পুরোহিত ভাতায় আপত্তি অর্জুনের, বললেন ‘রাজ্যের উন্নয়নের কথা ভাবুন মমতা’

পুরোহিত ভাতা চালু ও তাদের স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের অন্তর্ভুক্ত করা নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে কটাক্ষ করলেন বারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিং৷ তিনি বললেন, সব কিছু ফ্রি করার আগে রাজ্যের ভালোর কথা ভাবা উচিত৷ শুধু পিসি ভাইপো পাইভেট লিমিটেডে টাকা চলে গেলে হবে না।

রবিবার কাঁকিনাড়ার নারায়ণপুরে একটি রক্তদান শিবিরের অনুষ্ঠানে গিয়ে অর্জুন সিং বলেন , “দিদিমনি উন্নয়নের টাকা উন্নয়নের কাজে খরচ করুক, সেই উন্নয়নের টাকা উনি এক সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে ভাগ করে দিচ্ছেন। যেমন অরবিন্দ কেজরিওয়াল মহিলাদের বিনা পয়সায় মেট্রোতে সফর করাবে বলেছিল। সুপ্রিম কোর্ট বলছে, কালকে যদি মেট্রো রেলের আর্থিক ক্ষতি হয় সেই ফল কে ভোগ করবে? সেই সরকারকে পয়সা দিতে হবে, যারা দেশের অগ্রগতির কথা বিবেচনা না করে যা ইচ্ছা তাই বলে যায়। সব কিছু ফ্রি করার আগে কেমন করে দেশের ভালো হবে, রাজ্যের ভালো হবে, সেটা বিবেচনা করা উচিত। শুধু পিসি ভাইপো পাইভেট লিমিটেডে টাকা চলে গেলে হবে না।

২০১১ সালে রাজ্যে ক্ষমতায় এসে রাজ্যে মৌলবী ও মোয়াজ্জেমদের মাসিক ভাতা চালু করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। কয়েকদিন আগে পুরোহিতদের জন্য ভাতাও চালু হয়েছে। গত সোমবার কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম পুরসভার অন্তর্গত শ্মশানঘাটগুলির অগ্রদানী ব্রাহ্মণদের হাতে ভাতা বাবদ চেক তুলে দেন। এরপরই বিরোধীরা বলতে শুরু করে, তৃণমূল সরকার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে তোষণ করছে, এই অভিযোগ থেকে মুক্ত হতেই যে পুরোহিত ভাতা চালু করা হয়েছে৷ সেই অভিযোগ নিয়ে মেয়র বলেছিলেন, রাজ্যের মন্দির, মসজিদ সংস্কারের মাধ্যমে রাজ্যের ঐতিহ্যকে বাঁচিয়ে রাখতে চায় সরকার। তাই এই ভাতা চালু করা হয়েছে৷

পর্যবেক্ষকদের মতে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু তোষণের অভিযোগ তুলে হিন্দু ভোট নিজেদের পকেটে পোরার মরিয়া প্রয়াস ছিল বিজেপির৷ যে প্রচার ইমাম ভাতা চালু করার পর তারা করেছিল৷ কিন্তু পুরোহিত ভাতা চালু হওয়ার পর তৃণমূলের বিরুদ্ধে তোষণের রাজনীতির প্রচার তাঁরা সেভাবে করতে পারবে না৷ হিন্দু ভোট যাতে পুরোপুরি তৃণমূলের পকেটে না যায় সেকারণেই উন্নয়ন নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে খোঁচা দিলেন বিজেপি নেতা অর্জুন সিং৷

যদিও রাজ্যের সকল পুরোহিতেরা এই ভাতা পাওয়ার অধিকারী হচ্ছেন না। কলকাতা পুরসভা এলাকার সকল পুরোহিতদেরকেও যে ভাতা দেওয়া হবে এমন নয়। কেবলমাত্র শ্মশানের কাজে নিযুক্ত পুরোহিতদেরকেই ভাতা দেবে কলকাতা পুরসভা। মোট সাতটি শ্মশান রয়েছে। প্রতিদিন সেখানে অনেক মৃতদেহ দাহ করা হয়। শ্মশানের পারলৌকিক কাজ সকলে করেন না। অগ্রদানী ব্রাহ্মণেরা কেউ কেউ ওই কাজ করে থাকেন। তাই শহরের প্রতিটি শ্মশানেই থাকেন ওই ব্রাহ্মণেরা।দিন প্রতি ৩৯৮ টাকা করে ভাতা পাবেন শ্মশানে সমস্ত পুরোহিতরা। প্রথম পর্যায় মোট ২৭ জন পুরোহিতের প্রত্যেকের হাতে ৯,৫০০ টাকার চেক তুলে দিয়েছেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.