এখনই দেশে এনআরসি করার কোনও পরিকল্পনা নেই। পাহাড়ের সভায় বড় ঘোষণা করলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah)। NRC নিয়ে গোর্খাদের মধ্যে যে ভীতির সঞ্চার হয়েছে, তা দূর করতে তাঁদের যথাসম্ভব আশ্বস্ত করলেন শাহ। জানিয়ে দিলেন, “দেশে এখনই এনআরসির কোনও পরিকল্পনা নেই। আর যদি ভবিষ্যতে NRC হয়ও, তাতেও গোর্খাদের চিন্তার কোনও কারণ নেই। কারণ, আমার কোনও গোর্খা ভাই অনুপ্রবেশকারী নয়।”
পাহাড়ের সভা থেকে NRC নিয়ে শাহর এই ঘোষণা রীতিমতো চমকপ্রদ। কারণ, নাগরিকপঞ্জি বিজেপির বহুদিনের ঘোষিত কর্মসূচি। বিজেপি সরকার ইতিমধ্যেই সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন পাশ করিয়ে দিয়েছে। যা কিনা এনআরসির আগের ধাপ হিসেবেই মনে করছেন অনেকে। মজার কথা হল অসমেও তাঁরা সংশোধিত এনআরসি করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোট করিয়েছে। কিন্তু এরাজ্যের নির্বাচনে যে এনআরসির এই প্রতিশ্রুতি বুমেরাং হতে পারে সেটা ভালমতোই জানেন শাহ। একে তো গোর্খা ইস্যু, তার উপর আগামী কয়েক দফায় বাংলায় যে যে জেলায় নির্বাচন, সেই জেলাগুলিতে সংখ্যালঘুদের আধিক্য। এনআরসির আতঙ্কে এই দুটি ফ্যাক্টরই যেতে পারে বিজেপির (BJP) বিরুদ্ধে। আর সেটা বুঝেই সম্ভবত আগেভাগে জাতীয় নাগরিকপঞ্জি এখনই না করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে দিলেন শাহ। আলাদা করে গোর্খাদের বুঝিয়ে দিলেন, ভবিষ্যতে যদি কখনও এনআরসি করার কথা কেন্দ্র ভাবেও, তাতেও পাহাড়ের বাসিন্দাদের চিন্তার কোনও কারণ নেই। কারণ, এনআরসি হলেও গোর্খাদের কেশাগ্র কেউ স্পর্শ করতে পারবে না।
শুধু এনআরসি নয়, লেবংয়ের সভায় পাহাড়ের রাজনৈতিক সমস্যারও স্থায়ী সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন শাহ। জানিয়ে দিয়েছেন, রাজ্যে ক্ষমতায় এলে গোর্খা সমস্যার স্থায়ী সমাধান করবে বিজেপি। বিজেপির জন্য পাহাড়ের তিনটি আসন গুরুত্বপূর্ণ। এতদিন পাহাড়ে গোর্খাদের সঙ্গে যে অন্যায় হয়েছে, তা এবার বন্ধ করবে বিজেপি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাফ কথা, এবার গোর্খাদের সমস্যার স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধান করা হবে। কিন্তু কী সেই সমাধান? তা নিয়ে ধোঁয়াশা বজায় রেখেছেন শাহ। বস্তুত পাহাড়বাসীর বহুদিনের দাবি গোর্খা অধ্যুষিত এলাকা নিয়ে পৃথক গোর্খাল্যান্ড গড়া। যে দাবি মানা রাজ্য সরকারের পক্ষে অসম্ভব। আবার গোর্খা সংগঠনগুলিও পৃথক রাজ্য ছাড়া আর কিছুতেই সন্তুষ্ট নয়। সেক্ষেত্রে গোর্খাদের সমস্যার স্থায়ী সমাধান কী? সে প্রশ্নেরই উত্তর খুঁজতে হবে বিজেপিকে।
পাহাড়ের সমস্যার সমাধানের পাশাপাশি আরও একাধিক বড় ঘোষণা করেছেন শাহ। জানিয়ে দিয়েছেন, বিজেপি ক্ষমতায় এলে গোর্খাদের তফসিলি উপজাতির (ST) মর্যাদা দেওয়া হবে। সিঙ্কোনা বাগানে কর্মরতদের পাট্টা দেওয়া হবে।
পাহাড়ের মানুষের বন অধিকার আইনের আওতায় আসার অধিকার আছে।দার্জিলিং পুরসভাকে পুরনিগমে পরিণত করা হবে।