কোলকাতায় বিখ্যাত বইয়ের দোকান ‘সেন ব্রাদার্স’-এর মালিক ভোলানাথ সেনকে তার দুইজন কর্মচারী সমেত ধর্মানুভূতিতে আঘাত দেয়ার অভিযোগে দুইজন মুসলিম যুবক নৃশংসভাব খুন করে। ঘটনাটি ঘটে ১৯৩১-এর ৭ মে , খুনিদের নাম আবদুল্লা খান ও আমীর আহমেদ। তার সঙ্গে থাকা সতীশ বন্দ্যোপাধ্যায় ও আরো একজন খুন হন।।
‘প্রাচীন কাহিনী’ নামে তৃতীয় ও চর্তুথ শ্রেণীর পাঠ্য হিসেবে একটি বই ভোলানাথ তার প্রকাশনি থেকে প্রকাশ করেছিলেন। বইটির লেখক স্বয়ং ভোলানাথ সেন।
এটি সরকার পাঠ্য পুস্তক হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছিল। সেই বইতে ইসলাম ধর্মের প্রবর্তক হযরত মুহাম্মদের নামে যে চ্যাপ্টার ছিল সেখানে ভাল ভাল কথা বলে তাকে সম্মান করা হয়েছিল। কিন্তু সেখানে একটা ছবি ছাপা হয়েছিল যেখানে মসজিদে মুহাম্মদ দাঁড়িয়ে আছেন আর তার সামনে জিব্রাইল উপস্থিত। এই ছবিটি বৃটিশ মিউজিয়াম থেকে অনুমতি নিয়ে বইতে প্রকাশ করা হয়েছিল। অর্থ্যাৎ, এই ছবিটি বৃটিশ মিউজিয়ামে রক্ষিত আছে।
কিন্তু ঢাকার একজন মুসলমান জমিদারের ধর্মানুভূতিতে প্রচন্ড আঘাত লাগে এই ছবি দেখে। সে কোলকাতায় এসে দুজন পাঞ্জাবী মুসলমান যু্বককে উদ্বুদ্ধ করে এর প্রতিশোধ নেয়ার জন্য। জমিদারের কথামত দুই যুবক ভোলানাথকে খুন করে যায় তার দুই কর্মচারী সমেত।
বিপ্লবী নগেন্দ্রনাথ দত্ত এই সম্পর্কে স্মৃতিচারণ করেছিলেন, ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দে আমরা যখন স্বদেশী করে আলীপুরে প্রেসিপেন্সী জেলে ছিলাম তখন ঐ যুবক দুটিও এই জেলে ছিল।
দেখতাম তাদের দেখতে মুসলমান নারী-পুরুষ এসে ভীড় করত। তারা তাদের ভক্তিশ্রদ্ধা জানিযে যেতো।পরে মুসলিম সমাজের কাছে তারা শহীদের মর্যাদা পেযেছিল। ইসলামের নবীকে নিয়ে সুখ্যাতি করেও খুন হতে হয়েছিল লেখক ও প্রকাশক ভোলানাথ সেনকে।
এই জন্যই হয়ত বাংলার তথাকথিত বুদ্ধিজীবিরা ইসলাম সম্মন্ধে সম্পূর্ণ নীরব থাকে তাঁদের কলম থমকে যায় লিখতে গিয়ে যদি গর্দান নেবে যায় ভোলানাথ সেনের কথা মাথায় রেখে তাঁরা নিশ্চুপ থাকে কলকাতাতে এমন কি কলজে স্ট্রিটে ভোলানাথ সেনের কোন মূর্তি নেই বা একটা ছোট্ট রাস্তা পর্যন্ত চোঁখে পরে না।
(ভারত দর্পন থেকে)