একুশের কলকাতা পুরভোটকে নির্বাচন বলতে নারাজ বিজেপি। বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেছেন ভোটের মতো কিছু হয়েছে, ভোট হয়নি। এমনকী ৩টি ওয়ার্ডে তাঁদের প্রতিনিধিরা কেমন করে জিতলেন তা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করতে শোনা গিয়েছে রাজ্য বিজেপিকে।
আর বুধবার এ নিয়ে প্রশ্ন করতেই তৃণমূল সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে তীব্র আক্রমণ করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। জোর গলায় বললেন, “পুরভোট নিয়ে আমি আলোচনায় যাবই না। কলকাতা কর্পোরেশনে ভোট হয়নি, হয়নি, হয়নি… ”
বুধবার নদিয়ার হাঁসখালি তে একটি দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দেন বিরোধী দলনেতা। পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে কলকাতা পুরসভার প্রসঙ্গ উঠতেই খাপ্পা হয়ে যান তিনি। তাঁর অভিযোগ, “যে ভোটে ইভিএম মেশিনে ভিভিপ্যাট থাকে না, যে ভোটে সিসি ক্যামেরার তার কেটে দেওয়া হয়, সেটাকে আমি ভোট বলে মানি না।” তিনি যোগ করেন, ‘পুরভোটে ইভিএম ছিল ভাইপোর হাতে’।
এর পর শুভেন্দু আনেন আরেক মারাত্মক অভিযোগ। বলেন, এই ভোট কী ভাবে হবে তা দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসক আর অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বসে ঠিক করেছেন। কে কত ভোট পাবেন সেটাও!
এদিন নদিয়ার হাঁসখালি বিডিও অফিসের কৃষকদের জন্য একাধিক দাবি নিয়ে একটি ডেপুটেশনের কর্মসূচির ডাক দেয় বিজেপি। সেখানে উপস্থিত হয় বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এই নির্বাচন নিয়ে আমি কোনও প্রতিক্রিয়া দেব না। তার কারণ, এটাকে ভোট বলে না। ভোটে কী হবে, কে কত ভোট পাবে তা ঠিক করেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসক আর ভাইপো। তাই ভোট প্রসঙ্গে কিছু জিজ্ঞাসা করার থাকলে ওই দু’জনকেই জিজ্ঞাসা করুন।”
তাঁর দাবি, “রাজ্যে দিনদিন ঋণের বোঝা বেড়ে চলেছে। আগে ৫ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিক বাইরে থাকত। এখন সেটা বেড়ে ৪০ লক্ষে। মমতা ব্যানার্জি সরকারে আসার পর কোন সরকারি চাকরি হয়নি।” বিজেপি বিধায়কের কটাক্ষ, “গান্ধী মূর্তির নিচে, বিকাশ ভবনের সামনে যান, কতজন চাকরি পেয়েছে পরিষ্কার হয়ে যাবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জ তুলে দিয়েছে।”
এদিন আবার সভা থেকে শুভেন্দু মমতাকেও বিঁধেছেন। তিনি বলেন, “মানুষ আমাকে বিরোধী দলনেতা করেছে আর ওঁনাকে মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ার বাঁচানোর জন্য দু’বার ভোটে দাঁড়াতে হয়েছে। আগে বলতাম নন এমএলএ মুখ্যমন্ত্রী, এখন বলি কম্পার্টমেন্টাল মুখ্যমন্ত্রী।” শুভেন্দুর দাবি রাজ্যে বিজেপি সরকার না গড়লেও প্রধানমন্ত্রী তাঁর কথা রেখেছেন। তিনি কৃষকদের টাকা পাঠানোর ব্যবস্থা করেছেন। কিন্তু তৃণমূল সব জায়গায় রাজনীতি করেছে। ভ্যাকসিনে রাজনীতি করেছে। মাত্র ৩১ লক্ষ কৃষককে প্রধানমন্ত্রীর প্রকল্পের টাকা পাইয়ে দিয়েছে। কিন্তু বিজেপির দাবি আরও ৪২ লক্ষ কৃষককে পিএম কিষানের টাকা পাইয়ে দিতে হবে।