লোকসভা আগেই দখলে এসেছে। বিধানসভার উপনির্বাচনেও পাহাড়ে ফুটেছে পদ্মফুল। এ বার দার্জিলিং পুরসভা দখলের পথে বিজেপি।
দার্জিলিং পুরসভার মোট আসন সংখ্যা ৩৩। বুধবার সকালের খবর পাহাড়ের নতুন বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্ত ১৭জন কাউন্সিলরকে নিয়ে দিল্লি গিয়েছেন। তাঁরা যোগ দেবেন বিজেপি-তে। শেষ পর্যন্ত সব ঠিকঠাক হলে ভাটপাড়ার পুনরাবৃত্তি হতে চলেছে শৈলশহরে।
মঙ্গলবার কলকাতার মহারাষ্ট্র নিবাস হলে বিজেপি-র বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সাংসদ রাজু বিস্ত। সেখানেও দার্জিলিং নিয়ে আলোচনা হয় বলে খবর। পর্যবেক্ষকদের মতে, বিমল গুরুঙদের উপর নির্ভরতা কমিয়ে নিজের পায়ের জোরে সংগঠনকে পাহাড়ের মাটিতে দাঁড় করাতে চাইছে বিজেপি নেতৃত্ব। লোকসভায় ব্যাপক ভোট পেয়েছে বিজেপি। সমতলে প্রায় ৬২ শতাংশ ভোট পেয়েছে গেরুয়া শিবির।
তারপরেই গত ২৯ মে বিনয়পন্থীদের সঙ্গ ছেড়ে অনাস্থা আনে দার্জিলিং পুরসভার ১৮ জন কাউন্সিলর। ফলে সে দিন থেকেই অনিশ্চিত হয়ে পড়ে বর্তমানে ৩২ আসনের দার্জিলিং পুরসভার চলতি বোর্ডের ভবিষ্যত।
২০১৭ সালের মে মাসে পুরভোটে দার্জিলিং পুরসভার ৩২ টা আসনের মধ্যে ৩১টাই দখল করেছিলেন গুরুঙপন্থী কাউন্সিলররা। একটা আসন দখল করে তৃণমূল। পরে ওই তৃণমূল কাউন্সিলরও মোর্চায় যোগ দেন। জুন মাস থেকে পৃথক রাজ্যের দাবিতে বিমল গুরুঙের নেতৃত্বে আন্দোলনে তেতে ওঠে পাহাড়। বিমল গুরুঙের বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে গিয়ে পাতলেবাসে গুলিতে মৃত্যু হয় রাজ্য পুলিশের আধিকারিক অমিতাভ মালিকের। তারপর থেকেই পাহাড়ছাড়া বিমল গুরুঙ, রোশন গিরিরা। রাজ্য সরকারের সঙ্গে সমঝোতার ভিত্তিতে এরপর থেকেই মোর্চার রাশ বিনয় তামাং এর হাতে। স্বভাবতই দার্জিলিং পুরসভাতেও নেতৃত্বের রাশ চলে যায় বিনয়ের হাতেই।
এত দিন বিনয় তামাং পুরসভাতেও কর্তৃত্ব বজায় রাখলেও পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করে লোকসভা ভোটের পর। দার্জিলিং লোকসভায় তৃণমূলের প্রার্থী অমর সিং রাইকে সমর্থন জানান বিনয়পন্থী মোর্চা নেতৃত্ব। অন্যদিকে বিজেপি প্রার্থী রাজু বিস্তকে সমর্থন জানায় গুরুঙপন্থীরা। আদালতে আগাম জামিন নিয়ে ভোটের মুখে পাহাড়ে ফেরারও চেষ্টা করেছিলেন তাঁরা। কিন্তু সমর্থ হননি। লোকসভায় বিপুল ভোটে জয়ী হন রাজু বিস্ত। এরপরেই আজ দার্জিলিং পুরসভার ১৮ জন কাউন্সিলর পুরপ্রধান প্রতিভা রাইকে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেন, বিনয়পন্থী এই বোর্ডের উপর থেকে সমর্থন তুলে নিচ্ছেন তাঁরা। দ্রুত বৈঠক ডাকার জন্য পুরপ্রধানকে আবেদনও জানান তাঁরা।