ইংরাজি আর বাংলা সালের সঙ্গে ছন্দ মিলিয়ে স্লোগান দিচ্ছেন দিদি। প্রতিটি জনসভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, “দু’হাজার উনিশ-বিজেপি ফিনিশ আর চোদ্দশো ছাব্বিশ, তৃণমূল বিয়াল্লিশে বিয়াল্লিশ।” কিন্তু সোমবার সকালে কলকাতায় সাংবাদিক সম্মেলন থেকে বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে জানিয়ে দিলেন, প্রথম দু’দফায় যা ভোট হয়েছে, তাতে এটা স্পষ্ট, মমতা দিদি হারছেনই হারছেন। কেউ ঠেকাতে পারবে না।

এ দিন চারটি জনসভা রয়েছে অমিত শাহের। তার আগে নিউটাউনের একটি পাঁচতারা হোটেলে সাংবাদিক সম্মেলন করে অমিত শাহ বলেন, “দ্বিতীয় দফায় দেখা গিয়েছে মানুষ এককাট্টা হয়ে বুথে যাচ্ছেন। আর তৃণমূলের গুন্ডারা পালাচ্ছে।” তাঁর কথায়, “মানুষের শরীরী ভাষাই বলে দিচ্ছে বাংলায় বদল হতে চলেছে।”

উত্তরবঙ্গ থেকে নির্বাচনী প্রচার শুরু করেছেন মমতা। প্রতিদিন প্রায় দুটো-তিনটে করে জনসভা করছেন। পাশপাশি গত তিন দিন ধরে দেখা যাচ্ছে মিটিং শেষ করেই পদযাত্রা করছেন দিদি। এ দিন বিজেপি সভাপতি কটাক্ষের সুরে বলেন, “মমতার মিটিং-এ ভিড় হচ্ছে না। কিন্তু মিডিয়া দেখাতে পারছে না। তাদের মঞ্চের ছবি দেখাতে হচ্ছে।”

গত কয়েকমাস ধরে বিজেপি-র একাধিক কর্মসূচি বাতিল হয়েছে। কখনও তা সভা স্থলের অনুমতি না মেলায়, কখনও বা হেলিকপ্টার নামবার অনুমতি না থাকায়। এ দিন সেই প্রসঙ্গ টেনে অমিত বলেন, “মমতা আমদের কর্মসূচিতে অনুমতি দিচ্ছেন না। আর জনতা মমতার কর্মসূচিতে অনুমতি দিচ্ছে না।”

নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে তৃণমূলের সংঘাত নিয়েও এ দিন তোপ দাগেন বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতি। ইতিমধ্যেই একাধিকবার কমিশনের দফতরে পত্রাঘাত করেছে বাংলার শাসক দল। ডেরেক ও ব্রায়েন নির্বাচন কমিশনকে তোপ দেগে বলেছেন ‘নিকম্মা কমিশন’। তারপর বিশেষ পর্যবেক্ষক অজয় নায়েক ১৫ বছর আগের বিহারের সঙ্গে এখনকার বাংলার তুলনা করায় সেই সংঘাত আরও চরমে পৌঁছয়। মমতা রবিবার গয়েশপুরের সভায় অভিযোগের সুরে বলেন, “বিজেপি দিল্লি থেকে লোক পাঠিয়ে বাংলায় প্যারালাল সরকার চালাচ্ছে।” এ দিন সাংবাদিক সম্মেলনে অমিত শাহ বলেন, “যে ভোটে জিতে মমতা বাংলার সরকারে এসেছিলেন, সে বার কত বদলি হয়েছিল। তখনও কি তাহলে প্যারালাল সরকার চলেছিল? নাকি এখন হালে পানি না পেয়ে এ সব বলছেন।”

এ দিনও বাংলাকে সারদা, নারদা আর সিন্ডিকেটের আঁতুড়ঘর বলে তোপ দাগেন শাহ।

যদিও তৃণমূল অমিতের এ সব কথায় অমল দিচ্ছে না। দলের এক শীর্ষ নেতা বলেন, “এটাই মমতা ম্যাজিক। যে, একজন মহিলাকে রুখতে প্রধানমন্ত্রী, অমিত শাহ, যোগী, সবাইকে বাইরে থেকে ভাড়া করে আনতে হচ্ছে। কিন্তু তাতেও বিশেষ লাভ হবে না। গোল্লা হাতে নিয়ে গণনা কেন্দ্র থেকে বেরোতে হবে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.