বাবুল সুপ্রিয়, দিলীপ ঘোষ ও লকেট চ্যাটার্জি মমতাকে জয় হিন্দ ম্যাসেজের যোগ্য জবাব দিলেন, চিন্তায় পড়ে গেলেন তৃণমূল নেত্রী!

মমতা ব্যানার্জীর (Mamata Banerjee) গলার কাটা হয়ে দাঁড়িয়েছে জয় শ্রী রাম ধ্বনি। ওনার সামনে কেউ এই স্লোগান দিলেই তাঁকে গ্রেফতার করাচ্ছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। এমনকি তৃণমূলের নেতা, কর্মীদের সামনে কেউ ভুল করে এই ধ্বনি দিলে, তাঁকে হয়ত বেধড়ক মারধর করা হচ্ছে, নাহলে হত্যাই করে ফেলা হচ্ছে। এরাজ্যে তৃণমূলের শাসনে আর যে যাই বলুক, ‘জয় শ্রী রাম” বলা যাবেনা। কারণ তৃণমূল নেত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে এটা একটা ‘গালাগালি”। আর এই জয় শ্রী রাম ধ্বনিকে গালাগাল বলার জন্য, এবং এই ধ্বনি দেওয়ার পর বিজেপি কর্মী সমর্থকদের জেল এবং খুন করার প্রতিবাদে। বিজেপি নেতৃত্ব মমতা ব্যানার্জীর বাড়িতে ১০ লক্ষ জয় শ্রী রাম লেখা পোস্টকার্ড পাঠাতে চলেছে।

আবার বিজেপির জয় শ্রী রাম পোস্টকার্ডের পাল্টা, বিজেপির নেতা নেত্রীদের মোবাইল নম্বর সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল করে তাতে ‘জয় বাংলা – জয় হিন্দ” লিখে পাঠাচ্ছে তৃণমূল। গতকাল থেকে তৃণমূলের এই অভিযানে বিজেপির নেতা বাবুল সুপ্রিয়, দিলীপ ঘোষ এবং লকেট চ্যাটার্জীর ফোন ভরে গেছে। তবে তৃণমূলের এই ম্যাসেজ পেয়ে একদমই বিরক্ত হননি বিজেপির নেতা/নেত্রীরা। তাঁদের সবাইকে একে একে জবাব দেওয়া সম্ভব না বলেই, সোশ্যাল মিডিয়া আর ইলেকট্রনিক্স মিডিয়াকে বেছে নিয়েছে বিজেপির এই সাংসদেরা।

সকালে দিলীপ ঘোষ তৃণমূলকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন ওনার নাম্বার ভাইরাল করার জন্য। দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘এতদিন ধরে আমার ফোন নাম্বার মুষ্টিমেয় কিছু মানুষের কাছে ছিল, কিন্তু তৃণমূলের সৌজন্যে এখন আমার নাম্বার বাংলার প্রতিটি গ্রামে গ্রামে ছড়িয়ে পড়েছে। আমি এখন আরও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছাতে পারব। তৃণমূলের সন্ত্রাস, দুর্নীতি নিয়ে আমি আরও বেশি করে মানুষকে বোঝাতে পারব।”

দিলীপ ঘোষ আরও বলেন, ‘এর আগে যাদের কাছে আমার ফোন নাম্বার ছিলোনা, তাঁদের কাছেও এখন আমার নাম্বার আছে। তাঁরা এখন সরাসরি ফোন করে আমার সাথে যোগাযোগ করতে চাইছে। এমনকি সোমবার থেকে বহু তৃণমূল নেতা আমাকে ফোন করেছেন।” তৃণমূলের তরফ থেকে দিলীপ ঘোষের ফোন নম্বর ভাইরাল করায় বেজায় খুশি দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, ‘যাক এই সুযোগে তৃণমূলের মধ্যে অন্তত জাতীয়তাবাদটা জেগে উঠবে।”

আরেকদিকে বিজেপির মহিলা সাংসদ ওনার ফেসবুকে পেজে এই সংক্রান্ত ব্যাপারে পোস্ট করে বলেন, ‘ কাল থেকে আমার ফোনে জয় হিন্দ এবং জয় বাংলা যারা এসএমএস করছেন তাদের সবাইকে আমি উত্তর দিতে পারিনি, তাই এখানেই উত্তরটা দিলাম। একজন ভারতবাসী ও একজন বাঙালি হয়ে এই এসএমএস পেয়ে আমি গর্বিত বোধ করি। আগামী দিন আমরা সবাই একসাথে হয়ে পথ চলবো সোনার বাংলা তৈরি করবার লক্ষ্যে।” লকেট চ্যাটার্জী মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘ ভালো থাকুন, সুস্থ হয়ে উঠুক আমাদের মুখ্যমন্ত্রী। জয় হিন্দ, জয় বাংলা , ‘জয় শ্রী রাম” আমাকে আরো শুভেচ্ছা পাঠানোর অনুরোধ রইল।”

আবার আসানসোলের বিজেপি সাংসদ নিজের ফেসবুকে অ্যাকাউন্টে পোস্ট করে লেখেন, ‘ ‪যারা আমাকে মোবাইলে বা ফেসবুকে ‘জয় হিন্দ জয় বাংলা’ জানাচ্ছেন তাদের বলি ধন্যবাদ ও ‘Same to You’! ‘হিন্দ’ আর ‘বাংলা’ তো আমার আপনার সবার ! আপনাদের জন্য রইলো অনেক ভালোবাসা জআর দিদিমনিকে জানাই ‘জয় শ্রী রাম’ ”

বাবুল সুপ্রিয় আরেকটি পোস্ট করে লেখেন, ‘ভারতীয় ও বাঙালি হিসেবে সমস্ত তৃণমূলিকে জানাই জয় হিন্দ জয় বাংলা ও মেসেজ পাঠানোর জন্য অনেক শুভেচ্ছা – মমতাদিদিমণিকে আমার ‘জয় শ্রী রাম’ জানাবেন ! যদি দিদি ভয় পান তাহলে তিন বার একসাথে জোর গলায় ‘জয় শ্রী রাম জয় শ্রী রাম জয় শ্রী রাম’ বলবেন ! ভালো থাকবেন। প্রণাম – জয় শ্রী রাম”

বিজেপি নেতাদের অপদস্ত করতে গিয়ে, উল্টে জবাব পেয়ে কার্যত ব্যাকফুটে তৃণমূল। বিজেপির কোন নেতা/নেত্রী বলেননি যে তাঁরা জয় বাংলা অথবা জয় হিন্দ বলবেন না। এমনকি এত ম্যাসেজ আসার পরেও তাঁরা এখনো পর্যন্ত বলেননি যে, তাঁরা এর বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ নেবেন। কিন্তু মমতা ব্যানার্জীর সামনে ‘জয় শ্রী রাম” বললেই হয় জেলে ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে, অথবা তাঁদের খুন করা হচ্ছে। তবে একজন মহিলা তথা সাংসদের ব্যাক্তিগত ফোন নাম্বার সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়ানো কতটা যুক্তিযত সেটাই দেখার বিষয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.