কেন্দ্রীয় বাহিনী ও রাজ্য পুলিশের মধ্যে যুদ্ধ লেগে যেতে পারে। এমনই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বর্ধমান দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী। বর্ধমানের খাক্কর সাহেবের দড়গা থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের কাছে এমনই আশঙ্কা প্রকাশ করেন সুরিন্দর সিং আলুওয়ালিয়া।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, প্রথম দফার ভোটের চিত্র যদি পর্যালোচনা করা যায় তাহলে দেখা গেছে কোচবিহারে মূলত যে বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী ছিল না সেখানে সমস্যা তৈরি হয়েছে। আর সেই কারণেই তৃণমূল কংগ্রেস ছাড়া বাকি সব দল সব বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবি জানিয়েছে। যদিও ভোট ঘোষণার পর থেকেই কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন বিরোধীরা। কিন্তু কমিশন ৫০ শতাংশ বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। ফলশ্রুতিতে দেখা যায় রাজ্য পুলিশ থাকা বুথেই, ইভিএম ভাঙা, ভোট লুঠ, ভোট দিতে বাধা দেওয়ার মত অভিযোগ ওঠে।
অন্যদিকে পুনর্নির্বাচনের দাবিতে যখন কোচবিহারের বিজেপি প্রার্থী নিশীথ প্রামানিক জেলা শাসকের দপ্তরে ধর্নায় বসেন তখন তাঁকে তুলে দেওয়াকে ঘিরে কেন্দ্রীয় বাহিনী ও রাজ্য পুলিশের মধ্যে মতো বিরোধ থেকে ঘটনা ধস্তাধস্তি পর্যন্ত গড়ায়।
যদিও কেন্দ্র ও রাজ্য পুলিশের এহেন বৈরি সম্পর্ক নতুন নয়। এর আগেও রাজীব কুমার মামলায় সিবিআই কর্তা ও রাজ্য পুলিশের খন্ডযুদ্ধ দেখেছে রাজ্যবাসী।
কিন্তু ভোটের ময়দানেও কেন্দ্রীয় বাহিনী ও রাজ্য পুলিশ যযুধান শত্রুতে পরিণত হতে পারে বলে যে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিজেপি প্রার্থী আলুওয়ালিয়া তা সত্যিই ভাবনার অতীত নয়। অন্তত সাম্প্রতিক অতীতের একের পর এক যে ঘটনা ঘটেছে তার কেন্দ্রীয় বাহিনী ও রাজ্য পুলিশের মধ্যে যুদ্ধের ইঙ্গিত যে দিচ্ছে না তা জোর দিয়ে বলা যাবে না।
ভোট ঘোষণার পর থেকেই প্রতি বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবিতে সরব হয়েছিল বিরোধীরা। একই দাবিতে বিক্ষোভ দেখিয়েছে ভোটকর্মীরাও। এমনকি দুর্গাপুরে প্রায় ১৬ হাজার মানুষ যারা পুর নির্বাচনে ভোট দিতে পারেন নি তারা লোকসভা ভোটে নিজেদের ভোট দেওয়ার অধিকার সুরক্ষিত রাখতে প্রশাসন ও কমিশনের দ্বারা হয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। তারাও প্রতি বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী রাখার দাবি জানিয়েছেন। অর্থাৎ রাজনৈতিক দল থেকে শুরু করে আমার ভোটার,ভোট কর্মী সকলেই কেন্দ্রীয় বাহিনী চাইছে নিজেদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ সুরক্ষিত করতে। কিন্তু একমাত্র রাজ্যের শাসক দল চেয়েছে রাজ্য পুলিশ। আর এখানেই বিরোধীরা প্রতিবাদে গর্জে উঠেছেন। তাদের অভিযোগ মানুষ যাতে ভোট দিতে না পারে তার জন্য শাসকদলের ক্যাডাররা রাজ্য পুলিশকে ব্যবহার করছে।
বিজেপির প্রার্থী আলুওয়ালিয়া বলেন, কমিশন ফেয়ার ইলেকশন করাতে চায়,কিন্তু রাজ্য সরকার যেভাবে নিজের পুলিশ বাহিনী দিয়ে লুট আরম্ভ করেছে,সেটা কোনওভাবেই কোনও দলের পক্ষে বরদাস্ত করা সম্ভব নয়। তৃণমূল সরকার ইভিএম মেশিনকে বিশ্বাস করে না। তারা ভোটের পরম্পরাকে মানে না। রাজ্য সরকার ভয় পেয়েছে। মানুষ যদি ভোট দেওয়ার সুযোগ পায় তাহলে তৃণমূল সরকার আর বাঁচবে না।”
এদিকে বিরোধীদের দাবি মেনে কমিশন দ্বিতীয় দফার ভোটে আরও বেশি সেনা পাঠানোর কথা জানিয়েছে। সম্ভবত দ্বিতীয় দফায় প্রতি বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে এবার দেখার দ্বিতীয় দফার ভোটে আলুওয়ালিয়ার কথাই প্রাসঙ্গিক হয় কিনা।