সন্ত্রাস কোনো কূটনীতি দিয়েই রোখা যাবে না। এর জন্য চাই সৎ নীতি। সৎ নীতি হল সত্যকে স্বীকার করা। সত্য হল, পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদীদের কে অস্ত্র দেয়, ট্রেনিং দেয়, টাকা দেয়। কিন্তু তাদের ব্রেন ওয়াশ এর কাজটা হয় ভারতের প্রত্যেকটি মাদ্রাসায়, যেখানে জান্নাত ও ৭২ জন সুন্দরী সেক্স বম্ব হুরীর লোভ দেখানো হয়, ফিদায়েন বা আত্মঘাতী জঙ্গি হওয়ার জন্য provoke করা হয়। সুতরাং, পাকিস্তানকে টাইট দিয়ে, ভারতের গোয়েন্দা এজেন্সী গুলোকে আরো সক্রিয় ও দক্ষ করে এবং সর্ব রকম নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেও সন্ত্রাসবাদ আটকানো যাবে না। এইসব নিরাপত্তা ব্যবস্থার ফলে মনে করুন, বোমা পিস্তল, আর ডি এক্স, অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট, সব আটকে দিলেন। পাকিস্তানে সমস্ত জঙ্গী প্রশিক্ষণ ট্রেনিং ক্যাম্প বন্ধ করে দিলেন। সন্ত্রাসবাদী হামলা বন্ধ হবে? ভাল করে ভেবে দেখুন।
গোটা ভারতে সমস্ত ড্রাইভিং স্কুল ও সেন্টারগুলো তো চলবে। সেখানে মুসলিম তরুণ ও যুবকরা গাড়ি চালানো তো শিখবে! শিখে প্রথমে ছোট গাড়ি চালাবে। তারপর বাস ও ট্রাক চালাবে। তারা কম মাইনে তে কাজ করবে। বাস ও ট্রাকের মালিকরা তাদের সহজেই ড্রাইভার হিসাবে নিয়োগ করবে। কিছুদিনের মধ্যেই তারা মালিকের আস্থা অর্জন করবে। সেই ড্রাইভার এর হাতে বন্দুক নেই, বোমা নেই। হাতে আছে ট্রাকের স্টিয়ারিং, আর ডান পায়ের নিচে অ্যাকসিলেটর। ১৮ চাকার বা ২৪ চাকার ভারী ট্রাক। মাথায় আছে ১৬ বছর বয়সী ৭২ জন উদ্ভিন্নযৌবনা হুরীর স্বপ্ন ও কামনা। সেই আয়তচক্ষু উন্নতবক্ষা হুরীরা জান্নাতে অপেক্ষা করে আছে পবিত্র ধর্মযুদ্ধ জেহাদের শহীদ এর জন্য। ২০-২২-২৫-২৮ বছরের ওই যুবকটির আর কি তর সয়?
শহরের বাজারে বা রেল স্টেশনে বা কোথাও মেলায় অনেক ভিড়। হাজার হাজার লোক। ওদিকে ড্রাইভারের মস্তিষ্কের স্বপ্ন ও বাসনা নিয়ন্ত্রণ করছে তার হাত ও পা কে। হাতের মোচড়ে স্টিয়ারিং ঘুরল। পায়ের অ্যাকসিলেটরে পড়ল চাপ। বিশ টনের ট্রাক উঠে গেল ওই ভিড়ের উপর। মুহূর্তে রচিত হল জাহান্নাম। আর্তনাদ। ট্রাক ভিড় কে পিষে ছুটে চলল কোন বড় দেওয়ালে সজোরে ধাক্কা দেওয়ার জন্য। ওই ধাক্কাই ওই ড্রাইভার কে সোজা পৌঁছে দেবে তার বেহেশতে, তার জান্নাতে। সে জানে, যদি সে বেঁচে থাকে তাও ছুটে আসবে পুলিশ। চলবে গুলি। সে হাসিমুখে গুলি খেয়ে হবে শহীদ। সে তো শহীদ হতেই চায়। ছোটবেলা থেকে সেই শিক্ষা পেয়েছে। হুজুররা, মৌলবীরা সেই মহান করুণাময় আল্লাহর পাঠ পড়িয়েছেন। সে জেনেছে শিখেছে, জেহাদ করা কত পবিত্র। শহীদ হওয়া কত মহান। আল্লাহর পুরস্কার অপেক্ষা করছে সেই শহীদের জন্য। ইতিমধ্যে সে স্মার্ট ফোনের মাধ্যমে লুকিয়ে লুকিয়ে জান্নাতের বেশ কিছু দৃশ্য দেখেও নিয়েছে। সুতরাং …… যা হওয়ার তা হয়ে গেল। জেহাদ সম্পূর্ণ। ফরয পূর্ণ। মাদ্রাসার শিক্ষা সার্থক।
বলুন, কোন্ ইন্টেলিজেন্স ইনপুট দিয়ে, কোন্ সিকিউরিটি মেজার দিয়ে এই ঘটনা আটকাবেন?
তাই, এই সত্যটা বুঝতে হবে মানতে হবে যে, জেহাদের অবস্থান বন্দুকে নয়, বোমায় নয়, আর ডি এক্সে নয়। জেহাদের অবস্থান মনে ও মস্তিষ্কে। সেই মন তৈরী হয় ও মস্তিষ্ক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হয় ছোট বেলায়, টীন এজে। সেই সময়টায় তাকে পাঠানো হচ্ছে মাদ্রাসায়। পড়ানো হচ্ছে কোরান হাদীস, যাতে আছে ওই জান্নাতের বর্ণনা ও প্রতিশ্রুতি। মাদ্রাসা ছাড়াও চলবে খুতবা, ওয়াজ, ইজতেমা, জালসা, ধর্মসভা। সেখানেও একই প্রক্রিয়া। মস্তিষ্কে পোঁতা হবে জেহাদের বীজ। মনে গেঁথে দেওয়া হবে জান্নাতের স্বপ্ন। শুভ্র দাড়িওয়ালা হুজুররা দেবেন সেই জান্নাতের প্রতিশ্রুতি। এর প্রভাব তো অপ্রতিরোধ্য! ফ্রান্স আমেরিকা জার্মানির কোনো টেকনোলজি দিয়ে, ইজরায়েলের কোনো গোয়েন্দা সংস্থা দিয়ে, কোনো মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে, কোনো ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা দিয়ে একে রোখা যাবে না। রোখা যাবে না ভিড়ের উপর ওই বিশ টনি ট্রাক উঠে যাওয়া। এটাই সত্য।
এই সত্যকে স্বীকার করাই হল সন্ত্রাসবাদ ও সন্ত্রাসবাদী হামলা আটকানোর প্রথম পদক্ষেপ। এই প্রথম পদক্ষেপ না নিলে তার পরের যত পদক্ষেপই নেওয়া হোক না কেন, তা হবে সম্পূর্ণ নিষ্ফল, অর্থহীন।
তাই সন্ত্রাসবাদ কে যদি সত্যি রুখতে হয়, তাহলে শুরু করতে হবে দেশে মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থার সম্পূর্ণ বিলোপ সাধন দিয়ে। এবং কচি কোমলমতি শিশু ও বালকদের সমস্ত রকমের ইসলামী ধর্মসভায় অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করে। তারপরে চিন্তা করুন মেটাল ডিটেক্টর ও গুপ্ত ক্যামেরার কথা। সন্ত্রাসবাদের মূল উৎপাটন করতে হলে “নান্য পন্থা বিদ্যতে অয়নায়”।
শ্রী তপন ঘোষ