বেতন কমিশনের সুপারিশও কাটাছেঁড়া করতে পারে সরকার, মমতা মন্তব্যে আশঙ্কা

য় চার বছর এক মাস পর সরকারি কর্মীদের জন্য ষষ্ঠ বেতন কমিশনের সুপারিশ জমা করতে পারে রাজ্য সরকার। এই দীর্ঘ সময়কে অনেক সরকারি কর্মীই নজিরবিহীন বিলম্ব বলে দাবি করেছেন। রাজ্যে বামফ্রন্ট সরকারের আমলে, পঞ্চম বেতন কমিশনের আওতায় পয়লা জানুয়ারি ২০০৬ থেকে ৩১ মার্চ ২০০৮ – এই ২৭ মাস নোসোনাল এফেক্ট হয়েছিল।

মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সরকার পয়লা এপ্রিল ২০০৮ থেকে ৩১ মার্চ ২০০৯ – এই এক বছর পঞ্চম বেতন কমিশনের বর্ধিত বেতন দুটো কিস্তিতে কর্মীদের দিতে চেয়েছিল। সেই মতো, ২০১০ সালে প্রথম কিস্তি পেয়েছিল সরকারি কর্মীরা। এরপর রাজ্যে পরিবর্তন আসে। মুখ্যমন্ত্রী হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি, দ্বিতীয় কিস্তিকে দুটি ভাগে ভাগ করে কর্মীদের দেন। সেক্ষেত্রে মোট তিনটি কিস্তি হয়ে দাঁড়ায়। অনেক সরকারি কর্মচারী মতে তা অযৌক্তিক এবং অন্যায়।

বাম প্রভাবিত কো-অর্ডিনেশন কমিটি’র বক্তব্য, আগে থেকে মন্তব্য করা উচিত নয়। বেতন কমিশনের সুপারিশ জমা পড়ুক। তার পর দেখবো। তবে কেন্দ্রীয় হারে বেতন কাঠামোর বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রী কি বলছেন বোঝা যায়নি। কেন্দ্রীয় বেতন কমিশনে বৃদ্ধি হলেই রাজ্য পায়। এটি স্বাভাবিক পক্রিয়া।

বিজেপি প্রভাবিত, সরকারি কর্মচারী পরিষদের আহ্বায়ক দেবাশিস শীলের বক্তব্য, “[ল কি ব্যাপার বলুনতো ? ২১ শে জুলাই এর সভায় পে কমিশনের কথা? যদিও ” সাধ্যমত” শব্দটি যুক্ত ছিল। কে জানে ঐ শব্দটির মধ্যে কি লুকিয়ে আছে? তবে এটা বোঝা গেল “ঘেউ ঘেউ” শব্দ কানে প্রবেশ করেছে। কেন্দ্রীয় হারে বেতনে তার তীব্র আপত্তি আছে। শিক্ষক, কর্মচারীদের আন্দোলনকেও বাঁকা চোখে দেখছেন।

এটা আমাদের কাছে অপ্রত্যাশিত নয় । মানব বন্ধন , ষষ্ঠ বেতন কমিশনের চেয়ারম্যানের কুশপুত্তলিকা দুবার দুজায়গায় পোড়ানো , চেয়ারম্যানের পদত্যাগ দাবী , সর্বশেষ পর্য্যায়ে বেতন কমিশনের চেয়ারম্যানের প্রতিনিধির ঘোষণা যে জুলাই মাসের মধ্যেই সুপারিশ প্রকাশ করা হবে ইত্যাদি ঘটনার পরম্পরায় এ বক্তব্যই স্বাভাবিক।”

২০১৫ সালের ২৭ নভেম্বর রাজ্যে ষষ্ঠ বেতন কমিশন চালু হয়। এরপর কমিশনের মেয়াদ দীর্ঘায়িত হতেই থাকে। প্রথমে ৬ মাস, তারপর আরও এক বছর করে দু’বছর, তার পর ৬ মাস এবং পরবর্তীকালে ৭ মাস দীর্ঘায়িত হয়। বাড়ানো হয় ৩১ ডিসেম্বর ২০১৯ পর্যন্ত। অর্থাৎ সব মিলিয়ে ৪ বছর ১ মাস। দেবাশিসবাবুর মতে, “দিদিকে (মুখ্যমন্ত্রী) চাপ নিতে হবে না। ২০২১ শেষ কেন্দ্রের রাজ্যপাট চালাচ্ছে বিজেপি নবান্নে আসীন হবে। তখন আমরা কেন্দ্রীয় হারে বেতন পাব।

কর্মচারী নিয়োগ করবে রাজ্য সরকার আর চলে যেতে হবে কেন্দ্রে? আদৌ কেন্দ্রীয় হারে বেতন রাজ্য সরকারী কর্মচারীরা পাবেন কি না তা নিয়ে আমরা পূর্ণ সন্দেহ প্রকাশ করছি। বৃহত্তর আন্দোলনের জমি তৈরি হল। ২০২১ সালে বিজেপি নবান্নে আসীন হবে। তখন আমরা কেন্দ্রীয় হারে বেতন পাব।”

দেবময় ঘোষ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.