উত্তর ২৪পরগণার বনগাঁ লোকসভা আসনের বিজেপি মনোনীত প্রার্থী শান্তনু ঠাকুর। নাম ঘোষণা বিলম্বে হলেও জনসংযোগ অন্য প্রার্থীদের থেকে কম নয় তাঁর।মঙ্গলবার সন্ধেবেলা দ্বিতীয় দফার প্রার্থীতালিকায় শান্তনু ঠাকুরের নাম প্রকাশিত হতেই মেতে ওঠেন মতুয়া সম্প্রদায়ের একাংশ৷ বনগাঁর ঠাকুরবাড়ির একদিকে একেবারে উৎসবের পরিবেশ৷
দলে দলে মতুয়া ভক্তরা সেখানে পৌঁছে শান্তনু ঠাকুরকে আশীর্বাদ করছেন, মিষ্টি মুখ করাচ্ছেন৷ বুধবার সকাল থেকেও একই আমেজ ঠাকুরবাড়িতে৷ ভক্তরা তাঁকে ফুল দিয়ে অভিনন্দন জানাচ্ছেন৷ ভিড় জমছে ঠাকুরবাড়ির দালানে৷ এদিন সকাল সকাল হরিচাঁদ গুরুচাদ ঠাকুরকে পুজো দিয়ে প্রায় ২০০-৩০০ কর্মী সমর্থকদের নিয়ে হেঁটেই প্রচার সারলেন বিজেপি প্রার্থী শান্তনু ঠাকুর।
অন্য দিকে তৃণমূল প্রার্থী প্রচার চালাচ্ছে জোরকদমে। পাশাপাশি সিপিএম, কংগ্রেসও শুরু
করেছে প্রচার।
মতুয়া মহাসংঘের প্রতিষ্ঠাতা প্রমথনাথ ঠাকুরের ছোট ছেলে মঞ্জুল কৃষ্ণের কনিষ্ঠ পুত্র শান্তনু৷ ইংরাজিতে স্নাতক হওয়ার পর অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে হাসপাতাল ম্যানেজমেন্ট নিয়ে অ্যাডভান্স ডিপ্লোমা করেন৷ এমনিতে তিনি শান্ত স্বভাবের। মহাসংঘের সদ্যপ্রয়াত
প্রধান উপদেষ্টা বীণাপানিদেবীর আশীর্বাদ এবং মহাসংঘের সব সদস্যের ইচ্ছায় বছর দুই আগে শান্তনু মতুয়া মহাসংঘের সংঘাধিপতি হন।রাজনীতির লড়াইয়ে এই প্রথম৷ গত লোকসভা উপনির্বাচনে ঠাকুরবাড়ির বড় বউ তথা প্রাক্তন সাংসদ প্রয়াত কপিলকৃষ্ণ ঠাকুরের স্ত্রী মমতাবালার কাছে দু’লক্ষেরও বেশি ভোটে পরাজিত হয়েছিলেন শান্তনুর দাদা
সুব্রত ঠাকুর৷ তারপর তিনি বিদেশে চলে যান৷ এরপর ঠাকুরবাড়ির অনেক দায়িত্ব এসে
পড়ে শান্তনুর উপর৷ সেই সঙ্গে মতুয়াদের নিয়ে রাজনীতির চোরাস্রোতের মধ্যেও ঘটনাচক্রে ঢুকে পড়েন তিনি৷ সেই থেকে মতুয়াদের একাংশের অত্যন্ত পছন্দের ব্যক্তি শান্তনু৷ তাঁরাই বারবার শান্তনু ঠাকুরকে বিজেপি প্রার্থী করার দাবি তুলতে থাকেন৷ মতুয়া ভোট ব্যাঙ্কের কথা মাথায় রেখে সম্প্রদায়ের একাংশের দাবি মেনেই বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব বনগাঁ কেন্দ্রে শান্তনু ঠাকুরের নামে সিলমোহর দিয়েছে৷
এদিকে, তৃণমূলের প্রার্থী ঠাকুবাড়ির বউমা মমতাবালা ঠাকুর৷ ফলে পরিবারের মধ্যে ফের রাজনৈতিক লড়াইয়ের সাক্ষী হতে চলেছে বনগাঁ৷ মঙ্গলবার প্রার্থীহিসেবে শান্তনু ঠাকুরের নাম ঘোষণার পর তাঁর প্রতিপক্ষ তথা জেঠিমা মমতাবালার প্রতিক্রিয়া, ‘জানতাম, শান্তনু প্রার্থী হবে৷ ও ভীষণ লোভী৷ শান্তনু এতদিন মতুয়া ভক্তদের মিথ্যা কথা বলেছেন, তাই ভক্তরা আগামী দিনে তাঁকে জবাব দেবেন৷ কোনও মতুয়া ভক্ত তাঁর সঙ্গে থাকবেন না।’ আর তৃণমূল প্রার্থীর এই সমালোচনার জবাবে শান্তনুর আত্মবিশ্বাসী বক্তব্য, ‘ওরা জানে,আমি ভোটে দাঁড়ালে তৃণমূল প্রার্থীর মান অনেক নিচে নেমে যায়৷ তাই ওরা ইচ্ছা করেই বিক্ষোভ করছে৷’