সেই জানুয়ারি মাস থেকেই বাংলার ভোটের এপিসেন্টার হয়ে উঠেছিল নন্দীগ্রাম। ১৮ জানুয়ারি তেখালির মাঠে দিদি জনসভা করতে গিয়ে বলেছিলেন, আমি যদি এবার একটু নন্দীগ্রামে দাঁড়াই কেমন হয়!
তারপর দেখা যায় নিজের কেন্দ্র নন্দীগ্রামেই শুভেন্দু অধিকারীকে দাঁড় করিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহরা। আর তাতেই বাংলার ভোটের সবচেয়ে ওজনদার কেন্দ্র হয়ে উঠেছে হলদি নদীর তীরের এই জনপদ। গণনায় বাকি কেন্দ্রের থেকেও নন্দীগ্রামেই ফোকাস রয়েছে বেশির ভাগ মানুষের। তাতে দেখা গেল, দ্বিতীয় রাউন্ডে নন্দীগ্রামের যুদ্ধে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পিছিয়ে দিয়ে ৮,২০৬ ভোটে এগিয়ে রয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী।
অন্যদিকে পোস্টাল ব্যালট গণনার পর ডোমজুড়ে বিজেপি প্রার্থী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় এগিয়ে থাকলেও প্রথম রাউন্ডের পর তিনি পিছিয়ে গিয়েছেন। রাজীবকে পিছনে ফেলে ডোমজুড়ে এগিয়ে রয়েছেন কল্যাণেন্দু ঘোষ। সিঙ্গুরের লড়াইয়ে বিজেপি প্রার্থী রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যকে পিছিয়ে দিয়ে প্রায় ১৮০০ ভোটে এগিয়ে তৃণমূলের বেচারাম মান্না।
যদিও এটা একবারেই গণনার প্রাথমিক ট্রেন্ড। কোথাও প্রথম, কোথাও দ্বিতীয় রাউন্ডের গণনা হয়েছে। এখনও নন্দীগ্রামের দুটি ব্লকের তিন শতাধিক বুথের ইভিএম গণনা বাকি। ডোমজুড় ও সিঙ্গুরেও তাই। তবে প্রাথমিক ট্রেন্ড শেষ পর্যন্ত বজায় থাকে নাকি নন্দীগ্রাম, ডোমজুড়, সিঙ্গুরে ভোট গণনা টানটান হয় এখন সেটাই দেখার।
নন্দীগ্রামের ভোট ছিল ১ এপ্রিল। তবে ১০ মার্চ বিরুলিয়া বাজারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পায়ে আঘাত পাওয়ার পর থেকেই নন্দীগ্রামের লড়াই আরও সরগরম হয়ে ওঠে। দিদির অভিযোগ ছিল, তাঁকে চক্রান্ত করে ধাক্কা মারা হয়েছে। পাল্টা বিজেপির বক্তব্য ছিল সবটাই স্টান্ট, সহানুভূতি কুড়োনোর চেষ্টা। তারপর দেখা গিয়েছে মাঝের ১৯ দিন নন্দীগ্রামে প্রচারেই যাননি দিদি। হুইল চেয়ারে বসে রাজ্যের অন্যত্র চষে বেরিয়েছেন। অন্য দিকে শুভেন্দু সারা প্রচার পর্বে নন্দীগ্রামের মাটি কামড়ে পড়ে ছিলেন।
অনেকের বক্তব্য, এবার নন্দীগ্রামের ভোট হয়েছে চড়া দাগের মেরুকরণে। সেই মেরুকরণে ফাইনাল হুইসেল বাজার পর শেষ হাসি কে হাসবেন সেদিকে নজর সকলের। কিন্তু আপাতত সকাল সাড়ে পৌনে দশটার খবর, নন্দীগ্রামের মহাযুদ্ধে এগিয়ে শুভেন্দু। পিছিয়ে মমতা।