকে নিয়ে ‘বাঙ্গালিকে এককাট্টা করতে চায়, তখন এদের কুমতলব ধরতে আর কারুর বাকি থাকে না। এরা বুঝে গিয়েছে। সিপিএম কোমায়, আর বাঁচবে না। তাই এদের জীবনরক্ষার সেরা আশ্রয় মমতা ব্যানার্জির দল, যারা প্রতিনিয়ত ভারতবর্ষের গণতান্ত্রিক কাঠামোকে ভাঙতে চায়, ভারতবর্ষের সার্বভৌমত্বকে বিপন্ন করতে চায়।
সিপিএমও এই চরিত্রের হলেও তাদের একটা ঢাকঢাক গুড়গুড় ব্যাপার। ছিল। তৃণমূলের সেই বলাটুকুও নেই। তৃণমূলের অগণতান্ত্রিক নীতির মধ্যেই আরবান নকশালরা তাদের ‘আদর্শগত’মিল খুঁজে পেয়েছে। তাই তৃণমূলি অপকর্ম ঢাকতে খঙ্গহাতে থুড়ি কলম হাতে এরা সবার প্রথমে রাস্তায় নেমে পড়ে। অনিবার্যভাবে এসে যায় হিন্দু- মুসলমান, বাঙ্গালি-অবাঙ্গালিতত্ত্ব। মুখোশের আড়ালে প্রকৃত মুখ হলো—বাঙ্গালিকে ভারতবর্ষ থেকে বিচ্ছিন্ন করা এবং ইসলামি সংস্কৃতিকে বাঙ্গালি সংস্কৃতির সঙ্গে একাত্ম করে দেখানো। ফল?বুঝতেই পারছেন ‘৪৬-৪৭-এর ভয়াবহ দিনগুলি উঁকি মারছে তো? মাথায় রাখবেন এখন কিন্তু শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের মতো কোনও ‘বাঙ্গালি’ ব্যক্তিত্ব নেই।
কোনওকালেই নকশাল-মাওবাদী-বামপন্থীরা বিদ্যাসাগরকে দেখতে পারতো না। এদের ভোলবদল দেখলে গিরগিটিও লজ্জা পাবে। এরা চিরকাল দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের বিরোধী। ফ্যাসিস্ট ইতালি নাৎসী জার্মানিকে রুখতে ব্রিটিশরা ছিল এদের বন্ধু। তাই গান্ধীজীর ভারত ছাড়ো আন্দোলনের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল এরা। বিদ্যাসাগর কেন ১৮৫৭ সালের মহাবিদ্রোহের সময় গোরাসৈন্যদের সংস্কৃত কলেজ ছাউনি ব্যবহার করতে দিয়েছিলেন এই অজুহাতে বিদ্যাসাগর এদের কাছে বুর্জোয়া, সাম্রাজ্যবাদের দালাল। আজ তৃণমূলি দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম্য এদের বিদ্যাসাগর প্রেমিক করে তুলেছে, যেমন রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও গান্ধীবাদের চূড়ান্ত বিরোধীরা গান্ধীপ্রেমী হয়ে উঠেছিল। সুতরাং সাধু সাবধান।
অভিমন্যু গুহ
2019-05-25