পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পুলিশের কৃতিত্বে ঝিকুড়খালিতে দুই মহিলাকে পুড়িয়ে মারার রহস্য উদ্‌ঘাটন ও ধৃত দুই অভিযুক্ত

পূর্ব মেদিনীপুরের হলদিয়ার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ঝিকুড়খালি এলাকায় হলদী নদীপাড়ে গত ১৮ফেব্রুয়ারি দুই মানুষকে আগুনে দাউদাউ করে পুড়তে দেখে আতঙ্কে শিউরে উঠেছিল স্থানীয় এলাকার মানুষজন। জল ছিটিয়ে আগুন নেভানোর পর দুটি দেহাংশ, পেষাকের কিছু অংশ এবং মাথার চুলের বেঁচে যাওয়া টুকরো দেখে পুলিশ অনুমান করেছিল হতভাগ্য দুজনেই মহিলা। তাঁদের পরিচয় উদ্ধারে মরিয়া হয়ে ঝাঁপায় দুর্গাচক থানার পুলিশ। পুলিশি তদন্তের পাশাপাশি স্যোশাল মিডিয়াতেও দুই মৃত মহিলার পোষাক ও চুলের বর্ণনা দিয়ে পরিচয় সন্ধানের উদ্যোগ নেওয়া হয় জেলা পুলিশের তরফ থেকে। আর কেল্লাফতে হয়ে যায় তাতেই। মাত্র কয়েকদিনের চেষ্টাতেই এক্কেবারে অন্ধকারে থাকা ঘটনার পর্দাফাঁস করতে সচেষ্ট হল পুলিশ। ১৮ তারিখ বিকেলে ঘটনার প্রায় ৪৭ ঘন্টারও সময় পর ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করে দুই সদস্যের এক ফরেনসিক দল। এরপরেই বিভিন্ন সূত্রে পুলিশ জানতে পারে এই দুই মহিলা হলেন নিউ ব্যারাকপুরের বাসিন্দা রিয়া দে (২২) ও তাঁর মা রমা দে (৪০)। হলদিয়ার ঠিকাদার শেখ সাদ্দাম হোসেনের সঙ্গে প্রনয়ের সম্পর্ক ছিল রিয়ার। সাদ্দামই পরিকল্পনা করে মা ও মেয়েকে ডেকে এনেছিল হলদিয়ায়।

তদন্তে নেমে পুলিশ সাদ্দাম ও তাঁর এক সঙ্গী শেখ মনজুরকে গ্রেফতার করে। ধৃতদের রবিবার হলদিয়া মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক তাঁদের ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।‌


রবিবার সন্ধ্যায় পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ইন্দিরা মুখার্জী সাংবাদিক সম্মেলনে জানান, ওই দুষ্কৃতীরা মা ও মেয়েকে জ্যান্ত পুড়িয়ে দিয়েছিল বলেই ময়না তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে অন্ততঃ এমনটা জানা গেছে। তবে মা ও মেয়ে নিউ ব্যারাকপুর থেকে কবে কি কারনে হলদিয়ায় এলেন তা এখনও পরিষ্কার নয়। জ্যান্ত অবস্থায় ঝিকুড়খালী নিয়ে গিয়ে পোড়ানোর আগে আচ্ছন্ন করেছিল কিনা, নাকি তাঁদের মুখ বেঁধে গায়ে আগুন দিল তাও এখন পরিস্কার নয়। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

অপরাধীদের সঙ্গে শাসক দল সুস্পষ্ট যোগাযোগ দেখা যাচ্ছে, এই সাদ্দাম লোকসভা ভোটেতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর হাতে ধরা পরেছি। এইসব কারণে অনেকেই অপরাধীদের সঠিক শাস্তি হবে কি’না সেই ব্যাপারে সন্দিহান। দিনেদিনে শাসকদলের ছত্রছায়ায় থাকা মুসলিম সমাজের মধ্যে যে ভাবে অপরাধ প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে সেই ব্যাপার নিয়ে পুলিশ ও সাধারণ মানুষ যথেষ্ট উদ্বিগ্ন।

তথ্য সূত্র মেদিনীপুর বার্তা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.