তিনি দেশের রাষ্ট্রপতি আবার তিনিই বাংলার জামাই। রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসার বিচারে সেই রামনাথ কোবিন্দের দ্বারস্থ হল পূর্ব বর্ধমান জেলার বিজেপি নেতৃত্ব। ঘটনাচক্রে ওই জেলারই দেশের প্রথম মহিলা বা ফার্স্ট লেডি।
পূর্ব বর্ধমান জেলায় নির্বাচন পরবর্তী শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের অত্যাচারের ঘটনা সম্পর্কে খোদ দেশের রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর দ্রুত হস্তক্ষেপ চাইল পূর্ব বর্ধমান জেলা বিজেপি নেতৃত্ব। শুক্রবার দেশের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ এবং দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে বিজেপি কর্মীদের ওপর মারধর করা, তাঁদের বাড়ি ছাড়া করে দেওয়ার ঘটনা তুলে ধরে লিখিতভাবে আবেদন জানানো হল।
স্মারকলিপিতে বিজেপি নেতৃত্ব জানিয়েছেন, নির্বাচন পরবর্তী বিরোধীদের ওপর লাগাতার অত্যাচার চলছে। গ্রামছাড়া হয়ে যাচ্ছেন বহু কর্মী। অবিলম্বে ব্যবস্থা নিন। এই মর্মেই পূর্ব বর্ধমান জেলার বিজেপি নেতৃত্ব দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ-এর কাছে লিখিত আবেদন জানালেন।
শুক্রবার পূর্ব বর্ধমান জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তবের মাধ্যমে এই আবেদন পাঠানো হল। এদিন বর্ধমান জেলাশাসকের কাছে এব্যাপারে স্মারকলিপি দিতে আসেন বিজেপির বর্ধমান জেলার দুই সাংগঠনিক সভাপতি সন্দীপ নন্দী এবং কৃষ্ণ ঘোষ সহ বিজেপি নেতৃত্বরা। সন্দীপবাবু জানিয়েছেন, নির্বাচন পরবর্তী সময়ে বেছে বেছে বিজেপি কর্মীদের মারধর তাদের বাড়ি ছাড়া, মিথ্যা কেসে ফাঁসানো হচ্ছে। অবিলম্বে শাসকদলের এই সন্ত্রাস বন্ধের আবেদন জানানো হয়েছে এদিন প্রধানমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রপতির কাছে।
সন্দীপ নন্দী জানিয়েছেন যে তাঁর সাংগঠনিক জেলায় রয়েছে ৯টি বিধানসভা। এই ৯টি বিধানসভাতেই চলছে শাসকদলের সন্ত্রাস। মিথ্যা কেসে বিজেপি কর্মীদের ফাঁসানো হচ্ছে। আউশগ্রামে বিজেপি কর্মীদের মারধর করার পর পুলিশ ১০জন বিজেপি কর্মীকেই গ্রেপ্তার করে মিথ্যা কেসে ফাঁসিয়েছে। তিনি আরও জানিয়েছেন, শক্তিগড়ের কল্পনা মাঝি, বর্ধমান শহরের বাদশাহী রোডের তারক শা, খাঁপুকুরের গৌতম ঘোষ, তালিত এলাকার আবসার মল্লিক, বিবেকানন্দ কলেজ মোড়ের বাবু দাস, রামপুরের উদয় চৌধুরী, বাহির সর্বমঙ্গলার মানস ব্যানার্জী এবং বুদবুদের বিজেপি কর্মী অর্পিতা দে-র ওপর হামলা চালানো হয়েছে। এব্যাপারে সংশ্লিষ্ট থানা এলাকাতে লিখিত এফআইআরও করা হয়েছে।
বর্ধমান পূর্ব সাংগঠনিক জেলার বিজেপি সভাপতি কৃষ্ণ ঘোষ জানিয়েছেন, নির্বাচনের আগের দিন থেকেই কাটোয়ার রাজোয়া গ্রামের বাসিন্দা বিজেপি কর্মী পিণ্টু প্রধানকে মারধর করে তাঁর পরিবার সহ বাড়ি ছাড়া করা হয়েছে। নির্বাচনের পর নাদনঘাট, কালনাতেও চলছে ব্যাপক সন্ত্রাস। তিনি জানিয়েছেন, জামালপুরে তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা ছাপ্পা দিতে চেষ্টা করায় তাতে বাধা দেওয়ায় বিজেপি কর্মীদের মারধর করে ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে।
সন্দীপ নন্দী অভিযোগ করেছেন যে এখনও পর্যন্ত ৫০জন বিজেপি কর্মীকে মিথ্যা কেসে জেলে পাঠানো হয়েছে। ১০০জন বিজেপি কর্মী ঘরছাড়া রয়েছে। তাই দ্রুত এব্যাপারে হস্তক্ষেপের আবেদন জানিয়েছেন তাঁরা এদিন রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর কাছে।
অপরদিকে, তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সাধারণ সম্পাদক উত্তম সেনগুপ্ত বিজেপির আনা এই অভিযোগ অস্বীকার করে পাল্টা তিনি অভিযোগ করেছেন, বহু জায়গাতে বিজেপিই দাঙ্গা বাধানোর চেষ্টা করছে। বিজেপি বহু তৃণমূল সমর্থকদের ওপর হামলা চালিয়েছেন। জামালপুরে তাঁদের দুই তৃণমূল কর্মীকে বেধড়ক মারধর করা হয়েছে। জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব জানিয়েছেন, এদিন তিনি একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন তিনি তা পাঠিয়ে দেবেন।