তাঁর দলের সাংসদদের ৯০ শতাংশ পার্লামেন্টে গিয়ে বসে থাকেন আর্থিক ভাতা আর প্রায় বিনি পয়সায় ক্যান্টিনের পাঁচ কোর্স লাঞ্চ ডিনারের জন্য। তাদের মুখে মোদী বিরোধী কোনও অভিযোগ শোনা যায় না পার্লামেন্টের অভ্যন্তরে। অথচ ভোটের সময় নেত্রীর মুখে অভিযোগের বান ছুটেছে। সবই প্রথামুখী। তিরের লক্ষ্য একজনই — প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র দামোদরদাস মোদী।
আজ্ঞে হ্যাঁ। বলছি তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আর তার দলের কথা। গত দু’মাস ধরে তিনি ঘ্যানঘেনে বর্ষার মতো কিছু অভিযোগ কপচে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে। একঝলক দেখে নেওয়া যাক। অভিযোগগুলো কেমন?
১। মোদী সাম্প্রদায়িক। গোটা দেশে তিনি দাঙ্গা বাধানোর চেষ্টা করছেন।
২। সমস্ত সংবাদমাধ্যমকে মোদী কিনে নিতে চাইছেন।
৫। সত্যি কথা বললে, সমালোচনা করলেই সিবিআই, ইডি-র ভয় দেখানো হচ্ছে। নিরাপরাধদের ধরে ধরে জেলে পোরা হচ্ছে।
৬। মিথ্যা খবর ছড়ানো হচ্ছে।
৭। ভয়ের পরিবেশ তৈরি করা হচ্ছে। দেশজুড়ে।
৮। গো-রক্ষার নামে, ধর্ম ও বর্ণের নামে গণপিটুনিতে কতজন মারা গেছে তার হিসেব নেই।
৯। কেন্দ্রীয় বাহিনী দেশরক্ষা ছেড়ে বিজেপি নেতাদের রক্ষা করতেই ব্যস্ত।
১০। বিজেপি, মোদী আমাকে ভয় পায়। তাই মানসিক রোগীর মতো আচরণ করছে।
১১। কোটি কোটি টাকা চার্টার্ড বিমানে করে রাজ্যে আনার চেষ্টা চলছে।
১২। পশ্চিবঙ্গকে অপমান করছে। বিজেপি, ইতিহাস বদলে দিতে চাইছে। কারণ মোদী চেঙ্গিস খান, হিটলার আর মুসোলিনির চেয়েও ভয়ঙ্কর। অভিযোগের পাশাপাশি তার কিছু দাবিও আছে। যেমন :
(১) রাজ্যে রাজ্যে সমান্তরাল প্রশাসন চালানো যাবে না।
(২) রাজ্য থেকে যত টাকা তুলবে তার ভাগ দিতে হবে। মায় আয়কর, কাস্টমস আর সেসের ভাগও।
(৩) রাজ্য থেকে টাকা তুলে কেন্দ্রের নামে প্রকল্প তৈরি করে প্রচার বন্ধ করতে হবে।
(৪) পোস্ট অফিসকে ব্যবহার করে কেন্দ্রীয় প্রচারপত্র পাঠানো যাবে না।
(৫) কৃষক ভাতা বা অন্যান্য ভাতা সরাসরি কারও অ্যাকাউন্টে পাঠানো বন্ধ করে রাজ্য সরকারের মাধ্যমে তা বিলি করতে হবে।
যে কোনও সচেতন মানুষ মাননীয়ার অভিযোগগুলি একটু তলিয়ে দেখলেই বুঝতে পারবেন, আসলে অভিযোগগুলি তার নিজেরই বিরুদ্ধে। যা তিনি অবচেতন মনে নিজের বিরুদ্ধেই ছুঁড়ছেন এবং জনগণও যে অভিযোগগুলি তুলছেন প্রতিদিন তারই বিরুদ্ধে। মোদী সাম্প্রদায়িক কীভাবে তা বলছেন না। কারণ সাম্প্রদায়িক মনোভাবের সব পরিচয়টুকুই তিনি নিজেই প্রতিষ্ঠা করেছেন হিজাব পরে নমাজ পড়ে, ধুলাগড়-সহ বিভিন্ন অঞ্চলে দলীয় সংখ্যালঘু নেতাদের দিয়ে দাঙ্গা বাঁধিয়ে, হিন্দু সংখ্যাগুরু জনগণকে দূরে ঠেলে বেআইনি সংখ্যালঘু অনুপ্রবেশকারীদের পশ্চিমবঙ্গে ঠাঁই দিয়ে। শুধুমাত্র ভোটব্যাঙ্ক তৈরির স্বার্থে। আবার বিজেপির সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নেমে কোথাও কোথাও অতি হিন্দু হয়ে গঙ্গাজল ছিটোচ্ছেন কিংবা ৬০ কেজি বেলকাঠ আর ৮ কেজি ঘি পুড়িয়ে ‘৪২-এ ৪২’-এর যজ্ঞ করছেন। তিনি মুসলমান অপরাধীদের পাশে দাঁড়ান বন্ধুর মতো। মুসলমান ধর্ষক যুবককে বিদেশে পালানোর সুযোগ দেন, আবার তারই বান্ধবীকে লোকসভায় নিজ দলের প্রার্থী করেন। এমনকী সাম্প্রদায়িকতার চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে গিয়ে পাক-সন্ত্রাসবাদীদেরও পরোক্ষে সমর্থন করেন। তাহলে সাম্প্রদায়িক কে? হ্যাঁ ঠিক কথা, মোদী স্বামী বিবেকানন্দের মতোই সগর্বে বলেন—“আমি হিন্দু’। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো ছদ্মবেশ ধরে মেকি মুসলমান সাজার চেষ্টা করেন না। হিজাব আর বোরখা পরলেই, লা-ইল্লাহ-রসুলাল্লা বললেই মুসলমান হওয়া যায় না সেটা তো এখন মুসলমানরা তাকে প্রকাশ্যে বলতে শুরু করেছেন। তিনিই তো ইমাম ভাতা দেন। পুরোহিত ভাতা, যাজক ভাতা দেন না। তিনিই তো সংখ্যালঘু ছাত্রদের জন্য বিশেষ স্কলারশিপ দেন। গরিব হিন্দু ছাত্র-ছাত্রীরা তো পায় না। তাহলে সাম্প্রদায়িক কে?
মোদী দেশদ্রোহী? কেন? তিনি কি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো সেনাবাহিনীর রক্ত নিয়ে ভোটের রাজনীতি করেছেন? বরং তিনি ওই রক্তের প্রতিশোধ তুলতে উড়িয়ে দিয়েছেন পাকিস্তানের জঙ্গি ঘাঁটি। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ তুলেছেন, সন্দেহ প্রকাশ করেছেন সেনাবাহিনীর সেই অসামান্য সাফল্য নিয়েই। তাহলে দেশদ্রোহী কে? মোদী? নাকি আপনি নিজেই মাননীয়া? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমলেই গোটা পশ্চিমবঙ্গ জিহাদিদের খোলামেলা আস্তানা হয়ে উঠেছে। বিশ্ব বাংলা এখন পাক ও বাংলাদেশি জঙ্গিদের মুক্ত বিশ্ব করিডোর। প্রতিটি মাদ্রাসা এক একটি জঙ্গি ঘাঁটি। প্রতি মাসে ৭০০ কোটি টাকা নাকি ঢুকছে চোরাপথে — বলছে এনফোর্সমেন্ট ডাইরেক্টরেট। গত সাত বছরের তৃণমূল রাজত্বে যত হিংসাত্মক ঘটনা ঘটেছে তার সিংহভাগের সঙ্গে জড়িত ছিল মুসলমান জনগণ। অস্বীকার করতে পারবেন মাননীয়া? মোদী নাকি সুপার ইমার্জেন্সি জারি করেছেন। যদি সত্যিই করতেন, মমতা ব্যানার্জির সরকার লাটে উঠত। বরং প্রকারান্তরে পশ্চিমবঙ্গেই স্বৈরাচার কায়েম করতে মুখ্যমন্ত্রী আপনি সদলে মস্তানরাজ প্রতিষ্ঠা করেছেন। এখানে বাক-স্বাধীনতা নেই। এখানে এক রাতেই জলজ্যান্ত একটা ছবি সিনেমা হল থেকে উধাও। বাংলাকে অপমান করছে বিজেপি? ইতিহাস বদলে দিতে চাইছে? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সত্যিই মাথাটা গেছে। তিনি যে মানসিক অবসাদের রোগী (এক অর্থে প্যারানয়েড) সে কথা তো মনোবিদ মাত্রেই বলে থাকেন। না, মোদী বা বিজেপি-নেতৃত্বের বিরুদ্ধে এমন রোগের লক্ষণ এখনও দেখা যায়নি। তাই তাদের বাংলাকে অপমান করা বা ইতিহাস বদলানোর কোনো প্রবণতাই দেখা যাচ্ছে না। আসলে মনে রাখবেন বিজেপির উত্থান একটা শিক্ষা, একটা সংস্কৃতির শিকড় ধরে— সেই রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ, সেই হিন্দু মহাসভা বা সেই জনসঙ্ঘ যে দলের আঁতুড়ঘর যারা ইতিহাসকে সম্মান জানাতে জানে। যারা হিন্দু সংস্কৃতিকে সম্মান জানাতে জানে। তৃণমূল কংগ্রেসের মতো হঠাৎ গজিয়ে ওঠা কোনও ভুঁইফোড় সংগঠন নয় যার কোনো সংস্কৃতি নেই, সংবিধানও নেই। ইতিহাসের পাতায় আঁচড় কাটছেন তো মুখ্যমন্ত্রীই। তা না হলে নন্দীগ্রাম আন্দোলন কীভাবে সূর্যোদয়ের আন্দোলন হয় আর সিঙ্গুর আন্দোলন কীভাবে কৃষক আন্দোলন হিসেবে স্কুলপাঠ্য বইয়ের সিলেবাসে ঠাঁই পায়? ৩৪ বছর বামশাসনের পর যিনি মাওবাদীদের ডানায় ভর করে ক্ষমতা দখল করে সেই মাওবাদীদেরই নিকেশ করতে পারেন, সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই বলছেন, মোদী নাকি চেঙ্গিজ খান। মোদী নাকি হিটলার, মুসোলিনি। আবার গব্বর সিংহও। সন্দেহ হয়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কখনও আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে দেখার চেনার চেষ্টা করেছেন কিনা। যদি এখনও পর্যন্ত না করে থাকেন, ভবিষ্যতেও করবেন না। কারণ, নিজেই ভয় পেয়ে যাবেন নিজেকে দেখে। কী কদাকার। কী ভয়াবহ! কী বীভৎস স্বৈরাচারী মুখশ্রী আপনার। সম্ভবত আপনিই বিশ্বের শ্রেষ্ঠ মহিলা স্বৈরতন্ত্রী যিনি নিঃশব্দে জনগণকে ডাইনির মতো গ্রাস করে তারপর নিমেষে নিধন করে দেন আত্মসন্তুষ্টির খেলায়। আবার দেখুন, মমতাদেবী নিজেই কেন্দ্রীয় প্রকল্পের নাম ইচ্ছেমতো পাল্টে দিচ্ছেন। স্বচ্ছ ভারত প্রকল্প হয়ে গেল মিশন নির্মল বাংলা। আবার নিজেই বলছেন, কেন্দ্রের সমান্তরাল প্রশাসন চালানো যাবে না। সংবিধান মেনে কেন্দ্র দরকার হলে সমান্তরাল প্রশাসন চালাবে। দরকার হলে সংবিধান মেনে রাজ্যের প্রাপ্য অর্থ আটকেও দেবে কেন্দ্র। টাকা খরচ করবেন, হিসাব দেবেন না, আর চিৎকার করবেন প্রাপ্য অর্থ দিচ্ছে না কেন্দ্র। কেন ম্যাচিং গ্রান্ট শব্দটা বোধহয় শোনেননি, শুনলেও বোঝার চেষ্টা করেননি মাননীয়া কখনও। যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোর অর্থটাই বোঝেন না উনি। তাই গলাবাজি করেন রাজ্য থেকে টাকা তুলে কেন্দ্রের নামে প্রকল্প করা যাবে না। পোস্ট অফিসকে কেন্দ্র ব্যবহার করতে পারবে না। এগুলো পাগলের প্রলাপ বলে এড়িয়ে গেলে ভুল হবে। কারণ মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী জানেন, এসব অভিযোগ কর্তৃপক্ষের নির্দেশে হাওয়া হয়ে যায়। এখানে খোলা হাওয়ার প্রবেশ নিষিদ্ধ। তাই কোনো প্রবন্ধ লিখলে, গান গাইলে, কবিতা লিখলে এমনকী ব্যঙ্গচিত্র আঁকলেও মাননীয়ার অনুপ্রেরণা আবশ্যিক। এ রাজ্যের সংবিধান গত সাত বছর ধরে সেটাই বলতে চেয়েছে। সংবাদমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ? এ ব্যাপারে আপনার চেয়ে দক্ষ বিশ্ব রাজনীতিতে কেউ আছেন? পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত মিডিয়া কর্তৃপক্ষকে চাবুক মেরে মেরে নিজের পায়ে আছড়ে ফেলেছেন। একদল সাংবাদিককে পাইয়ে দেওয়ার রাজনীতির শিকার করে বাকি সাংবাদিকদের ওপর শাসানি চালাচ্ছেন। প্রেস কার্ড পেতে গেলে অলিখিত শর্তে রাজি হতে হচ্ছে যে সরকার এবং শাসকদল বিরোধী হওয়া যাবে না। লিখতে হবে, বলতে হবে মোদীর বিরুদ্ধে। এমনকী সোশ্যাল মিডিয়ায় আপনার বা আপনার দলের বিরুদ্ধে কিছু পোস্ট করলেই চালান সোজা থানায়। এত ব্যাপক মিডিয়া সন্ত্রাস বোধহয় আই এস আই এসও করেনি কখনও। মোদী নাকি সিবিআই, ইডি-র ভয় দেখাচ্ছেন। ভয় দেখাবেন কেন? চোর চুরি করলে পুলিশ ধরবে, চিটফান্ডের টাকায় রাজনীতি আর নবাবি করলে সিবিআই, ইডি ধরবে— এটাই তো আইন। মাননীয়ার আপত্তি কেন? ধরা পড়বেন, সেই ভয়ে? আসলে, ‘ভয়ের পরিবেশ’টা আপনিই ছড়াচ্ছেন মমতাদেবী। আর সেজন্যেই সিবিআই অফিসারদের ওপর চড়াও হতে নির্দেশ দেন কলকাতা পুলিশকে। চিট ফান্ড অপরাধে অভিযুক্ত পুলিশ কমিশনার, আপনার পাপোশ মুখ্যসচিব (যিনি ম্যাডাম নামে এত বেশি দুঃস্বপ্ন দেখেন যে সুপ্রিম কোর্টে দাঁড়িয়ে মাননীয় প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈকেও ‘ম্যাডাম’ বলে সম্বোধন করে ফেলেন)-কে সঙ্গে নিয়ে বসে পড়েন রাজপথের ধর্নায় ? আপনার প্রিয় পোষ্য অনুব্রত মণ্ডলকে (যিনি অক্সিজেনের অভাবে ভোগেন) দিয়ে চড়াম চড়াম ভোটের বাদ্যি, গুড়-বাতাসা জল, নকুলদানা আর পাঁচনের বাড়ি খাওয়ানোর ভয় দেখান ভোটারদের?
মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, গোরক্ষার নামে নাকি গণপিটুনি হচ্ছে উত্তরপ্রদেশে। জেনে রাখুন, আপনার মিথ্যা প্রচারের জন্যই গোটা উত্তরপ্রদেশে সপা-বসপা জোট ধাক্কা খাচ্ছে। জয়ধ্বনি উঠেছে মোদীর। মিথ্যা বলতে বলতে আর খেই রাখতে পারছেন না ভদ্রমহিলা। তাই কেন্দ্রীয় বাহিনীর রুট মার্চ দেখে ভয় পেয়ে কাঁপতে কাঁপতে বলে ফেলছেন— কেন্দ্রীয় বাহিনী নাকি বিজেপি নেতাদের রক্ষা করতেই ব্যস্ত। আজ্ঞে জেনে রাখুন সেন্ট্রাল ফোর্স আপনার কলকাতা পুলিশ নয় ম্যাডাম।
টাকা আনছে বিজেপি? ভোট কিনতে? আসলে ওই ছকটা যে তৃণমূলের তার রেকর্ড আশা করি কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাবাহিনীর কাছে আছে। বিদেশি অর্থ মুসলমান জঙ্গিসংগঠনের মাধ্যমে এ রাজ্যে ঢুকছে এমন ইঙ্গিত ই ডি আগেই দিয়েছে। এবার প্রমাণ হবে— ওই অর্থের গন্তব্য কোনদিকে? কালীঘাটের দিকে নয়তো? প্রমাণ করার ক্ষমতা বা যোগ্যতা তার এবং তার দলের কোনোদিনই হবে না। কিন্তু তিনি জানেন, গলাবাজিটা করে গেলে ভোটটা কিছুটা পাওয়া যাবে। কারণ মিথ্যা কথা যদি প্রতিদিন প্রচারে রাখা যায়, তাহলে কিছু মানুষ তা সত্য বলেই ধরে নেবেন।
এই চালাকি এবং এই ভাঁওতাবাজির খেলা খেলতে খেলতে আজ তিনি উলঙ্গ হয়ে গেছেন। মানুষের কাছে তাঁর স্বরূপ আজ প্রকাশ্যে প্রতীয়মান। এমনকী মুসলমান জনগোষ্ঠীও তাকে চিনে ফেলেছেন, ভোটবাক্স ভরানোটাই ছিল প্রকৃত উদ্দেশ্য, হিজাব পরে, বোরখা পরে নমাজ পাঠটা ছিল নাটক।
আজ যখন গোটা ভারতবর্ষের দরজায় সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচন কড়া নাড়ছে, তখন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর এই মিথ্যা প্রচার সর্বস্ব রাজনীতির মুখোশটা ছিঁড়ে দেওয়া দরকার। তার জন্য সবাইকে মোদী সমর্থক হতে হবে না। তার জন্য সবাইকে বিজেপিকে ভোট দিতে হবে না। অন্তত, সত্যের স্বার্থে প্রতিবাদটা হোক। ঠিক যেভাবে প্রতিবাদ করেছেন চিত্রপরিচালক অনীক দত্ত। যেমন প্রতিবাদী ভূমিকা নিয়েছেন শিক্ষকতার চাকরির সফল দাবিদাররা মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে। যেমন করে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। কার্টুন চিত্র, ব্যঙ্গচিত্র, হাসির কবিতার খোরাক হচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। শয়ে শয়ে অম্বিকেশ মহাপাত্র জন্ম নিয়েছে বাংলার ঘরে ঘরে। পাড়ায় পাড়ায় গজিয়ে উঠেছে ‘আমরা আক্রান্ত’-র মতো প্রতিবাদী সংগঠন। ঘরে ঘরে শোনা যাচ্ছে পল্লব কীর্তনিয়ার মতো প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর। তারা খসছে আকাশ থেকে প্রতিদিন একটি একটি করে। প্রতিবাদের প্রতীক হয়ে।
এবার অন্তত প্রকৃত সত্যটা উঠে আসুক। ইতিহাসের পাতা থেকে প্রবঞ্চকের ইতিহাস মুছে দিয়ে লেখা হোক সত্যের অধ্যায়। কারণ পশ্চিমবঙ্গের সংস্কৃতিতে মিথ্যার আশ্রয় নেই। অন্যায়ের আশ্রয় নেই। মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী, আপনার শমন এবার হাজির হতে চলেছে সত্যের জয় পতাকা নিয়ে। আর বেশি দেরি নেই নতুন সূর্যোদয়ের। সে সূর্যের রঙটা চেনেন তো? বোধহয় না। কারণ ভোরে ওঠার অভ্যাস তো আপনার নেই।
শৌভিক রায়