২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকেই ‘রেডি’ রাখতে চাইছে বিজেপি। কিন্তু সাংসদ দিলীপ এবং রাজ্য সভাপতি দিলীপ – এই দুই সত্ত্বাকে কিছুটা আলাদা ভাবেই চাইছে কেন্দ্রীয় পার্টি। পার্টি চায় সংসদে দাঁড়িয়ে পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক চিত্র তুলে ধরুক দিলীপ। সারা দেশ জানুক পশ্চিমবঙ্গের প্রতিটি গ্রামের কাহিনী। কিন্তু, প্রতিটি অধিবেশনে সংসদে সময় দিতে হলে রাজ্য পার্টির খুঁটিনাটি বিষয়গুলি দিলীপের পক্ষে নজর রাখা কঠিন হয়ে উঠবে। সেই কারণেই, কার্যকরী সভাপতি হিসাবে RSS এর কোনও সিনিয়ার কার্যকর্তারা নাম উঠে আসছে।
তবে অনেক রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক বিষয়টির সঙ্গে কেন্দ্রীয় বিজেপির সাম্প্রতিক কার্যাবলীর মিল পাচ্ছেন। বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হওয়ার পর বিজেপি থেকে তাঁর কাজের চাপ কমানোর জন্য একজন কার্যকরী সভাপতি নিয়োগ করা হয়েছে। অমিত শাহ বিজেপির সর্ব ভারতীয় সভাপতি হলেও জগৎপ্রকাশ নাড্ডাকে কার্যকরী সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। উনি পার্টির খুঁটিনাটি কাজ সামলাচ্ছেন দিলীপের মূল জোর রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ। সঙ্ঘ চায় দিলীপই থাকুন পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বে।
২০১৫ সালে বিজেপির রাজ্য সভাপতি হন দিলীপ ঘোষ। পার্টি সংবিধান অনুযায়ী ২০১৮ সালেই সভাপতি হিসাবে নিজের প্রথম অধ্যায় শেষ করেছেন। কিন্তু দল তাঁকে দ্বিতীয় অধ্যায়ের সূচনা করতে বলেছিল অনেক আগেই। পার্টি সংবিধান অনুযায়ী, একজন সভাপতি দুই বার পরপর তিন বছর করে সভাপতিত্ব করতে পারেন। কিংবা ৬ বছর টানা সভাপতিত্ব করতে পারেন – সেক্ষেত্রে যেটা আগে হবে সেটিই তার সভাপতিত্বের শেষ দিন হিসাবে ধরবে পার্টি। দিলীপ ঘোষের ক্ষেত্রে ২০২১ পর্যন্ত সভাপতির চেয়ারে থাকবে তা নিশ্চিত।
২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে দিলীপের নেতৃত্বেই ঝাঁপাবে পার্টি। পার্টির ভিতরের খবর, হিন্দুত্বের ‘পোস্টার বয়’ দিলীপ ঘোষ-ই রাজ্য বিজেপির প্রধান মুখ হন, তা-ই চায় দিল্লি। তবে পর্দার আড়ালেই তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে চাণক্যনীতি চালিয়ে যাক মুকুল – তাও চায় দিল্লি। সেক্ষেত্রে ২০১৯ এবং ২০২১ সালের টিমের মধ্যে বিশেষ ফারাক চায় না বিজেপির কেন্দ্রীয় পার্টি।
শনিবারের পর মিনে হচ্ছে, ২০২১ সালের মহাগুরুত্বপূর্ণ বিধানসভা নির্বাচনে দিলীপ ঘোষকে সামনে রেখেই অভিযান শুরু করার পথে বিজেপি।