জোর ধাক্কা খেল তৃণমূল, কলকাতা হাইকোর্টের বার অ্যাসোসিয়েশনের ভোটেও বিজেপি ঝড়

কলকাতা হাইকোর্টের বার অ্যাসোসিয়েশনের ভোটে এ বার জবরদস্ত ধাক্কা খেল শাসক দল তৃণমূল। ভোটাভুটিতে সিংহ ভাগ পদেই জিতে গেলেন বিজেপি বা তাদের সমর্থিত প্রার্থীরা। 

যেমন বার অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট পদে ভোটাভুটিতে জিতেছেন বিজেপি সমর্থিত নির্দল প্রার্থী। তৃণমূল সেখানে চতুর্থ হয়েছে। ভাই প্রেসিডেন্ট পদে সরাসরি বিজেপি প্রার্থীই জিতেছেন। তৃণমূল তৃতীয় স্থানে রয়েছে। সচিব পদেও ভোটাভুটিতে বিজেপি যখন পয়লা নম্বরে তখন তৃণমূল ডাহা হেরে তিন নম্বরে পৌঁছে গিয়েছে। আবার সহকারী সচিবের দুটি পদের একটিতে বিজেপি জিতেছে, অন্যটিতে কংগ্রেস। এমনকী কমিটির সদস্য পদেও নটি আসনের মধ্যে ৫ টিই জিতে নিয়েছে বিজেপি। শুধু কোষাধ্যক্ষ পদে জিতেছেন শাসক দলের প্রার্থী।

বার অ্যাসোসিয়েশনের ভোটাভুটিকে মামুলি বলা যায় না। শাসক দলের তাবড় নেতারা এই ভোটাভুটিতে পরোক্ষে জড়িয়ে থাকেন। সাংসদ তথা আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় ভোটাভুটির সময় ঘুঁটি সাজান। সে দিক থেকে ভোটাভুটির এই ফলাফল তাৎপর্যপূর্ণ বইকি। বিজেপি-র জন্য এটা বড় সাফল্য বলে মনে করা হচ্ছে।

স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, বাংলায় কী এ বার পরিবর্তনের পরিবর্তন শুরু হয়ে গেল। ২০০৯ সালে লোকসভা ভোটে তৃণমূল বাংলায় কুড়িটি আসনে জেতার পর ঠিক এই ধারাই শুরু হয়ে গিয়েছিল বাংলায়। বার অ্যাসোসিয়েশন থেকে শুরু করে কলেজের পরিচালন কমিটিগুলির ভোটাভুটিতে হারতে শুরু করেছিল বামেরা। সে দিনের ঘটনার সঙ্গে বার অ্যাসোসিয়েশনের এ বারের ভোটাভুটির অনেক মিল রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

গুরুত্বপূর্ণ হল, হাইকোর্টের বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে অসন্তোষ প্রকাশ করে সরকারি আইনজীবীরা গতকাল থেকে বয়কট শুরু করেছিলেন। কিন্তু বার অ্যাসোসিয়েশনের ভোটের এই ফলাফলের প্রকাশ হতেই কাকতালীয় ভাবে তাঁরা এ দিন বয়কট প্রত্যাহার করে নেন। অনেকে এই দুটি ঘটনার মধ্যেও মিল খোঁজার চেষ্টা করছেন।

এ দিনের ফলাফলে যারপরনাই উজ্জীবিত রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। তাঁদের বক্তব্য, তৃণমূল সর্বস্তরে অনিয়ম করেছে। এতোদিন মানুষ ভয়ে কিছু বলতেন না। কিন্তু লোকসভা ভোটের পর মানুষের ভয় কেটে গিয়েছে। এখন আর মুখের উপর প্রতিবাদ জানাতে কেউ ভয় পাচ্ছে না। ফলে পাল্টে দেওয়ার পালা শুরু হয়ে গিয়েছে।

তৃণমূলের নেতারা অবশ্য ঘরোয়া আলোচনায় বলেন, বার অ্যাসোসিয়েশনের ভোটাভুটিতে এত বড় প্রেক্ষাপটে দেখার কোনও কারণ নেই। আইনজীবীদের নিজেদের মধ্যে রসায়নের উপরেই ভোটাভুটির ফল নির্ভর করে। বোকার মতো লাফালাফি করছে বিজেপি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.