‘পশ্চিমবঙ্গ জ্বলছে আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কাশ্মীর নিয়ে চিন্তিত’, কটাক্ষ বিজেপির

রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে তোপ দাগল রাজ্য বিজেপি৷ তাদের কটাক্ষ, ‘পশ্চিমবঙ্গ জ্বলছে আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কাশ্মীর নিয়ে চিন্তিত’৷

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে শুক্রবার থেকেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে দফায় দফায় বিক্ষোভ, রেল-সড়ক অবরোধ চলছে৷ এদিন দুপুর থেকে অশান্ত হয়ে উঠেছিল হাওড়ার উলুবেড়িয়া, মুর্শিদাবাদের বেলডাঙা-সহ রাজ্যের বেশ কিছু অঞ্চল। বিক্ষোভের আঁচ পড়ে খাস কলকাতাতেও। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন বার্তা দিয়েছেন, কেউ যেন আইন নিজের হাতে না তুলে নেন। সে ক্ষেত্রে প্রশাসন কড়া ব্যবস্থা নেবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। কিন্তু শনিবারও রাজ্যে এই একই পরিস্থিতি ছিল৷

প্রসঙ্গত, এদিনই সন্ধ্যায় জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ফারুখ আবদুল্লার গৃহবন্দি দশার মেয়াদ বৃদ্ধি নিয়ে টুইট করেন মুখ্যমন্ত্রী। জনসুরক্ষা আইনের আওতায় ফারুখ আবদুল্লার গৃহবন্দি দশার মেয়াদ ৩ মাস বাড়ানো হয়। সেই প্রসঙ্গেই টুইট করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, “এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। আমাদের গণতান্ত্রিক দেশে এঘটনা ঘটছে। এটা অসাংবিধানিক।”

মুখ্যমন্ত্রীর এই ট্যুইটের পরই পাল্টা কটাক্ষ করে বিজেপি৷ রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় তৃণমূল সরকার ব্যর্থ বলে গেরুয়া শিবিরের পক্ষ থেকে পাল্টা একটি টুইট করা হয়৷ যেখানে বলা হয়েছে, “পশ্চিমবঙ্গ জ্বলছে আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কাশ্মীর নিয়ে চিন্তিত। পশ্চিমবঙ্গের রাস্তায় যে তাণ্ডব চলছে তাকে ছাড়া, তাঁর আর সব বিষয় নিয়ে টুইট করার সময় রয়েছে। নিরোও এটা দেখে অনুপ্রাণিত হবেন!”

পাল্টা শান্তি মিছিলের ডাক দিল বিজেপি৷ আগামী ২৩ ডিসেম্বর শান্তি মিছিলের ডাক দিয়েছে গেরুয়া শিবির। ২ জায়গা থেকে এই মিছিল বের হবে। একইসঙ্গে বিজেপির পক্ষ থেকে এক আবেদন বার্তায় বলা হয়েছে, “আত্মরক্ষার অধিকার প্রয়োজনে প্রয়োগ করুন। তবে শান্তি বজায় রাখার চেষ্টা করুন।”

এদিকে, রাজ্য সরকার পরিস্থিতি সামলাতে না পারলে বাংলায় রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা৷ তিনি বলেন, “আমরা নির্বাচিত সরকারকে ফেলতে চাই না। কিন্তু এই অগ্নিগর্ভ অবস্থা যদি আর কয়েকদিন চলে, তবে রাষ্ট্রপতি শাসন ছাড়া উপায় নেই। ২০২০ শুরুতেই বিদায় নিতে হবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে।”

উল্লেখ্য, আইন হাতে তুলে না নিয়ে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালনের বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীও। আইন হাতে তুলে নিলে, সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করলে, কাউকে রেয়াত করা হবে না বলে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন সকালের পর ফের সন্ধ্যায় আরও একবার রাজ্যবাসীর উদ্দেশে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলনের আহ্বান জানান মুখ্যমন্ত্রী।

আবেদন বার্তায় বলা হয়েছে, “সকল রাজ্যবাসীর কাছে আমি আবার অনুরোধ করছি যে কোনভাবেই কোন রকম হিংসাত্মক কাজকর্মে লিপ্ত হবেন না এবং রাজ্যজুড়ে সম্প্রীতি ও শান্তি বজায় রাখুন। মনে রাখবেন পুলিশ থানা, রেল স্টেশন, বিমানবন্দর, পোস্ট অফিস, সরকারি দফতর, পরিবহন ব্যবস্থা এ সকলই হল জনগনের সম্পত্তি। সরকারি এবং বেসরকারি, যে কোন ধরণের সম্পত্তির কোনরকম ক্ষতি হলে তা রাজ্য সরকার কোনমতেই বরদাস্ত করবে না এবং আইনানুগ কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.