চুঁচুড়া-মগড়া তৃণমূল ব্লক সভাপতি দিলীপ দাসের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে কোটি টাকারও বেশি নগদ উদ্ধার করেছেন আয়কর দফতরের আধিকারিকরা। এ ছাড়াও উদ্ধার হয়েছে দু’টি অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র। আয়কর দফতরের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, এই আগ্নেয়াস্ত্রগুলির একটি ইতালির এবং অন্যটি জাপানি।

বুধবার সকালেই হুগলি স্টেশন সংলগ্ন এই তৃণমূল নেতার বাড়িতে হানা দেন আয়কর দফতর। চারটি গাড়িতে করে আসেন বারো জন অফিসার। গোটা বাড়ি ঘিরে ফেলেন তাঁরা। বাড়ির মেন গেট বন্ধ থাকায় পাঁচিল টপকেই ভিতরে ঢোকেন কয়েকজন অফিসার। তাঁদের অনুমান, সম্ভবত এই আয়কর হানার ব্যাপারে আগে থেকেই আন্দাজ করেছিলেন দিলীপবাবু। আর সেই জন্যেই স্ত্রী কৃষ্ণা দাসকে নিয়ে চম্পট দেন তিনি। তবে সূত্রের খবর, পরে দিলীপ দাস এবং কৃষ্ণা দাস বাড়ি ফিরে আসেন।

আয়কর দফতরের কাছে আগে থেকেই খবর ছিল যে প্রচুর বেহিসেবি সম্পত্তি রয়েছে দিলীপ দাসের। সেই সূত্রেই এ দিন দিলীপবাবুর বাড়িতে হানা দেন আধিকারিকরা।জানা গিয়েছে, তল্লাশি চলাকালীন কাউকে বাড়ি থেকে বেরোতে দেওয়া হয়নি। বাড়ির সব জায়গা কার্যত তোলপাড় করে তল্লাশি চালান আয়কর দফতরের অফিসাররা। এর পর আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হওয়ায় দিলীপ দাসের ছেলে জয়প্রকাশ দাসকে পুলিশের হাতে তুলে দেন আয়কর দফতরের আধিকারিকরা। আয়কর দফতরের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, তল্লাশির ভিডিও করে রাখা হয়েছে। নগদ এবং আগ্নেয়াস্ত্রের পাশাপাশি উদ্ধার হয়েছে প্রচুর নথিও।


জয়প্রকাশ দাস

প্রসঙ্গত, দিলীপবাবুর স্ত্রী কৃষ্ণা দাস কোদালিয়া ২ নং গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান এবং বর্তমান সদস্যা। তাঁকেও এ বার প্রধান করতে উঠে পড়ে লেগেছিলেন চুঁচুড়ার বিধায়ক অসিত মজুমদার। তৃণমূল সদস্যদের দিয়ে মুচলেকা দেওয়া হয়েছিল যে কৃষ্ণা দাসকেই প্রধান মানতে হবে।কিন্তু বোর্ড গঠনের দিন সদস্যরা কৃষ্ণা দাসকে প্রধান না মেনে ভোটাভুটি করে বিদ্যুৎ বিশ্বাসকে প্রধান করে।পরে দিলীপ দাসকে চুঁচুড়া-মগড়া ব্লক সভাপতি করে দল। একজন সাধারণ স্কুল শিক্ষক থেকে এলাকায় দিলীপবাবুর এত প্রভাব প্রতিপত্তি কী করে হলো তা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই এলাকার মানুষের মধ্যে নানা প্রশ্ন উঠত। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, এই দিলীপ দাস চুঁচুড়ার বিধায়ক অসিত মজুমদারের খুবই ঘনিষ্ঠ। এমনকী স্কুল শিক্ষক দিলীপবাবু বছরে একবার ইউরোপ ট্যুরে যেতেন বলেও দাবি করেছেন স্থানীয়রা।

এই ঘটনা প্রসঙ্গে হুগলি জেলার তৃণমূলের শীর্ষনেতা তথা উত্তরপাড়ার বিধায়ক প্রবীর ঘোষাল বলেন, “আমি শুনেছি আমাদের চুঁচুড়া-মগরা পঞ্চায়েত সমিতির ্প্রধান দিলীপ দাসের বাড়িতে আয়কর হানা হয়েছে। এবং তার সঙ্গে কিছু গল্প বাজারে ছাড়া হয়েছে। যত ভোট এগিয়ে আসবে বিজেপি তত এই কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলিকে কাজে লাগাবে। কারণ ওদের জনসমর্থন নেই, ওদের সংগঠন নেই। তাই ওরা এগুলো করছে। আজকেও দিনহাটায় মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, এসব করে তৃণমূল কংগ্রেসকে ভয় দেখানো যাবে না।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.