হাওড়া থেকে এবার বিজেপির হয়ে প্রার্থী হয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম শ্রেষ্ঠ এবং অভিজ্ঞ সাংবাদিক রন্তিদেব সেনগুপ্ত। বাংলার জনপ্রিয় সংবাদিক পত্রিকা ‘সাপ্তাহিক বর্তমান’-এর সম্পাদক হিসাবে বহুবছর কাজ করা থেকে রাজীব গান্ধী কিংবা অটল বিহারি বাজপেয়ির মতো ঐতিহাসিক ব্যক্তিদের সাক্ষাৎকার নেওয়ার অভিজ্ঞতা, এইরকম হাজারো সোনালী পালক আছে তাঁর মুকুটে।
তাঁর সুদীর্ঘ কর্মজীবনে শুধু বাংলা কিংবা দেশের নয়, বিদেশেরও বহু ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী হয়েছেন তিনি। সেইসঙ্গে, অনেক কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েও এইসব ঘটনার কথা দেশের মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে কখনো পিছপা হননি এই অকুতোভয় মানুষটি।
স্বাধীন ভারতে পশ্চিমবঙ্গের মাথা তুলে দাঁড়ানোর লড়াইয়ে তিনি সামিল হয়েছিলেন তাঁর লেখনীর মাধ্যমে। তাঁর লেখা নির্ভিক এবং মূল্যবান প্রবন্ধগুলিতে ধরা পড়েছে দেশের ও বিদেশের বহু স্মরণীয় ঘটনার তথ্য।
অযোধ্যায় রামজন্মভূমি আন্দোলন বা ১৯৮৬ সালে রাজীব গান্ধী এবং মিজোরামের বিদ্রোহী নেতা লালডেঙ্গার মধ্যে হওয়া চুক্তির মতো ঐতিহাসিক ঘটনাই হোক কিংবা ১৯৮৮ সালে দার্জিলিঙে হওয়া গোর্খা আন্দোলন বা পশ্চিমবঙ্গের জঙ্গলমহলে হওয়া মাওবাদী আন্দোলনের মতো শিহরণ জাগানো ঘটনা, সবকিছুই তিনি খুব কাছ থেকে পর্যবেক্ষণ করে তা সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়েছিলেন।
এছাড়াও, কমিউনিস্ট পার্টির জাতীয় সম্মেলন, বাংলাদেশের অত্যন্ত কঠিন সময়ে হওয়া জেনারেল এরশাদের নতুন সরকার গঠনের নির্বাচন কিংবা নেপালের গণতান্ত্রিক আন্দোলন ইত্যাদির মতো চিরস্মরণীয় ঘটনাও তার লেখনীর স্পর্শ পেয়েছিল।
বর্তমানে তিনি ‘স্বস্তিকা’ নামক জনপ্রিয় পত্রিকার সম্পাদক। ২০১৬ সালে নাগপুরে আয়োজিত রাষ্ট্রীয় স্বয়ম্সেবক সংঘের অনুষ্ঠানে তিনি মুখ্য অতিথি হিসাবে নিমন্ত্রিত হয়েছিলেন। এছাড়াও তিনি কলকাতার সিবিএফসি সদস্য ও সংস্কার ভারতীর পরামর্শদাতা হিসাবেও কাজ করেন।
রন্তিদেব তাঁর দীর্ঘ বর্ণময় সাংবাদিকতার জীবনে বহু বিখ্যাত মানুষের সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন এবং তাঁর দক্ষতার সোপানে ভর করে সাধারণ মানুষ ও বিখ্যাত রাজনৈতিক ব্যক্তিদের মধ্যে একটা যোগসূত্র স্থাপিত হয়েছিল। যা শুধুমাত্র দেশ বা রাজ্যের রাজনৈতিক ইতিহাসকেই প্রভাবিত করেছিল তাই নয়, তিনি পরোক্ষভাবে সেইসমস্ত রাজনীতিবিদদের ভবিষ্যতকেও বদলে দিয়েছিলেন।
কিছু ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্ব যাঁদের তিনি সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন তাঁরা হলেন –
১) রাজীব গান্ধী (ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী)
২) লালকৃষ্ণ আদবাণী (ভারতের প্রাক্তন বিরোধী নেতা)
৩) অটল বিহারী বাজপেয়ী (ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী)
৪) ভি পি সিং (ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী)
৫) বিদ্রোহী মিজো নেতা: লালডেঙ্গা
৬) জ্যোতি বসু (পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী)
৭) মমতা ব্যানার্জি (পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী)
৮) বুদ্ধদেব ভট্ট্যাচার্য (পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী)
৯)প্রকাশ ক্যারাট (সিপিআইএম এর জেনারেল সেক্রেটারি )
১০) হোসেন মোহাম্মদ এরশাদ (বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট)
১১) বেগম খালেদা জিয়া (বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী)
১২) শেখ হাসিনা ওয়াজিদ (বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী)
১৩) রাজা বিরেন্দ্র ও রানী ঐশ্বর্য (নেপালের প্রাক্তন রাজা ও রানী)
১৪) তাসলিমা নাসরিন (বাংলাদেশের লেখিকা)
এবং আরও অনেকে।
রাজ্য তথা দেশের ইতিহাসে তাঁর অবিস্মরণীয় অবদানের জন্য রন্তিদেব সেনগুপ্ত বহু পুরস্কারে সম্মানিত হয়েছেন। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য ২০১১ সালে বরুন সেনগুপ্ত মেমোরিয়াল অ্যাওয়ার্ড, মাইকেল মধুসূদন অ্যাওয়ার্ড, বিবেক পুরস্কার এবং ইস্ট কলকাতা নাগরিক সমিতির ‘সেরা বাঙালি’ সম্মান ইত্যাদি।
রন্তিদেব সেনগুপ্ত বাঙালি তথা ভারতের গর্ব। তিনি রাজনীতিতেও নতুন মুখ নন। তাই বিজেপি ও প্রধানমন্ত্রী মোদীর হাত ধরে যদি তিনি বাঙালির উন্নয়নের জাহাজের কান্ডারি হন তাহলে রাজ্যের মানুষও তাঁর পাশেই থাকবে তা বলাই বাহুল্য। তাই আসন্ন নির্বাচনে এই মহান বাঙালি ব্যাক্তিত্ব যে অবশ্যই জয়লাভ করবেন বাঙালি হিসাবে আমরা সেই আশা রাখি।