মঙ্গলবার রাতেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেছিলেন, বাইরে থেকে লোক এনে গণ্ডগোল করার চেষ্টা করেছে বিজেপি। বিদ্যাসাগর কলেজে থাকা বিদ্যাসাগরের ২০০ বছরের পুরনো মূর্তি ভেঙেছে বিজেপি। বুধবার সকালে মমতার এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে তৃণমূলের উপরেই দোষ চাপালেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। দিল্লিতে দলীয় কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করে শাহ বলেন, “কলেজের ভিতরে তৃণমূল কর্মীরাই ছিল। বিজেপির কেউ ভিতরে ছিল না। তাহলে মূর্তি কে ভেঙেছে? তৃণমূল নিজেরাই বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভেঙে এখন বিজেপির উপর দোষ চাপাচ্ছে।”
বুধবার দিল্লিতে দলীয় কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করেন অমিত শাহ। এ দিন তাঁর হাতে ছিল মঙ্গলবারের সংঘর্ষের বেশ কিছু ছবি। এই ছবি দেখিয়ে তিনি সাংবাদিকদের সামনে বলেন, “বিজেপির বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হচ্ছে বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভেঙেছে। কিন্তু কলেজের ভিতরে কারা ছিল? মূর্তি ছিল ঘরের ভিতর। তা হলে তালা খুলল কে? কলেজের গেটও বন্ধ ছিল। বিজেপি কর্মীরা বাইরে ছিলেন। তৃণমূল নিজেরাই মূর্তি ভেঙে বিজেপির উপর দোষ চাপাচ্ছে।” এমনকী এই ঘটনার জন্য যদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিরপেক্ষ কমিটির মাধ্যমে তদন্ত করাতে চান, তাহলে তিনি করাতে পারেন বলেও বন্তব্য অমিত শাহর।
মঙ্গলবারের ঘটনার জন্য অমিত শাহের বিরুদ্ধেও দায়ের হয়েছে অভিযোগ। এ দিন সাংবাদিক সম্মেলন থেকে এফআইআর-এর প্রসঙ্গও তুলে এনেছেন বিজেপি সভাপতি। তিনি বলেন, “আমার বিরুদ্ধে এফআইআর করা হয়েছে। এফআইআরকে আমরা ভয় পাই না। বিজেপি কর্মীরা এতে ভয় পায় না। তৃণমূল ভয় পেয়ে এ সব করছে।” এমনকী এ দিনের রোড শোয়ের সময় তাঁর উপরেই হামলা করা হয়েছিল বলে অভিযোগ করেছেন বিজেপি সভাপতি। তিনি বলেন, “কয়েকদিন আগে মমতা বলেছিলেন, বদলা নেবেন। এ সব তারই ফল। আমার রোড শোয়ের আগেই আমার কাট আউট ভাঙা হয়েছে। শো চলাকালীন আমাদের মিছিলে পেট্রল বোমা ছোঁড়া হয়েছে। ওদের উদ্দেশ্য ছিল আমাদের মিছিলে হামলা চালানো। সিআরপিএফ ছিল বলেই আমি বেঁচে ফিরতে পেরেছি।”
ভোট ঘোষণার পর থেকেই প্রতি পদে তৃণমূল বিজেপিকে রোখার জন্য সন্ত্রাসের আশ্রয় নিচ্ছে, এমনই অভিযোগ করেছেন অমিত শাহ। তিনি বলেন, “বাংলায় ছ’দফা ভোটেই সন্ত্রাস হয়েছে। বাংলা ছাড়া আর কোথাও এরকম হয়নি। তার মানে তৃণমূল প্রশাসনকে ব্যবহার করছে বিজেপিকে আটকানোর জন্য। ভোট চলাকালীন ও ভোটের আগে আমাদের ৬০ জন কর্মী নিহত হয়েছেন।” কিন্তু এত কিছুর পরেও নির্বাচন কমিশন চুপ বলেই অভিযোগ করেছেন অমিত শাহ।
তবে এসব করে যে বিজেপিকে আটকে রাখা যাবে না, এ দিনের সাংবাদিক সম্মেলনে সে কথা পরিষ্কার করে দেন শাহ। তিনি বলেন, “যত হিংসার রাস্তা তৈরি করবেন, ততই ভারতীয় জনতা পার্টির জিত পাকা হবে। ৭ দফার পর দেশে ৩০০-র বেশি আসন জিতে সরকার গড়বে বিজেপি। বাংলায় ২৩-এর বেশি আসন জিতবে বিজেপি।”