আইনজীবী রজত দে (Rajat Dey) হত্যাকাণ্ডে সাজা ঘোষণা করল বারাসত আদালত। সাক্ষ্যপ্রমাণ খতিয়ে দেখে দোষী অনিন্দিতা পালকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। যদিও রজতের স্ত্রীর সর্বোচ্চ সাজার দাবি জানিয়েছিলেন নিহত আইনজীবীর পরিবার। তবে আদালতের রায়ে খুশি তাঁরা।
গত ২০১৮ সালের ২৪ নভেম্বর রাতে নিউটাউনের ডিবি ব্লকের ফ্ল্যাটে আইনজীবী রজত দে’র অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়। আইনজীবীর বাবা দাবি করেন, এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাঁর আইনজীবী পুত্রবধূ অনিন্দিতা পাল (Anindita Paul)। সে-ই রজতকে পরিকল্পনামাফিক খুন করিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন ওই বৃদ্ধ। যদিও অনিন্দিতা সেই দাবি খারিজ করে দেয়। প্রথমে জানায়, স্বামীর মৃত্যু নিছকই দুর্ঘটনা। পরে আবারও নিজের বয়ান বদল করে। জানায়, তার স্বামী রজত আত্মঘাতী হয়েছেন। তদন্তে নেমে পুলিশ অনিন্দিতাকে গ্রেপ্তার করে। হাই কোর্টে তার জামিনের আবেদন খারিজ হয়ে যায়। ঘটনার জল গড়ায় সর্বোচ্চ আদালতেও। সুপ্রিম কোর্ট থেকেও জামিন পায় অনিন্দিতা। তাই আপাতত জেলের বাইরেই ছিল সে।
এদিকে, মূল মামলাটি বারাসত আদালতে (Barasat Court) চলছিল। একাধিক সাক্ষ্যপ্রমাণ খতিয়ে দেখা হয়। সোমবার মামলার শুনানি চলাকালীন পুলিশকে তীব্র ভর্ৎসনা করেন বিচারক। তারপরই তিনি জানিয়ে দেন, দুর্ঘটনা কিংবা আত্মহত্যা নয়। বিভিন্ন তথ্যপ্রযুক্তির সাহায্য নিয়ে রজতকে খুন করা হয়েছিল। সেই ঘটনায় রজতের স্ত্রী অনিন্দিতাকেই দোষী সাব্যস্ত করেন বিচারক। অনিন্দিতার চরম শাস্তির দাবি জানিয়েছিলেন নিহতের পরিজনেরা। বুধবার সকালে বারাসত আদালতের বাইরেও প্রচুর মানুষ সেই একই দাবি জানান। তবে বিচারক সমস্ত সাক্ষ্যপ্রমাণ খতিয়ে দেখে অনিন্দিতার যাবজ্জীবন সাজার কথাই ঘোষণা করেন। যেহেতু অনিন্দিতার সন্তান অনেকটাই ছোট, সেকথা মাথায় রেখে এই রায় দেওয়া হয়েছে। রায় শুনে এদিনও এজলাসে ফের কান্নায় ভেঙে পড়ে অনিন্দিতা। সে বলে, “আমাকে ফাঁসানো হয়েছে। শরীরের শেষ রক্তবিন্দু পর্যন্ত বিশ্বাস করব ফাঁসানো হয়েছে।”