ভাটপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক তথা পুরসভার চেয়ারম্যান অর্জুন সিং বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার দু’ঘণ্টার মধ্যেই তোলপাড় শুরু হয়ে গেল সেখানে। পুরসভার ৩৫ জন কাউন্সিলরের মধ্যে ২২ জনই গেরুয়া শিবিরের দিকে যাচ্ছেন বলে খবর। যদি শেষ পর্যন্ত তাই হয়, তাহলে ভাটপাড়া পুরসভা ভেঙে যেতে পারে।
জানা গিয়েছে, কাল পর্যন্ত যে অর্জুন অনুগামীরা তৃণমূল ছিলেন, রাতারাতি ‘দাদার’ দৌলতে তাঁরাই গেরুয়া আবির মেখে উৎসবে মেতেছেন। তৃণমূলের একটি পার্টি অফিসও দখল হয়ে গিয়েছে বলে খবর। দোর্দণ্ডপ্রতাপ এই নেতার অনুগামীরা ঘিরে নিয়েছে ভাটপাড়া পুরসভার দফতর। মোটর সাইকেলে মোটর সাইকেলে ছয়লাপ ওই এলাকা। ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়েছে এলাকায়। এমনকী পুলিশও পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে বলে খবর।
ভাটপাড়া পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান সোমনাথ তালুকদার এবং তৃণমূল কাউন্সিলর দেবু সরকারকেও বিজেপি-তে যাওয়ার জন্য হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে তৃণমূলের অভিযোগ। উৎসবে মেতেছেন অর্জুন অনুগামীরা। দাদা ফেরার অপেক্ষায় তাঁরা। ব্যারাকপুর লোকসভায় যে অর্জুনকেই বিজেপি প্রার্থী করবে তা একপ্রকার পরিষ্কার। এবং সেখানকার দু’বারের সাংসদ তথা প্রাক্তন রেলমন্ত্রী দীনেশ ত্রিবেদীর লড়াইটা যে এবার কঠিন তাতে কোনও সন্দেহ নেই।
দীর্ঘদিনের দাপুটে নেতা অর্জুন। আজ থেকে বিশ বছর আগে ৯৯-এর লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল-বিজেপি জোটের প্রার্থী হিসেবে ব্যারাকপুর কেন্দ্রে লড়াই করেছিলেন অর্জুন। সে বার সিপিএমের হাইপ্রোফাইল নেতা তড়িৎবরণ তোপদারের বিরুদ্ধে কড়া চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছিলেন। তখনকার বামেদের গড় বলে পরিচিত ব্যারাকপুরের মাস্টার মশাই তড়িৎবাবু জিতেছিলেন মাত্র চল্লিশ হাজার ভোটে। যদিও ২০০৪-এর ভোটে তাঁর কাছেই প্রায় আড়াই লাখ ভোটে হেরেছিলেন অর্জুন। কিন্তু নিজের জায়গা ভাটপাড়া দখলেই রেখে দিয়েছেন। চার বারের বিধায়ক তিনি। ফলে এমন একজন নেতা বিজেপি-তে গেলে যে তৃণমূলে ভাঙন ধরাবেন, তা অনেকেই আন্দাজ করেছিলেন। হলোও তাই।
বৃহস্পতিবার থেকেই প্রচারের ওয়ার্ম আপ শুরু করে দিয়েছেন দীনেশ ত্রিবেদী। এ দিন প্রথমে যান গারুলিয়া পুরসভায়। সেখান থেকে তাঁর আসার কথা ছিল ভাটপাড়া পুরসভায়। কিন্তু এই পরিস্থিতি দেখেই বিকেল সওয়া তিনটে পর্যন্ত তিনি সেখানে যাননি বলেই খবর। এখন দেখার অর্জুন সিং দিল্লি থেকে ভাটপাড়ায় ফেরার পর সেখানকার পরিস্থিতি কী আকার নেয়।