রতুয়ার দেবীপুরে বন্যা পরিদর্শন করতে গিয়ে বানভাসিদের তুমুল বিক্ষোভের মুখে পড়লেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী জাভেদ খান এবং গোলাম রব্বানি। বুধবার দুপুরে রতুয়া ১ ব্লকের দেবীপুর এলাকায় যান দুর্যোগ মোকাবিলা দফতরের মন্ত্রী জাভেদ খান এবং পঞ্চায়েত ও ভূমি রাজস্ব দফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রী গোলাম রব্বানি। সঙ্গে ছিলেন জেলাশাসক কৌশিক ভট্টাচার্য, পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া, মালদা জেলা পরিষদের সভাধিপতি গৌরচন্দ্র মণ্ডল, এবং তৃণমূলের জেলা সভাপতি মৌসুম নুর সহ প্রশাসনের পদস্থ আধিকারিকরা ।
এলাকায় পৌঁছতেই দুই মন্ত্রীর গাড়ির ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন শতাধিক বানভাসি মানুষ। তাঁদের অভিযোগ, প্রায় দশ দিন ধরে গোটা এলাকা ফুলহার নদীর জলে ডুবে রয়েছে। অথচ ত্রাণ মিলছে না।পানীয় জলের সংকট দেখা দিয়েছে। খাবারের অভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ছে ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা। গবাদি পশুদের খাবারের অভাব দেখা দিয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় পুলিশ প্রশাসনের কর্তারা দুই মন্ত্রীকে এলাকা থেকে সরিয়ে নিয়ে যান। বিক্ষোভের জেরে ওই গ্রামে বন্যা পরিস্থিতি আর পরিদর্শন করতে পারেননি তাঁরা।
পরে জাভেদ খান বলেন, ‘‘কারা কী কারণে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন, তা বলতে পারব না। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশেই মালদায় বন্যা কবলিত বেশ কয়েকটি এলাকা পরিদর্শন করেছি। পরিস্থিতি নিয়ে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে। এর বেশি আর কিছু বলতে পারব না।’’
এ দিন সকালে রাজ্যের দুই মন্ত্রী প্রথমে কালিয়াচক ব্লকের হামিদপুর এলাকায় যান। তারপরে মানিকচক ব্লকের বেশ কয়েকটি বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন। দুপুরেদেবীপুর এলাকায় পরিস্থিতি দেখতে গিয়ে কয়েক হাজার বানভাসি মানুষের বিক্ষোভের মুখে পড়েন। তবে মালদা জেলা পরিষদের সভাধিপতি গৌড়চন্দ্র মণ্ডলের দাবি, ‘‘মানুষ বিভিন্ন অভাব-অভিযোগের কথা বলেছে। কিন্তু বিক্ষোভ হয়নি। অভাব অভিযোগের কথা যে কেউ বলতেই পারে। বানভাসিদের নিরাপদ স্থানে আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে।শিশুখাদ্য বা গবাদি পশুদের খাদ্য, কিছুরই কোনও সমস্যা নেই।’’
অস্থায়ী রিংবাঁধ ভেঙে দশ দিন আগেই ফুলহার নদীর জল ঢুকে প্লাবিত হয়েছে রতুয়া থানার দেবীপুর গ্রামপঞ্চায়েতের কুড়িটির বেশি গ্রাম। রতুয়া, কালিয়াচক,মানিকচক ব্লক মিলিয়ে এক লক্ষেরও বেশি মানুষ বন্যার কবলে পড়েছেন।
তৃণমূলের জেলা সভানেত্রী মৌসুম নুর বলেন, ‘‘এ দিন মন্ত্রীরা বিভিন্ন এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শন করেছেন। আমিও তাঁদের সঙ্গে ছিলাম। কোথাও কোনও সমস্যা নেই। নিয়মিত ত্রাণ বিলি হচ্ছে। প্রশাসন ভাল কাজ করছে। সমস্ত রকম ভাবেই রাজ্য সরকার বানভাসিদের পাশে রয়েছে।’’