কলকাতাঃ উনিশের লোকসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যে ২২ আসনে জয়ের লক্ষ্যমাত্রা রেখেছিলেন বিজেপির তৎকালীন সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। সেবার অমিত শাহের লক্ষ্য সম্পূর্ণ পূরণ না হলেও ধারে কাছে গিয়েছিল। উনিশে বিজেপি বাংলা থেকে ১৮টি আসন তুলে বুঝিয়ে দিয়েছিল যে, তাঁরা বাংলায় এবার পালাবদলের লক্ষ্যে নামবে। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে অমিত শাহ প্রতিটি জনসভা এবং সাক্ষাৎকারে দাবি করে এসেছেন যে, বিজেপি ২০০ আসন নিয়ে ক্ষমতায় আসছে।
আরেকদিকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও দাবি করে আসছেন যে, তৃণমূল ২০০-র বেশি আসন নিয়ে ক্ষমতায় আসছে। বৃহস্পতিবার বাংলার অষ্টম দফার নির্বাচনের পর বুথ ফেরত সমীক্ষা প্রকাশিত হয়েছে। একাধিক সংস্থা দ্বারা করা সমীক্ষায় বিজেপি হোক আর তৃণমূল কোনও দলই যে ২০০ আসন পাচ্ছে না, সেটা স্পষ্ট হয়েছে।
এছাড়াও রাজ্যে বিজেপি-তৃণমূলের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডির লড়াইয়ের পূর্বাভাস পাওয়া গিয়েছে। কিছু কিছু সমীক্ষা দাবি করছে যে, ‘বাংলা নিজের মেয়েকেই চায়” আবার কিছু কিছু সমীক্ষা বাংলায় পরিবর্তন হচ্ছে দেখাচ্ছে। তবে এক্সিট পোল আর ফলাফলের মধ্যে যে ফারাক থাকে, তা এর আগেও অনেকবার দেখেছি আমরা।
প্রসঙ্গত, এবার বঙ্গ জয়ের জন্য বিজেপি মূলত হিন্দু ভোট এক করার উপর জোর দিয়েছিল। আর সেই ক্রমে অমিত শাহ এবং নরেন্দ্র মোদী প্রায় র্যালিতেই তৃণমূল সরকারকে বিঁধে বলেছিলেন যে, এ রাজ্যে দুর্গাপুজো, সরস্বতী পুজো করার জন্য আদালতে যেতে হয়। এমনকি ওনারা এও বলেছিলেন যে, দুর্গা পুজোর বিসর্জন পর্যন্ত বন্ধ করে দেয় এই রাজ্যের মমতা সরকার।
বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বদের মন্তব্যে এটা স্পষ্ট ছিল যে তাঁরা এবার হিন্দু ভোটের উপর ভর করে বাংলা দখলের স্বপ্ন দেখছে। কিন্তু তাঁদের এই মেরুকরণের রাজনীতি ঠিক কতটা সফল? এক্সিট পোলের সমীক্ষা অনুযায়ী, রাজ্যের প্রায় ৫০ শতাংশ হিন্দুরা বিজেপির পাশে রয়েছে। সমীক্ষা অনুযায়ী, রাজ্যের ৪৯.৫০ শতাংশ হিন্দুরা বিজেপির হয়ে ভোট দিয়েছে।
আরেকদিকে, রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলও বড় শতাংশ হিন্দু ভোট দখল করতে সক্ষম হয়েছে। সমীক্ষা অনুযায়ী, রাজ্যের ৩২.৪০ শতাংশ হিন্দু ভোট তৃণমূলের দখলে গিয়েছে। এছাড়াও ১০ শতাংশ হিন্দু ভোট পড়েছে সংযুক্ত মোর্চার পক্ষে। এবং বাকি ৮.১০ শতাংশ হিন্দু ভোট অন্যান্যরা পেয়েছেন।
তবে জেনে রাখা দকার যে, বুথ ফেরত সমীক্ষা তথা এক্সিট পোল সবসময় সঠিক পরিসংখ্যান তুলে ধরতে পারে না। এই সমীক্ষায় একটু আভাস পাওয়া যায় যে, কোন দলের পক্ষে রায় যাচ্ছে। তবে অনেক সময় এই সমীক্ষার সঙ্গে ফলাফল মেলে না। আবার অনেক সময় মিলেও যায়। তাই কি হতে চলেছে বাংলায়? সেটা জানা জন্য আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হবে।