বহুদিন হল কলকাতার পুজো মানেই থিম সর্বস্ব জমক। বড় বাজেটের অভিনব মণ্ডপসজ্জাই সেখানে আসল, এমনকী বিরাটাকার, অনন্য চেহারার মাতৃপ্রতিমা দিয়ে দর্শক আকর্ষণ করাই রেওয়াজ। এই নিয়ে শহরবাসীর একটা অংশের ক্ষোভও ছিল। তাদের বক্তব্য, পুজো থেকে ভক্তি কমছে, সবটাই যেন ক্ষমতাধারীর শক্তি প্রদর্শনের কৌশল। এবার সেই প্রথা ভাঙতে আসরে নামতে চলেছে রাজ্য বিজেপি। আর তা ভাঙার জন্য এ’রাজ্যের গেরুয়া শিবির আয়োজন করেছে এক প্রতিযোগিতার। সেই প্রতিযোগিতায় জয়লাভ করবে সেই পুজো কমিটিগুলি যারা অভিনবত্বে নয়, বরং নিষ্ঠার সঙ্গে পরম্পরাকে মান্যতা দিয়ে সনাতন রীতিতে দুর্গোপুজো করবে।
প্রতিযোগিতার নাম দেওয়া হয়ছে—ভারতীয় জনতা শারদ সম্মান প্রতিযোগিতা ২০১৯।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের বক্তব্য, বিধানসভা নির্বাচনের আগে জনসংযোগ বাড়াতে দুর্গাপুজোর সঙ্গে যুক্ত হতেই হত বিজেপিকে। আর তা তারা সঠিক পথেই শুরু করল।
উল্লেখ্য, যে ক্লাব বা কমিটি জিতবে ভারতীয় জনতা শারদ সম্মান প্রতিযোগিতা তাদের জন্য থাকছে আকর্ষণীয় পুরস্কারও। তবে কী পুরস্কার, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
বলা বাহুল্য, আচারের ওপর পুজোর শ্রেষ্ঠত্ব বিচার এর আগে রাজ্যে কখনও হয়নি। আর সেই বিষয়টিকেই মাথায় রেখে বিজেপির এই উদ্যোগ। এবং এক্ষেত্রেও মূল মস্তিষ্কের নাম মুকুল রায়। সূত্রের খবর, ইতিমধ্যে মুকুল রায় দলীয় নেতাদের নিয়ে একটি রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছেন। বৈঠকে মুকুল বলেছেন, এই মুহূর্তে পশ্চিমবঙ্গে ৪২ হাজার বারোয়ারি পুজো হয়। তার মধ্যে হাজার দুয়েক পুজো তৃণমূলের হাতে।
বাকি পুজো কমিটিগুলিকে সাহায্যের হাত বাড়িতে দেওয়ার জন্য দলীয় নেতাদের পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপূজায় রাজনীতির অনুপ্রবেশ তৃণমূলের হাত ধরে। ঘুরিয়ে সেই জুতোতে পা গলাতে চাইছে বিজেপি। যদিও গেরুয়া শিবিরের সঙ্গে সনাতন রীতিরেওয়াজের সম্পর্ক এমনিতেই ঘোষিত। অতএব, এক্ষেত্রে তারা কোমর বেঁধেই নামছে বলে খবর।