রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসায় কয়েক হাজার বিজেপি সমর্থক কর্মী আক্রান্ত এবং ঘরছাড়া। দলের উচ্চ নেতৃত্বের নির্দেশ মেনে এমনই বেশকিছু পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন বিজেপি নেতা দেবদত্ত মাজি। উত্তর ২৪ পরগণা, দক্ষিণ ২৪ পরগণা, পূর্ব মেদিনীপুর, কলকাতার বিভিন্ন এলাকায় আক্রান্তদের সুরক্ষিত আশ্রয়দাতা হয়েছেন দেবদত্তবাবু।
রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসায় কয়েক হাজার বিজেপি সমর্থক এবং কর্মী আক্রান্ত হয়েছেন বলে বিজেপির দাবি এবং ঘরছাড়া হয়েছেন বহু মানুষ। এই ইস্যুতে লাগাতার সোচ্চার পদ্মশিবিরের সাথে রাজ্যপাল। ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনায় জনস্বার্থ মামলাও চলছে কলকাতা হাইকোর্টে। সেই মামলায় আদালতে তিরস্কৃত হয়েছে রাজ্য সরকার। হাইকোর্ট ঘরছাড়াদের ঘরে ফেরানোর জন্য একটি কমিটিও গঠন করে দিয়েছে। কিন্তু বিজেপি নেতা দেবদত্ত মাজির অভিযোগ, এখনো আক্রান্তদের পাশে দাঁড়ানো তো দূরে থাক ঘটনা ধামাচাপা দিতে রাজ্যের শাসক দল বেশি ব্যস্ত। এমনকি এক্ষেত্রে প্রশাসনকেও তারা ব্যবহার করছে।
উত্তর ২৪ পরগণার মিনাখা থানা এলাকার বাসিন্দা বিজেপি মহিলা মোর্চার নেত্রী রিনা মন্ডলের উপর তিন মুসলিম তৃণমূল কর্মী গত ১৫ এপ্রিল চড়াও হয় বলে অভিযোগ। ভোটের আগের দিন যখন রিনাদেবীর স্বামী এলাকায় বিজেপির ফ্ল্যাগ লাগাতে বাইরে গিয়েছিলেন, সেই সময় জামারুল্লা তালুকদার, সাইদুল তালুকদার, মকবুল তালুকদার তার বাড়িতে চড়াও হয়। এরা রিনা দেবীর শ্লীলতাহানি করে বলে অভিযোগ। রিনা দেবীর চিৎকারে তার প্রতিবেশী ও স্বামী এসে তার সম্মান বাঁচান। কিন্তু তৃণমূলের ওই দুষ্কৃতিবাহিনী ২মে অর্থাৎ ভোটের ফল প্রকাশের দিন আবার তার বাড়িতে হামলার হুমকি দেয়। এমনকি রিনা দেবীর স্বামী প্রিয়রঞ্জন মন্ডলকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও দেয়। এরপর প্রাণে বাঁচতে রিনা মন্ডল তার পরিবার সহ ভোটের ফল প্রকাশের সময় থেকে ঘরছাড়া হন। পরে তাদের আশ্রয় দেন বিজেপি নেতা দেবদত্ত মাজি। আপাতত তারা তার আশ্রয়ে সুরক্ষিত আছেন এবং হাইকোর্ট গঠিত কমিটির কাছে অভিযোগ জানাবেন।
শুধু রিনা মন্ডল নয় মিনাখা আরও এক আক্রান্ত পরিবার পিঙ্কি বাজের পাশেও দাঁড়িয়েছেন দেবদত্ত বাবু। যদিও পিংকি বাজকে উদ্দেশ্যপ্রনোদিত ভাবে আবার পুলিশ বিনা দোষে তুলে নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ করেন দেবদত্তবাবু। তার অভিযোগ রাজ্যের শাসকদলের অঙ্গুলি হেলনেই কাজ করছে মিনাখার পুলিশ প্রশাসন।
উত্তর ২৪ পরগনার স্বরূপনগরের বিজেপির বুথ সভাপতি বিশ্বজিৎ দাসের দোকান বাড়ি ভোটের ফল প্রকাশের পর ভেঙ্গে তছনছ করে দেয় তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতিরা। এই বিশ্বজিত দাসের পাশে দাঁড়িয়ে তার মনোবল বাড়িয়েছেন দেবদত্ত মাজি সহ অন্যান্য বিজেপি নেতা। সকলে আর্থিক সহযোগিতায় বিশ্বজিৎ দাস আবার তার দোকান সাজাতে পেরেছেন। যদিও এলাকায় তৃণমূল নেতাদের হুমকির জন্য সব মানুষ এখনো তার দোকানে জিনিস কিনতে আসতে ভয় পাচ্ছেন বলে অভিযোগ তার।
ভোট পরবর্তী রাজনৈতিক হিংসাই আক্রান্ত দলীয় কর্মী সমর্থকদের পাশে দাঁড়ানোর নির্দেশ দিয়েছে দল। দেবদত্ত মাজি সেইমতো কাজ করে চলেছেন নিরলস ভাবে। মূলত মহিলা, দরিদ্র, তপশিলী জাতি উপজাতিদের উপর আক্রমণের ঘটনা বেশি ঘটছে বলেও অভিযোগ করেছেন অন্যান্য বিজেপি নেতার মতো দেবদত্ত মাজি ও।