মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বয়ান দিয়েই তাঁর উপর চাপ বাড়ানোর কৌশল নিল বিজেপি। জাতীয় নির্বাচন কমিশনের কাছে দরবার করে চলতি সপ্তাহেই বাংলার সব বুথকে ‘সুপার সেনসিটিভ’ করার দাবি জানিয়েছিল কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতারা। শনিবার সেই দাবি নিয়েই রাজ্য নির্বাচন কমিশনে গেলেন মুকুল রায়রা।
কমিশনের দফতর থেকে বেরিয়ে মুকুলবাবু বলেন, “আমরা আজকে আমাদের নিজেদের কোনও বক্তব্য বলিনি। ২০০৬,২০০৯ এবং ২০১১-এর ভোটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কমিশনকে যে চিঠি দিয়েছিলেন, সেগুলিই তুলে দেওয়া হয়েছে কমিশনের কর্তাদের হাতে।” কী ছিল সেই চিঠিতে? ভরা বাম জমানায় মমতা তখন বারবার দাবি জানাতেন, রাজ্যের সব বুথকে স্পর্শকাতর ঘোষণা করতে হবে।
বিজেপি-র এই সুপার সেনসিটিভ করার দাবিকে ইতিমধ্যেই তোপ দেগেছেন মুখ্যমন্ত্রী। বুধবার প্রার্থী পরিচিতির সাংবাদিক সম্মেলন থেকে মমতা প্রশ্ন তুলে বলেছিলেন, “গোটা রাজ্য স্পর্শকাতর? তার মানে রাজ্যের সব মানুষ সুপার সেনসিটিভ? এটা শেম শেম শেম। বিজেপি বাংলার মানুষকে অপমান করছে।”
শনিবার রাজ্যে এসেছেন উপ নির্বাচন কমিশনার সুদীপ জৈন। তাঁর সঙ্গেই দেখা করেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। মুকুল রায়, শিশির বাজোরিয়া—সহ বিজেপি-র একটি প্রতিনিধি দল কমিশনের সঙ্গে দেখা করে বেরিয়ে বলেন, “বাংলার পুলিশের উপর মানুষের আস্থা নেই। রাজ্য পুলিশ পুরোপুরি তৃণমূলের দলদাসে পরিণত হয়েছে। তাই রাজ্যের সব বুথকে সুপার সেনসিটিভ ঘোষণা করা হোক।”
এর আগেও কমিশনের ফুল বেঞ্চ যখন রাজ্যে এসেছিল, সেই সময়ে বিজেপি—সহ বিরোধী দলগুলি পঞ্চায়েত নির্বাচনের হিংসার কথা তুলে ধরেছিল। এ দিন মুকুল রায়রা একটি অডিও টেপও জমা দেন কমিশনে। বিজেপি-র দাবি ওই অডিও টেপে যে কণ্ঠস্বর শোনা যাচ্ছে তা যদি সত্যিই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হয়, তাহলে নির্বাচনের আদর্শ আচরণবিধি লঙ্ঘিত হয়েছে।
এ দিন তৃণমূলের তরফেও দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে এক প্রতিনিধি দল দেখা করে উপ নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে। পার্থবাবু বলেন, “শান্ত বাংলাকে অশান্ত করতেই ছলছাতুরি করছে বিজেপি। তাই বারবার কমিশনের কাছ এ যাচ্ছে।”