মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট করে দিলেন, কেন্দ্রকে রাজ্যের কোনও স্টেশনের নাম বদল করতে হলে রাজ্য সরকারের অনুমতি নিয়েই করতে হবে। অতএব, স্টেশনের নাম বদল নিয়েও এবার তৃণমূল-বিজেপি রাজনৈতিক টানাপোড়েন শুরু হয়ে গেল।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি রাজ্যের দুই স্টেশনের নাম বদলের উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্র। বর্ধমান স্টেশনের নাম বটুকেশ্বর দত্তের নামে ও শিয়ালদহ স্টেশনের নামে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের নামে করার প্রস্তাব উঠেছে।
উল্লেখ্য, নাম বদল নিয়ে সাধারণ মানুষ তথ্য নিত্যযাত্রীদের মধ্যে দ্বিমত রয়েছে। তবে বিপ্লবী বটুকেশ্বর দত্তের মৃত্যুবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে নিত্যানন্দ রায় প্রস্তাব দিয়েছিলেন, যে বর্ধমান স্টেশনের নাম বদলে বটুকেশ্বর দত্ত করা হোক। স্বভাবতই এই প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছে বিপ্লবীর পরিবার। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রায় আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলেছিলেন, “কেন্দ্রীয় সরকার নিশ্চিতভাবে বর্ধমান স্টেশনের নাম বটুকেশ্বর দত্তের নামে করবে। সব প্রক্রিয়া শেষ করা হবে।”
কিন্তু এরই মধ্যে নাম পরিবর্তন নিয়ে শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক টানাপোড়েন। রাজ্যের নাম পরিবর্তন কেন্দ্র মানেনি অথচ বর্ধমান ও শিয়ালদহ স্টেশনের নাম পরিবর্তন করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এতে ক্ষুদ্ধ তৃণমূল সরকার। কেন্দ্রের বক্তব্য, দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত বহু বিপ্লবী, কিন্তু দেশের সরকারের কাছ থেকে উপযুক্ত সম্মান পাননি তাঁরা। তাই এবার স্বাধীনতা সংগ্রামীদের নামেই রেলস্টেশনগুলির নাম রাখার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যথারীতি এর মধ্যে রাজনৈতিক অভিসন্ধির গন্ধ পাচ্ছেন বিরোধীরা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “যদি কেন্দ্র আমাদের রাজ্যের কোনও স্টেশনের নাম পরিবর্তন করতে চায়, তাহলে রাজ্যের সম্মতিরও তাতে প্রয়োজন। নাম পরিবর্তনের ছাড়পত্র দেয় রাজ্যই। এটা বিজেপির প্রস্তাব। সরকার চলে সংবিধান মেনে, রাজনৈতিক দলের ইচ্ছায় নয়।”
এমত অবস্থায় রাজ্যের রাজনৈতিক মহল মনে করছে, গোটা বিষয়টি রাজনৈতিক রঙ নিতে চলেছে। কেন্দ্র যেহেতু পশ্চিমবঙ্গের নাম বাংলা করার বিষয়টি ঝুলিয়ে রেখেছে, সেক্ষেত্রে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও সহজে স্টেশনের নাম পরিবর্তন করতে দেবেন বলে মনে হয় না।