চিনের নতুন ভাইরাস করোনাভাইরাস (সিওভি) নিয়ে সতর্ক বাংলাদেশ৷ এই ভাইরাস যাতে বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়তে না পারে,তারজন্য সেদেশের বিমানবন্দরে বিশেষ সতর্কব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে৷ দেশের সবকটি নৌ,বিমান ও স্থলবন্দরের ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট এবং স্বাস্থ্য ডেস্কগুলিতে বিশেষ সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

চিন থেকে আসা সরাসরি ফ্লাইটগুলোর যাত্রীদের পর্যবেক্ষণে রাখা হবে বলে জানিয়েছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ৷ বাংলাদেশের হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রতিদিন ঢাকা-চীন-ঢাকা রুটে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনস, চায়না ইস্টার্ন ও চায়না সাদার্ন এয়ারলাইনসের ছয়টি ফ্লাইট যাওয়া-আসা করে৷ এর মধ্যে চিন থেকে আসা ফ্লাইটের যাত্রীদের পর্যবেক্ষণ করা হবে৷

জানা গিয়েছে, চিনের হুবেই প্রদেশের উহানে ছড়িয়ে পড়া নিউমোনিয়া-সদৃশ এ ভাইরাসটি নতুন এক ধরনের করোনাভাইরাস।প্রচলিত নিউমোনিয়া রোগের জন্য স্ট্রেপটোকক্কাস নিউমোনি নামের একটি ব্যাকটেরিয়াকে দায়ী করা হলেও সম্প্রতি দেখা দিয়েছে নতুন এই ভাইরাস৷ চিনে ইতোমধ্যেই অনেক মানুষ নতুন ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়েছে৷ তাদের মধ্যে মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে৷ উহানের একটি সামুদ্রিক খাবারের বাজার থেকে ছড়িয়ে পড়া এ ভাইরাসে চীনে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছেই৷

সোমবার সকালে শাহজালাল বিমানবন্দরে ওরিয়েনটেশন প্রোগ্রাম করা হয়েছে৷ করোনাভাইরাস (সিওভি) যাতে বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়তে না পারে৷ ওই প্রোগ্রামে ছিল স্বাস্থ্য দফতরের অধিকর্তারা, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও), সিভিল এভিয়েশনের কর্মকর্তাসহ বিমানবন্দরের সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকেরা৷

হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এ এইচ এম তৌহিদ উল আহসান জানান, যাত্রীদের পরীক্ষা–নিরীক্ষা করানোসহ এসএআরএস ভাইরাস প্রতিরোধে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷ বিমানবন্দরে স্থাপিত থার্মাল স্ক্যানারের ভেতর দিয়ে আসার সংকেত দিলে চীন থেকে আসা ওই যাত্রীকে পরীক্ষা করবেন স্বাস্থ্যকর্মীরা৷

সাধারণত কারও শরীরের তাপমাত্রা ১০০ ডিগ্রি ফারেনহাইট থাকলেও থার্মাল স্ক্যানার সংকেত দেয়৷ এরপর ওই যাত্রীকে বিমানবন্দরে কোয়ারেনটাইন রুমে রেখে পর্যবেক্ষণ ও চিকিৎসা দেওয়া হবে৷ শারীরিক অবস্থা অনুযায়ী তাঁকে (যাত্রী) কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হবে৷ এছাড়া যাত্রীরা চিনের কোন শহর থেকে এসেছেন, কোথায় কোথায় গিয়েছিলেন, অবস্থানের সময়সহ বেশ কিছু তথ্য সংগ্রহ করা হবে৷ একই সঙ্গে চিনে সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনাকারী বিমান সংস্থাকে এসব পদক্ষেপ সম্পর্কে অবহিত করা হয়েছে।

করোনাভাইরাস (সিওভি) ভাইরাস হল একটি বৃহৎ পরিবার যে ভাইরাস সংক্রমণে ঠাণ্ডা, কাশি বা জ্বরের ভাইরাস যেমন থাকে, ঠিক তেমনি মিডল ইস্ট রেসপিরেটরি সি (এমআরএস-সিওভি) এবং তীব্র শ্বসনতন্ত্র সিন্ড্রোম (এসএআরএস-সিওভি) এর মতো আরও মারাত্মক রোগের ভাইরাসও এই পরিবারের অন্তর্গত৷

রোগের লক্ষণ: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, এ ভাইরাসগুলো জুনোটিক, যা মূলত প্রাণীদেহ থেকে মানবদেহে সঞ্চারিত হয়। আর এ ভাইরাসের সংক্রমণে জ্বর, সর্দি-কাশি, শ্বাসকষ্ট হতে পারে যা থেকে নিউমোনিয়ার মত গুরুতর রোগে মৃত্যুর কারণ হতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.