মাত্র সাতদিনের মাথাতেই আবার রাজ্য সফরে এসে জয় শ্রীরাম প্রসঙ্গ টেনে মমতাকে আক্রমণ করলেন দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা বিজেপির প্রাক্তন সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। তিনি বলেন তুষ্টিকরণের রাজনীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদের প্রতীক হচ্ছে জয় শ্রীরাম ধ্বনি। এই জয় শ্রীরাম ধ্বনি দিতে দিতে আমরা বাড়িতে বাড়িতে পৌঁছে যাব। তিনি প্রশ্ন তোলেন জয় শ্রীরাম ধ্বনি দেওয়া কি অপমানের?
এর আগে নেতাজি জন্মজয়ন্তী পালন অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়মন্ত্রী বক্তব্য রাখতে উঠতেই জয় শ্রীরাম ধ্বনি ওঠে দর্শকাসনে থেকে। জয় শ্রীরাম স্লোগান শুনে মুখ্যমন্ত্রী ও মঞ্চ থেকেই সরাসরি তোপ দাগেন। তিনি বলেন সরকারি অনুষ্ঠানের ডিগনিটি থাকা উচিত এটা কোনো রাজনৈতিক অনুষ্ঠান নয়। আমাকে আমন্ত্রণ করায় প্রধানমন্ত্রী ও সংস্কৃতি মন্ত্রকের কাছে কৃতজ্ঞ। কিন্তু কাউকে আমন্ত্রণ করে তাকে অপমান করা উচিত নয়। তাই প্রতিবাদ স্বরূপ আমি কিছু বলছি না। এরপর বক্তব্য না রেখেই নিজের আসনে ফিরে যান মুখ্যমন্ত্রী।” আজ দক্ষিণ ২৪ পরগনায় জনসভায় বক্তব্য রাখার সময় অমিত শাহ কটাক্ষ করে বলেন জয়শ্রী রাম বলা মানে কি কাউকে অপমান করা? তিনি বলেন জয় শ্রীরাম ধ্বনি দিতে দিতেই আমরা বাড়ি বাড়ি যাব। এই জয়শ্রী রাম ধ্বনি তোষণের রাজনীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদের প্রতীক।
শাহ বলেন বিজেপি এই রাজ্যে পরিবর্তন আনবে। এই দুর্গাপুজো স্বরস্বতী পুজো করতে বাধা দেওয়া হয়। বিজেপি ক্ষমতায় এলে রাজ্যের মানুষ নির্দ্ধিধায় সমস্ত পুজো করবেন।
এদিন রাজ্য সফরে এসে দক্ষিণ কলকাতায় ভারত সেবাশ্রম সংঘে যান অমিত শাহ। সেখানে আধঘন্টা থাকেন। আরতী করেন স্বামী প্রণবানন্দজী মহারাজের ছবিতে। সেখানে তিনি বলেন শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে স্বামী প্রণবানন্দজীর এক গভীর যোগ ছিল। যে দেশ তৈরীর পরিকল্পনা তিনি করেছিলেন বর্তমান ভারত সরকারের লক্ষ্য হবে সেই বার্তা দেশের সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া। সমাজসেবায় সংঘের ভূমিকার কথা উল্লেখ করেন তিনি। এরপর তিনি গঙ্গাসাগরে আসেন । সেখানে গিয়ে তিনি বলেন, ” আজ আমার জীবনের সৌভাগ্যের দিন। কারণ আজ মা গঙ্গা যেখানে সাগরে মিলিত হয় সেখানে এসে আপনাদের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। গঙ্গাসাগরের এই পবিত্র স্থানে উপস্থিত হতে পারে আমি ভাগ্যবান। এইজন্যই কথায় বলে সব তীর্থ বার বার গঙ্গাসাগর একবার।” গঙ্গার পৌরাণিক মাহাত্ম্য বর্ণনা করেন অমিত শাহ। তিনি বলেন পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি সরকার তৈরি হলে এখানেও “নমামি গঙ্গে” প্রকল্পের কাজ হবে। আমি সুনিশ্চিত করব পশ্চিমবঙ্গে সরকার তৈরীর পর পর্যটন সংক্রান্ত সমস্ত কেন্দ্রীয় প্রকল্প যাতে এখানে কার্যকর হয়। বিশ্বের কাছে এই স্থানের মাহাত্ম্য তুলে ধরা হবে। এদিন তিনি কপিলমুনির আশ্রমে আরতী করেন। বিকেলে তিনি অরবিন্দ আশ্রমেও যান।
এবারের সফরে অমিত শাহ রাজ্যের একাধিক ধর্মীয় স্থানে যান। যদিও এযাবৎকালে যতজন বিজেপি নেতা রাজার সফরে এসেছেন সকলেই কোনো না কোনো মন্দিরে পুজো দিয়েছেন। নিজেদের রাজনৈতিক প্রচারের সাথে ধর্মীয় দিকটিকেও উল্লেখযোগ্য ভাবে ধরে রেখেছেন তারা। একই সঙ্গে জয় শ্রী রাম ধ্বনি নিয়েও নিজের অবস্থানে আরো কড়া হয়েছেন তারা, যা অমিত শাহের আজকের বক্তব্য থেকে স্পষ্ট।