বিজেপি ইমামভাতার বিরোধী নয়, কিন্তু পূজারিভাতাও দেওয়া হোক৷ দাবি বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহর৷ আলিপুরদুয়ারে জনসভার মঞ্চে দাঁড়িয়ে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ শুধু এই কথা বলেই শান্ত হননি৷ রাজ্য সরকার জোর করে উর্দু ভাষা চাপিয়ে দেওয়ার চক্রান্ত করছে বলে বিস্ফোরক অভিযোগ করেছে অমিত৷
ওই মন্তব্যের কিছুক্ষণ আগেই অমিত বলেছিলেন, রাজ্যে দুর্গাপুজো, সরস্বতী পুজো করতে অনুমতি পাওয়া যায়নি৷ বিজেপি রাজ্যে ক্ষমতায় এলে রাজ্যের কোণায় কোণায় দুর্গা পুজো হবে৷ সেই কারণেই লোকসভা নির্বাচনে রাজ্য থেকে ২৩টি আসনে বিজেপিকে নরেন্দ্র মোদীর হাত শক্ত করার কথা বলেছেন অমিত শাহ৷
রাজনৈতিক মহল বলছে, অমিত শাহ যে দাবি করেছেন, তা নতুন কিছু নয়৷ ইমাম ভাতার বিরোধিতা না করলেও তা যে হিন্দু-মুসলমান বিভেদ সৃষ্টি করছে, তা মনে করে বিজেপি৷ ইমাম ভাতা বা দুর্গা পুজোর অনুদান চালু করে রাজ্যে হিন্দু-মুসলমানের বিভেদ সৃষ্টি করেছে রাজ্য সরকার৷ অভিযোগ, রাজ্য সরকার ইমাম ভাতা চালু করেছিল মুসলমান ভোট পাওয়ার জন্য৷ আবার হিন্দু ভোট কমে যাওয়ার ভয়ে দুর্গা পুজোর অনুদান চালু করেছে৷ ধর্মের রাজনীতি পশ্চিমবঙ্গে শুরু করেছে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস৷ তবে বেশিদিন তা করতে পারা যাবে না৷ মানুষ ভাঁওতাবাজি ধরে ফেলেছে৷ বিজেপির দাবি, এই সরকার ইমামদের ভাতা দিতে শুরু করল৷ কিন্তু ২ হাজার টাকায় কী হয়? ইমামরা সমাজের মাথা৷ তাঁরা তাদের সমাজকে বলবে সরকার পক্ষে ভোট দিন৷ এবার পুরহিতরাও ক্ষেপে গিয়েছেন৷ তাঁরা বলছেন তাদের কেন ভাতা দেওয়া হবে না৷
বিজেপি সূত্রে যা খবর, লোকসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যের প্রায় ৩০ শতাংশ মুসলমান জনতাকে উল্লেখযোগ্য বার্তা দিতে চায় বিজেপি৷ মমতার সংখ্যালঘু তোষণকেই রাজনৈতিক হাতিয়ার বানাতে চায় গেরুয়া শিবির৷ শাসক দলের তোষণ যে শুধু ভোট পাওয়ার ছক – তা মুসলমান সমাজকে বোঝাতে মরিয়া বিজেপি৷ মুসলমান ইমান ভাতা দিয়ে মুসলমান সমাজের সার্বিক উন্নয়ন হল কই? শিক্ষা বা সাস্থ্যের উন্নতি হয়নি৷ আর দুর্গা পুজোতে অনুদান দিয়ে কার কী লাভ হয়েছে৷ কমিটিগুলি কোটি কোটি পুজোর জন্য খরচ করে৷ অনুদানের ভিক্ষা কী কেউ চাইতে গিয়েছিল?
অমিত শাহের নির্দেশ মতো, সম্প্রতি বাংলার মুসলমান মহিলাদের বিজেপি বোঝাতে চেষ্টা করেছে তিন তালাক কোনও রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নয়৷ এটি একটি সামাজিক আন্দোলন৷ সারা দেশে তিন তালাক আন্দোলন ইতিহাস সৃষ্টি করে চলেছে৷ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে এই আন্দোলন যে গতি পেয়েছে তা থামবে না – রাজ্য বিজেপির সংখ্যালঘু মোর্চার প্রশিক্ষণ শিবির থেকে সেই বার্তাও উঠে এসেছে৷ উল্লেখ করা যেতে পারে, সুপ্রিম কোর্টের রায়েও কাজ হয়নি৷
রিপোর্ট অনুযায়ী, সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরও সারা দেশে প্রায় ৭৭টি তিন তালাকের ঘটনা ঘটেছে৷ সংসদে বিল আনা ছাড়া মোদী সরকারের কাছে আর কোনো রাস্তা ছিল না৷ তিন তালাক আন্দোলনের পীঠস্থান এই রাজ্যই৷ হাওড়ার সাহসী যুবতি ইসরত জাহান তিন তালাকের অন্যতম মামলাকারী৷ বর্তমানে তিনি রাজ্য বিজেপির মহিলা মোর্চার অন্যতম সদস্য৷ তিন তালাক নিয়ে তাঁর লড়াইয়ের কথা তিনি আম জনতাকে বলেন৷