সিউড়িঃ বিজেপির বিস্তারককে মারধরের ঘটনায় অভিযুক্তদের হাতের নাগালে পেয়ে পুলিশের সামনেই বেধরকভাবে মারধর করলো বিজেপি কর্মীরা। বিজেপির অভিযোগ বাইক বাহিনী নিয়ে এলাকায় তান্ডব করতে এসেছিল দুস্কৃতিরা। শুধু তাই নয় তৃণমূলের বিরুদ্ধে বোমাবাজির অভিযোগ করছে বিজেপি। ঘটনাকে ঘিরে তীব্র উত্তেজনার সৃষ্টি হয় সিউড়ি ২ ব্লকের পাড়ুই থানা এলাকার হাটইকড়া গ্রাম। পরে বিশাল পুলিশ বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনলেও ঘটনাকে ঘিরে এলাকায় তীব্র আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে।
ঘটনাটি হল, বৃহস্পতিবার রাতে বিজেপির বিস্তারক সনৎ দাসকে মারধর, বাড়ি ভাংচুর এবং তাঁর অসুস্থ মাকেও মারধরের অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের অবিনাশপুর অঞ্চলের সভাপতি রাজু মুখোপাধ্যায়ের এবং তার দলবলের বিরুদ্ধে। বিজেপির অভিযোগ, শনিবার সকালে ওই তৃণমূল নেতা রাজু মুখোপাধ্যায় নেতৃত্বে একদল বাইক বাহিনী হাটইকড়া গ্রামে যায় এবং বিজেপি কর্মীদের হুমকি দেয়। সেই সময় গ্রামবাসীরা একত্রিত হয়ে ওই বাইক বাহিনীকে তেরে গেলে তার পালিয়ে যায়। এরপরেই ঘটনার প্রতিবাদে এবং অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবিতে পুরন্দরপুর থেকে বোলপুর যাবার রাস্তায় হাটইকড়া ব্রিজের কাছে পথ অবরোধ করেন বিজেপি কর্মীরা। পুলিশের আশ্বাসে অবরোধ উঠে যায়। কিন্তু সেই সময় ঐ রাস্তা দিয়ে তিনটি বাইকে করে ফের তৃণমূল নেতা রাজু মুখোপাধ্যায় সহ বেশ কয়েকজন তৃণমূল কর্মী যাচ্ছিলেন। সেই সময় ক্ষিপ্ত বিজেপি কর্মীরা পুলিশের সামনেই বাঁশ, লাঠি দিয়ে রাজু মুখোপাধ্যায়, তৃণমূলের অবিনাশপুর পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান তাপস দাস ও অন্যান্য তৃণমূল কর্মীদের উপর চড়াও হয়। চলে বেধরকভাবে মারধর। ঐ ঘটনায় পাঁচ জন তৃণমূল কর্মী আহত হয় । ঘটনার জেরে এলাকার পরিস্থিতি থমথমে।
বিজেপির অভিযোগ ওই ঘটনার পরেই তৃণমূলের লোকেরা গ্রামে এসে আবার তাণ্ডব করেছে। এলাকায় ব্যাপক বোমাবাজি শুরু করেছে। ভংচুর করা হয়েছে আমাদের কর্মীদের বাড়ি। এমনকি আমাদের কর্মীদের বাড়িতে বোম ফেলে দিয়ে পুলিশকে দেখাচ্ছে আর পুলিশ আমাদের কর্মীদের মিথ্যা কেসে ধরছে। আসলে আমাদের লোকদেরকে মারধরের ঘটনাকে ধামাচাপা দেবার জন্য এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে।
এই নিয়ে আহত তৃণমূল নেতা তপন দাস বলেন,” আমারা সিউড়ি থেকে বাড়ি ফিরছিলাম। সেই সময় হাটইকড়া মোড়ে কয়েকজন বিজেপি কর্মী দাঁড়িয়েছিল। ওরা হটাৎ করে মারধর করতে শুরু করে।”
অন্যদিকে শুক্রবার সকালে ওই গ্রামে বাইক বাহিনী যাবার কথা অস্বীকার করে তৃণমূলের সিউড়ি ২ এর ব্লক সভাপতি নুরুল ইসলাম বলেন,”এদিন সকালে আমাদের কোন কর্মী ওই গ্রামে যায় নি। সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগ। বিজেপি কর্মীরা ওই এলাকায় অশান্ত করার চেষ্টা করছে। অন্যদিকে বিজেপির সিউড়ি ২ ব্লক সভাপতি পবন বাগদি বলেন,” এদিনের ঘটনা পুলিশ এবং তৃণমূলের পরিকল্পনায় হয়েছে। যাদের গ্রেফতারের অভিযোগ তুলে ওই পথ অবরোধ তারা ওই রাস্তা দিয়ে যায় কোন সাহসে। অবরোধ তো উঠে গিয়েছিল। ওরা ওই রাস্তা দিয়ে এল বলেই তো এই সমস্যার সৃষ্টি হল।”