স্বাধীনতা দিবসের শোভাযাত্রা মিটতেই মনীষীদের ছবি রাস্তায়, নিন্দার ঝড় গয়েশ্বরী গার্লস স্কুলে

স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে মনীষীদের ছবি সঙ্গে নিয়ে শোভাযাত্রায় বেরিয়েছিল স্কুলের পড়ুয়ারা এবং শিক্ষিকারা। পড়ুয়াদের হাতে ছিল পতাকা, মনীষীদের ছবি। মুখে ছিল দেশভক্তির বাণী এবং গান। কিন্তু শোভাযাত্রা শেষ হতেই মনীষীদের ছবির সঙ্গে পতাকা পড়ে থাকতে দেখা গেল রাস্তার ধারে এবং ড্রেনে। ঘটনাকে ঘিরে ইতিমধ্যেই সমালোচনার ঢেউ উঠেছে মহিষাদলে। ওই পড়ুয়ারা ছিল মহিষাদল গয়েশ্বরী গার্লসের। ওদিকে, অভিযোগের কথা একবাক্যে মেনেও নিয়েছেন স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা।

অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সাফাই দিয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা জানিয়েছেন, শোভাযাত্রা চলাকালীন সময় আচমকা বৃষ্টি নামে। সেই কারণেই পড়ুয়ারা রাস্তার ধারে ছবি ও পতাকা রেখে ওই জায়গা থেকে পালিয়ে যায়। কারণ, ওই সমস্ত ছবি থেকে রং লেগে যায় স্কুল পোশাকে। এদিকে স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, পড়ুয়াদের যদি ঠিকভাবে শেখানো হত যে দেশের স্বাধীনতার পিছনে এই সমস্ত মনীষীদের ভূমিকা ঠিক কতখানি, তাহলে কখনই মনীষীদের ছবি রাস্তার ধারে ফেলে রেখে চলে আসত না তারা। এলাকাবাসী আরও জানায় যে, রাস্তার ধারে অবহেলায় পড়েছিল সূর্য সেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, ক্ষুদিরাম বসু, ঋষি অরবিন্দ এবং নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর ছবি।

স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা পারমিতা গিরি যুক্তি দিয়ে বলার চেষ্টা করেন যে, ”১৮০০ ছাত্রী এদিনের অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিল। সাড়ে ৮০০র মতো পোস্টার তৈরি করেছিল ওরা। তা নিয়ে বেরোলেও মাঝে বৃষ্টি এসে যায়। যেহেতু এগুলো রং তুলিতে আঁকা ছিল পুরো রংটা ওদের স্কুলের পোশাকে লাগছিল। ছোট ছোট বাচ্চা সব। জামায় রং লেগে যাচ্ছে দেখে নামিয়ে রাখে। আমরা এখনই সেগুলো তুলে নিচ্ছি। ইতিমধ্যে অনেকগুলো তোলাও হয়ে গিয়েছে।”

অন্যদিকে, ওই এলাকারই আরেক বাসিন্দা রাজর্ষি মাইতিও পেশায় শিক্ষক। তিনি এই বিষয়ে বলেন, ”ছবিগুলি রাস্তার উপরে ছড়ানো ছিল। ছবিগুলির পিছনে নাম, ক্লাস লেখা ছিল। তাতেই বুঝলাম মহিষাদলের গয়েশ্বরী গার্লসের ছাত্রীদের তৈরি করা প্ল্যাকার্ড। ওরা হাতে করে হয়ত শোভাযাত্রায় নিয়ে এসেছিল। ৭৫ তম স্বাধীনতা দিবসে যাদের সম্মান জানানোর কথা, তাঁদের ছবি রাস্তায় ছড়িয়ে দেওয়া হল। মহিষাদলবাসী হিসাবে আমার খুব লজ্জা করছে। এখানকার নাম করা স্কুল, তারা জানে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে মহিষাদলের ভূমিকা, তারপরও তারা এমন ঘটনা ঘটাল।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.