ঘূর্ণিঝড় ইয়াস প্রায় ঘাড়ের কাছে। মৌসম ভবনের বুলেটিন বলছে, আজ বুধবার দুপুরের আগেই বেলা ১০-১১টা নাগাদ ল্যান্ডফল হতে পারে সাইক্লোনের। প্রবল বেগে বইবে ঝড়, অতিভারী বৃষ্টিতে ডুবতে পারে দক্ষিণবঙ্গ। আগাম আশঙ্কায় কলকাতার আটটি উড়ালপুলে যান চলাচল বন্ধের নির্দেশিকা দিল কলকাতা পুলিশ। এদিন সকাল থেকেই বন্ধ থাকছে মা উড়ালপুল, তারাতলা, গার্ডেনরিচ, পার্কস্ট্রিট, উল্টোডাঙা, চিংড়িঘাটা, গড়িয়াহাট এবং এজেসি বোস রোড উড়ালপুল।
এমনিতেই লকডাউনের কারণে মানুষ ও যানবাহনের গতিবিধি দিনভর অনেকটাই কম এ শহরে, তার ওপর ঝড়বৃষ্টির দাপটে আরওই সকলে গৃহবন্দি। কিন্তু কোনও রকম দুর্ঘটনার সুযোগ রাখতে না চেয়ে আগাম ব্যবস্থা নিচ্ছে প্রশাসন।
নবান্ন এবং উপান্নে আগে থেকেই খোলা হয়েছে দু’টি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। সেখান থেকে রাতভর পরিস্থিতির দিকে নজর রেখেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে। গতকাল, মঙ্গলবার আলিপুর আবহাওয়া দফতর হয়ে নবান্নের কন্ট্রোল রুমে যান রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ও। সাইক্লোন মোকাবিলায় রাজ্যের প্রস্তুতি নিয়ে প্রশংসা করেন তিনি।
অন্যদিকে ধামড়া বন্দর থেকে অর্থাৎ যেখানে ল্যান্ডফল করার কথা ইয়াসের, সেখান থেকে আর মাত্র ৪৫ কিলোমিটার দূরে রয়েছে ইয়াস। প্রবল শক্তি ও গতি নিয়ে ছুটে আসছে স্থলভাগের দিকে। ল্যান্ডফলের সময় ঝড়ের গতিবেগ থাকবে ঘণ্টায় ১৩০-১৪০ কিলোমিটার, বেড়ে হতে পারে ১৫৫ কিলোমিটার (গাস্টিং)।
অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের দাপট বেশি দেখা যাবে ওড়িশার চার জেলায়—কেন্দ্রপাড়া, ভদ্রক, জগৎসিংপুর ও বালাসোর। এই চার জেলায় লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে। নিচু এলাকাগুলি থেকে মানুষজনকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ওড়িশার উপকূলবর্তী জেলাগুলি থেকে এখনও অবধি ৮১ হাজারের বেশি মানুষকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাছাড়া ওড়িশার ময়ূরভঞ্জ, জয়পুর, কটকেও ঘূর্ণিঝড়ের সতর্কতা জারি করা হয়েছে। ওড়িশায় প্রবল ঝড়বৃষ্টি চলছে একটানা।
হাওয়া অফিস বলছে সাইক্লোনটি বাংলায় সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলবে পূর্ব মেদিনীপুরে। ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে দুই মেদিনীপুর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগণায়। ভারী বৃষ্টি হবে কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, উত্তর চব্বিশ পরগনার বিভিন্ন এলাকায়।