করোনার টিকা গ্রহণের ২৪ ঘন্টার মধ্যে মৃত্যু প্রৌঢ়ের, অস্বস্তিতে স্বাস্থ্য দফতর

করোনার টিকা নেওয়ার চব্বিশ ঘন্টার মধ্যেই মৃত্যু হল এক প্রৌঢ়ের। মৃতের পরিবারের অভিযোগ কোভিড ভ্যাক্সিন নেওয়ার জেরেই মৃত্যু হয়েছে তাঁর।

মৃত ওই ব্যক্তির নাম কৃষ্ণ দত্ত(৬৫)। জলপাইগুড়ি জেলার ধূপগুড়ি শহরের বাসিন্দা তিনি। পেশায় ব্যবসায়ী ওই ব্যক্তির মৃত্যুর ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে স্বাস্থ্য দফতরের অন্দরে। তবে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে দেহটি ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হবে বলে জানা গিয়েছে।

জানা গিয়েছে, জলপাইগুড়ি জেলার ধূপগুড়ি পুরসভা এলাকার বাসিন্দা পেশায় ব্যাবসায়ী কৃষ্ণ দত্ত (৬৫) সোমবার ধূপগুড়ি গ্রামীণ হাসপাতাল থেকে কোভিড ভ্যাক্সিন (কোভিশিল্ড) নিয়েছিলেন। এরপর তিনি নিয়ম অনুযায়ী হাসপাতালের পর্যবেক্ষণেই ছিলেন।

এই বিষয়ে কৃষ্ণ দত্তের ভাইপো গোবিন্দ দত্তের অভিযোগ, তাঁর কাকা সোমবার ধূপগুড়ি হাসপাতালে করোনার টিকা নেওয়ার পর বাড়ি ফিরে এসে স্বাভাবিক ভাবেইখাওয়া দাওয়া করেন। বিকেলে দোকানেও যান তিনি। এরপর সন্ধ্যার দিক থেকে তাঁর বেশ কয়েকবার বমি হয়। পরে রাতে বাড়ি ফিরে খাওয়া দাওয়া সেরে শুয়ে পড়েন। মঙ্গলবার ভোররাতে তাঁর প্রচন্ড শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। এরপর তাঁকে ধূপগুড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। কোভিড ভ্যাক্সিন নেওয়ার জেরেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

ঘটনায় করোনা বিষয়ক উত্তরবঙ্গের অফিসার অন স্পেশাল ডিউটি ডাক্তার সুশান্ত রায় বলেন কোভিড ভ্যাক্সিন একটি সেফ ভ্যাক্সিন। এই ভ্যাক্সিন নিয়ে এমন অভিযোগ আগে শোনা যায়নি। মৃত্যুর আসল কারন জানতে দেহের ময়নাতদন্ত করা হচ্ছে। রিপোর্ট আসলে মৃত্যুর আসল কারন জানা যাবে বলে জানান তিনি। পাশাপাশি তিনি আরও বলেন এই ভ্যাক্সিন ছাড়া বিকল্প কিছু নেই। তিনি ও তার পরিবার এই ভ্যাক্সিন নিয়েছেন। তাই সবাইকে ভ্যাক্সিন নেবার অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।

অভিযোগ পেয়ে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে ধূপগুড়ি থানার পুলিশ। দেহ ময়নাতদন্তর জন্য পাঠানো হয়েছে।

উল্লেখ্য, সম্পূর্ণ ক্লিনিকাল ট্রায়াল হওয়ার আগেই কোভ্যাক্সিনকে ছাড়পত্র দিয়েছিল কেন্দ্র। জানুয়ারি থেকে এর ডোজ নেওয়াও শুরু হয়ে গিয়েছে। এবার এই ভ্যাকসিনকে সম্পূর্ণ নিরাপদ ঘোষণা করল ল্যানসেট। এও জানানো হয়েছে, এই ভ্যাকসিনের কোনও গুরুতর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই।

ল্যানসেটের তরফে জানানো হয়েছে দ্বিতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালের পর কোনও টিকা কার্যকরী কিনা তা বলা যায় না। কিন্তু হায়দরাবাদের ভারত বায়োটেকের এই ভ্যাকসিন সম্পূর্ণ নিরাপদ। আমেরিকার ইউনিভার্সিটি অউ মেরিল্যান্ড আপার চেসাপিক হেল্থের ইনফেক্সাস ডিজিজের প্রধান ফাহিম ইউনাস জানিয়েছেন, এটি অবশ্যই সুখবর। টুইটারে তিনি লিখেছেন, ভারত বায়োটেকের কোভ্যাক্সিনের দ্বিতীয় ফেজের ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। আর সেই প্রকাশিত ফলাফল সুখবর বয়ে এনেছে। তবে ল্যানসেটে জানানো হয়েছে দ্বিতীয় ফেজের ফলাফল এই টিকার কার্যকারিতা সম্পর্কে সম্পূর্ণ নিশ্চিত করতে পারে না। এর জন্য তৃতীয় দফার পরীক্ষা প্রয়োজন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.