হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করেছেন। পরাজয় হয়েছে। তবুও হার মানেননি। ময়দানে থেকে লক্ষ্যে অবিচল। দলের সেবা সপ্তাহ কর্মসূচিতে শহরের বেসরকারী হাসপাতালের সামনে নিয়মিত রোগীর আত্মীয়দের খাবার বিলি করে চলেছেন দুর্গাপুরের বিজেপি নেতা দীপ্তাংশু চৌধুরী।
মাসখানেক আগেই রাজ্য বিধানসভার ভোট মিটেছে। রাজ্যজুড়ে গেরুয়া হাওয়ার মধ্যে তৃণমূল অভুতপুর্ব সাফল্য পেয়েছে। রাজ্য দখল করতে না পারলেও ৭৭ আসনে জয়ী হয়েছে বিজেপি। দুর্গাপুরের দুটি আসনের মধ্যে একটি বিজেপির দখলে আসে। অপরটি দুর্গাপুর পুর্বে তৃণমূলের সঙ্গে বিজেপির হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়। শেষপর্যন্ত জয়ী হয় তৃণমূল। ওই আসনে প্রায় সাড়ে তিন হাজার ভোটে পরাজিত হয় দুর্গাপুর পুর্বের বিজেপি প্রার্থী কর্নেল দীপ্তাংশু চৌধুরী। আশানুরূপ সাফল্য না হওয়ায় প্রশ্ন উঠতে শুরু করে বিজেপির অন্দরে। ২০১৯ লোকসভা ভোটের ফলাফলের নিরিখে দুর্গাপুর পুর্বে তৃণমূল ৬৩৮৬৪ ভোট পেয়েছিল। এবং বিজেপি পপয়েছিল ৯০৪৫৫ ভোট। প্রায় ৩০ হাজার ভোটে এগিয়ে ছিল। দু বছরের ব্যাবধানে বিজেপির ভোট তলানিতে যাওয়ার কারন নিয়ে বিস্তর জলঘোলা শুরু হয়েছে।
দু বছরেই ৩০ হাজার ভোট কেন মুখ ফিরিয়ে নিল? প্রশ্ন উঠেছে দলের অন্দরে। রাজনৈতিক মহলের ধারনা, দলবদলুদের প্রার্থী করায় বহু বিজেপিকর্মী অসন্তুষ্ট ছিল। যার দরুন ময়দানে সেভাবে নামেনি কর্মীরা।
যদিও দুর্গাপুর পুর্বের প্রার্থীর প্রচারে সেভাবে কোন রাজ্য ও প্রদেশ নেতৃত্ব আসেনি। বড় সভা দুর অস্ত, কোন রোড-শো কিম্বা পথসভাও করতে হাইপ্রোফাইল কেউ আসেনি। কিন্তু
পরাজয়ের পরও ময়দান ছাড়েনি দীপ্তাংশু চৌধুরী। ফলাফলের পরদিন থেকে অত্যাচারিত দলীয় কর্মীদের খাবারের ব্যাবস্থা করেছেন। খবর পাওয়া মাত্রই ছুটে গেছেন আক্রান্তদের বাড়ি। আবারও শুরু হয়েছে লকডাউন। বন্ধ দোকানপাট। বিপাকে পড়েছে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীর পরিবার। ওইসব অসহায় রোগীর আত্মীয়দের মধ্যে রান্না করা খাবার তুলে দেওয়া শুরু করলেন দীপ্তাংশু চৌধুরী।
তিনি বলেন, “কয়েকদিন ধরে সেবাসপ্তাহ পালন করছে দল। তাই সেবা কাজের জন্য রোগীর আত্মীয়দের পাশে থাকা জরুরী মনে করি। লকডাউনে খাবার দোকানও বন্ধ। রোগীর আত্মীয়রা সমস্যা পড়েছে। তাই তাদের হাতে দুপুরে ভরপেট খাবার তুলে দেওয়ার চেষ্টা করেছি। ভাত ডাল, সব্জি। তাতেই খুশী রোগীর আত্মীয়রা। আগামী কয়েকদিন কাঁকসার জঙ্গলমহলে যাবো। সেখানের গ্রামীণ হাসপাতাল ও তার আশপাশে গ্রামে মানুষদের মধ্যে রান্না করা খাবার তুলে দেওয়া হবে।”
তিনি বলেন,” লড়াইয়ের ময়দানে হার জিত থাকবে। জয়ী না হলেও, শিল্পশহরের মানুষ আশীর্বাদ করেছে। মানুষের পাশে আগেও ছিলাম, আগামীদিনেও থাকব।” দীপ্তাংশুবাবুর এই মনোভাবে অনুপ্রাণিত শিল্পশহরের বিজেপিকর্মীরা।