দেখতে দেখতে প্রকাশ হয়ে গিয়েছে আগামী লোকসভা নির্বাচনের নির্ঘণ্ট। নির্বাচন কমিশনের তরফ থেকে ভোটের নির্ঘণ্ট প্রকাশের পর থেকেই সমস্ত রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়ে গিয়েছে ভোট প্রস্তুতি। এর মাঝে এখন কতটা শান্তিপূর্ণভাবে আগামী লোকসভা নির্বাচন সম্পন্ন হয় সেটাই মূল দেখার বিষয় সাধারণ মানুষের।
তবে এবারের ভোট শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপরেই পূর্ণ আস্থা রাখছেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলা বিজেপি নেতৃত্ব। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, আগামী লোকসভা নির্বাচন কেন্দ্রীয় বাহিনীর দ্বারা হলে তৃণমূল-কংগ্রেসের আর কোনও অস্তিত্বই থাকবে না। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের মতো রক্তে রাঙা রঙিন নির্বাচনের বদলে লোকসভা নির্বাচন হবে শান্তিপূর্ণভাবে।
ভোটের নির্ঘণ্ট প্রকাশের পর ইতিমধ্যে তৃণমূল-কংগ্রেসের তরফ থেকে প্রার্থী বাছাই পর্ব শেষ হয়ে গিয়েছে। তাই এখন জোরকদমে নির্বাচনী প্রচারে নেমে পড়েছে তৃণমূল-কংগ্রেস। তবে এই প্রচারের মাঝখানে কোথাও যেন একটু পিছিয়ে রয়েছে অন্যান্য বাকি রাজনৈতিক দলগুলি। বিজেপি-কংগ্রেসের তরফ থেকে এখনও পর্যন্ত কোনও প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হয়নি। তবে প্রার্থী তালিকা প্রকাশ না হলেও রাজ্যের অন্যতম বিরোধী দল বিজেপি হেভিওয়েট নেতাদের দ্বারা সারছে নিজেদের ঘরোয়া মিটিংগুলি।
ইতিমধ্যে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার হলদিয়াতে বিজেপির এক ঘরোয়া মিটিংয়ে উপস্থিত হয়েছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। সেখানে তাকে সাংবাদিকরা প্রার্থী তালিকা নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি তার উত্তরে জানান,“তৃণমূলকে মাত্র ৪২টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করতে হয়েছে তাই তারা তাড়াতাড়ি প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছে। কিন্তু আমাদের ৫৪৩টি আসনে প্রার্থী দিতে হবে তাই একটু সময় লাগবেই।’’
প্রার্থী তালিকা প্রকাশ হতে একটু বিলম্ব হলেও নিজেদের মধ্যে প্রচার ঠিকমতো ভাবেই হচ্ছে বলে দাবি বিজেপির কাঁথি জেলা সভাপতি তপন মাইতির। তিনি বলেন, ইতিমধ্যে আমাদের দেওয়াল লিখনের জন্য বহু জায়গা সংরক্ষণ করা হয়ে গিয়েছে। এছাড়াও ফ্লেক্স ও পতাকা প্রায় প্রতিটি জায়গায় টাঙানো হয়েছে।
তমলুক লোকসভা কেন্দ্র থেকে বিজেপির গত লোকসভা ভোটে প্রাপ্ত ভোটের হার দেখলে জানা যাবে ২০১৪ সালে বিজেপি প্রার্থী ভোট পেয়েছিলেন ৬.৪০ শতাংশ ভোট। এরপর ওই কেন্দ্র থেকে নির্বাচিত সাংসদ অর্থাৎ বর্তমান পরিবহন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী ইস্তফা দেওয়ায় ওই পদ খালি হয়ে যায়। যখন ফের ওই লোকসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন হয় তখন বিজেপির ভোট দ্বিগুণের বেশি বেড়ে গিয়ে হয় ১৫.০৬ শতাংশ। তবে এবারে কেন্দ্রীয় বাহিনীর দ্বারা ভোট হলে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার দুটি লোকসভা কেন্দ্রেই বিজেপি জয়লাভ করবে বলে দাবি বিজেপির কাঁথি জেলা সভাপতি তপন মাইতির।
ভোটের আগে শাসকদলের দুষ্কৃতীরা বহু ভোটারেরই ভোটার কার্ড কেড়ে নিচ্ছে বলে অভিযোগ তার। তিনি জানান, ইতিমধ্যে কাঁথির বহু ভোটারের ভোটার কার্ড কেড়ে নিয়েছে শাসক দল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা৷ এই নিয়ে আমরা কিছুদিনের মধ্যেই নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ জানাবো৷ সবমিলিয়ে এখন লোকসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সরগরম রাজ্য-রাজনীতি।