ভোটযন্ত্র বা ইভিএম-এর বদলে ব্যালট চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতার এই নতুন দাবীকেই হাতিয়ার বানাতে চাইছে বিজেপি। উল্লেখযোগ্য ভাবে, বামফ্রন্টও ব্যালট-প্রশ্নে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে নেই। সেক্ষেত্রে চলতি বছরে ‘২১ শে জুলাইয়ে’র মূল মন্ত্র ‘ইভিএম নয়, ব্যালট চাই’ প্রসঙ্গে মমতাকে একলাই চলতে হবে।
বিজেপি অবশ্য বিষয়টিকে রাজনৈতিক হাতিয়ার বানাতে চেয়েছে। রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলছেন, “মুখ্যমন্ত্রী নিজে কিভাবে মুখ্যমন্ত্রী হলেন তা ভুলে গেলেন। ইভিএম-এ মুখ্যমন্ত্রী হয়ে উনি বলছেন যন্ত্রে গণ্ডগোল আছে।” বিধানসভায় বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী যা বলেছেন, তা প্রায় দিলীপের বক্তব্যের ‘আয়নার প্রতিচ্ছবি।’ সুজনের বক্তব্য, ২০১১ এবং ২০১৬ সালে উনি (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) ইভিএম-এ জিতে মুখ্যমন্ত্রী হলেন। তখন সব ঠিক ছিল। এখন সব গণ্ডগোল।
তবে বামফ্রন্ট এবং কংগ্রেসের পক্ষে সব থেকে অস্বস্তির কারণ তাদের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। ইভিএম-এর তদন্তের দাবিতে বাম-কংগ্রেস কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব সরব হয়েছে। কিন্তু, রাজ্যে , মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি অনুযায়ী যদি পুর ভোটে আবার ব্যালট ফিরে আসে তবে গণতন্ত্র বাঁচিয়ে রাখা কঠিন হবার বলে মনে করছে আলিমুদ্দিন স্ট্রিট এবং বিধানভবন। কারণ শেষ পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে বিরোধী দলগুলি আর পুরানো দিন ফেরাতে চাইছে না।
এই পরিস্থিতিতে আলিমুদ্দিন স্ট্রিট এবং বিধানভবনের ব্যাখ্যা, ইভিএম বিরোধিতা করা মানেই ব্যালট ফেরত চাওয়া নয়।রাজ্য বিজেপির কাছে আসন্ন পুর ভোট একটি সন্ধিক্ষনের মুহূর্ত। লোকসভা নির্বাচনের সাফল্য ধরে রাখতে চাইছে দল। সেক্ষেত্রে , ইভিএম এর বদলে ব্যালট ভোট হলে বিজেপির চিন্তার বিষয়। কারণ, রাজ্য নির্বাচন কমিশনের অধীনে ব্যালটে ভোট হলে পঞ্চায়েত নির্বাচনের পুনরাবৃত্তি হওয়া বাকি থাকবে বলে মনে করছে গেরুয়া শিবির। সেক্ষেত্রে, পঞ্চায়েত নির্বাচনের দৃষ্টান্তকে এমন রেখে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুধ্যে আক্রমণ শানাতে চাইছে বিজেপি।