উত্তরবঙ্গে ভোটে কারচুপি করতেই কোচবিহারে মুখ্যমন্ত্রী ঠাই নিয়েছেন বলে সরাসরি অভিযোগ তুললেন বিজেপি নেতা মুকুল রায়।
বুধবার কোচবিহারে পৌঁছেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দিনহাটায় সভা করেন তিনি। বৃহস্পতিবার সভা ছিল মাথাভাঙায়। এর পরেও মমতা থাকছেন কোচবিহার জেলায়। ভোট প্রচার চলবে প্রথম দফায় ভোটগ্রহণের আগে পর্যন্ত। ১১ এপ্রিল প্রথম দফায় কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ার কেন্দ্রে ভোট রয়েছে। এর পরে দ্বিতীয় দফায় ভোট রয়েছে ১৮ এপ্রিল। জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং এবং রায়গঞ্জে ভোট ওই দিন। তারও প্রচার সেরে ১৩ এপ্রিল কলকাতায় ফেরার কথা তৃণমূলনেত্রীর।
আপাতত কোচবিহারেই থাকছেন মমতা। আর সেই সময়টা মুকুল রায়ও ঘাঁটি গাড়ছেন উত্তরের ওই জেলায়। বুধবার শিলিগুড়িতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সমাবেশে হাজির ছিলেন মুকুল। আগামী ৭ এপ্রিল কোচবিহারে সভা করবেন নরেন্দ্র মোদী। সেই সভার প্রস্তুতি তো বটেই তাছাড়াও মুখ্যমন্ত্রীর উপরে নজরদারি চালাতে মুকুল রায় আগামী এক সপ্তাহ কোচবিহারে থেকে যাবেন। জানা গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী কলকাতা না ফেরা পর্যন্ত কোচবিহারের মাটি কামড়ে পড়ে থাকতে চান মুকুল।
এদিন কোচবিহার বিমানবন্দরে পৌঁছেই মুকুল রায় বলেন, “উত্তরবঙ্গে ভোটে কারচুপি করতেই এখানে ঠাই নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে টানা ১২ দিন এখানে থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী। জেলাশাসক, পুলিশ সুপার, মহকুমা শাসক, বিডিওদের উপরে চাপ তৈরি করতেই তিনি এখানে ঘাঁটি গেড়েছেন।” সেই সঙ্গে মুকুল রায় জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রীর সেই পরিকল্পনা বানচাল করতেই তিনিও কোচবিহারে থাকছেন।
মুকুল রায় এদিন বিমানবন্দরে আরও অক্রমণ করেন তৃণমূল কংগ্রেসকে। তিনি বলেন, “গতকাল সিবিআই-এর যে কাগজ দেখিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বিজেপির প্রার্থী সম্পর্কে মন্তব্য করেছেন সেই কাগজটি আদতে জাল।” কারও নাম উল্লেখ না করে তিনি বলেন, তাঁর কাছেও এমন কাগজ রয়েছে যা বলে দেবে, মুখ্যমন্ত্রীর অন্দরমহলে একজনের বাবার নাম দু’জায়গায় দু’রকম।
শুধু মুকুল রায়ই নন, তাঁর সঙ্গে কোচবিহারে রয়েছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা রাজ্যের পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়। এদিন যখন মাথাভাঙায় মুখ্যমন্ত্রী জনসভায় বক্তব্য রাখছেন ঠিক তখনই মুকুল, কৈলাসরা ধর্নায় বসেন জেলাশাসকের অফিসের সামনে। ছিলেন কোচবিহার আসনের বিজেপি প্রার্থী নিশীথ প্রামানকিও।
বিজেপির দাবি, এখনও পর্যন্ত জেলায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন সুনিশ্চিত হয়নি। সেই অভিযোগ নিয়েই বিজেপি সমর্থকেরা বিক্ষোভ দেখান। প্রতি বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপস্থিতি নিশ্চিত করতেই এই ধর্না বলে জানান বিজেপি নেতারা।
সব মিলিয়ে প্রথম দফার দুই আসনে ভোটের আগে বিজেপি যে শাসকদলকে এক ইঞ্চিও জমি ছাড়তে রাজি নয় তা বুঝিয়ে দিয়েছেন মুকুল রায়। তৃণমূলের উপরে চাপ তৈরি করতে তিনি কতটা মরিয়া তা বোঝাতে ঘনিষ্ঠ মহলে তিনি জানিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী যতদিন কোচবিহারে থাকবেন, ততদিন তিনিও থাকবেন। মুখ্যমন্ত্রী কখন, কোথায় যাচ্ছেন, কার সঙ্গে কথা বলছেন সব কিছুর উপরে থাকবে তাঁর নজর। প্রয়োজন মতো নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ করা ও কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন নিয়ে প্রশাসনের উপরে চাপ তৈরির কাজও চলবে।