ডার্বির আগে স্বস্তি ইস্টবেঙ্গল শিবিরে। দলে যোগ দিলেন প্রতিশ্রুতিমান হিমাংশু জাংরা। চোট সারিয়ে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ব্রাজিলীয় এলিয়ান্দ্রো ডস স্যান্টোসও।
দীপাবলিতে এটিকে-মোহনবাগানের কোচ জুয়ান ফেরান্দো ফুটবলারদের বিশ্রাম দিয়েছিলেন। কিন্তু ডার্বির আগে একেবারেই সময় নষ্ট করতে রাজি নন স্টিভন কনস্ট্যান্টাইন। সোমবার সকালে বৃষ্টির মধ্যেই যুবভারতীর অনুশীলন মাঠে প্রস্তুতিতে নেমে পড়েছিলেন লাল-হলুদ কোচ। ভারতীয় দলের অনূর্ধ্ব-২০ এএফসি এশিয়ান কাপের যোগ্যতা অর্জন পর্বের ম্যাচ খেলতে কুয়েত গিয়েছিলেন হিমাংশু। লাল-হলুদ জার্সি পরে আইএসএলের একটি ম্যাচেও খেলেননি তিনি। যদিও তা নিয়ে খুব একটা চিন্তিত নন স্টিভন। কারণ, ডুরান্ড কাপে মুম্বই সিটি এফসি-র বিরুদ্ধে ৪-৩ গোলে জয়ের ম্যাচে হিমাংশুকে পরিবর্ত হিসেবে নামিয়ে দেখে নিয়েছিলেন স্টিভন। তবে ডার্বিতে প্রতিশ্রুতিমান এই ফরোয়ার্ডকে তিনি শুরু থেকেই খেলাবেন কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়। আরও কয়েক দিন দেখেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন তিনি।
ডুরান্ড কাপের ডার্বিতে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে ভাল খেলেও ইস্টবেঙ্গলকে হারতে হয়েছিল সুমিত পাসির আত্মঘাতী গোলে। এখন পরিস্থিতি অনেকটাই বদলে গিয়েছে। আইএসএলে আগের ম্যাচে নর্থ ইস্ট ইউনাইটেড এফসিকে ৩-১ গোলে হারিয়ে চনমনে ইস্টবেঙ্গলের ফুটবলাররা। চিন্তা ছিল এলিয়ান্দ্রোকে নিয়েই। চোটের কারণে তাঁকে গুয়াহাটিতে নিয়ে যাওয়া হয়নি। ব্রাজিলীয় তারকা পুরোদমেই অনুশীলন করছেন। চোট সারিয়ে সুস্থ হয়ে ওঠা আর এক ব্রাজিলীয় অ্যালেক্স লিমাকে নর্থ ইস্টের বিরুদ্ধে শুরু থেকে খেলানোর ঝুঁকি নেননি স্টিভন। ডার্বিতে তাঁকে প্রথম একাদশে রেখেই দল গড়ার সম্ভাবনা প্রবল। দেখা যেতে পারে অনিকেত যাদবকেও।
২০১৭ সালে অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপে ভারতীয় দলের অন্যতম সদস্য অনিকেত এই মরসুমেই হায়দরাবাদ এফসি থেকে ইস্টবেঙ্গলে এসেছেন। কিন্তু সম্প্রতি তাঁকে রিজ়ার্ভ দলে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন স্টিভন। গুয়াহাটিতেও নিয়ে যাননি। লাল-হলুদ কোচের যুক্তি ছিল, অনিকেতকে বেশি খেলার সুযোগ দিতেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি। ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরা তা মানতে রাজি নন। গণমাধ্যমে ক্ষোভ উগরে দেন। অনিকেত ফের মূল দলের সঙ্গেই ডার্বির প্রস্তুতিতে নেমে পড়েছেন।
নর্থ ইস্টের বিরুদ্ধে শেষ মুহূর্তে রক্ষণের ভুলে গোল খেয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। যদিও ম্যাচের পরে স্টিভন দাবি করেছিলেন, তিনি একেবারেই চিন্তিত নন। বলেছিলেন, ‘‘গোল খাওয়াটা নিছকই দুর্ঘটনা। নিজেদের ভুলেই গোল খেয়েছি। আসলে ম্যাচের শেষ দিকে ছেলেরা একটু অসতর্ক হয়ে পড়েছিল। শেষ দিকে ক্লান্ত হয়ে পড়ায় ওদের মনঃসংযোগেও ব্যাঘাত ঘটেছিল। এই নিয়ে আর বেশি ভাবছি না।’’ রক্ষণ নিয়ে স্টিভনের চিন্তা যে রয়েছে, তা অনুশীলনেই স্পষ্ট। আলাদা করে কথা বলছেন ডিফেন্ডারদের সঙ্গে। তাঁদের ভুল-ত্রুটি শুধরে দিচ্ছেন।
রক্ষণ নিয়ে স্বস্তিতে নেই মোহনবাগান কোচও। কেরলের বিরুদ্ধে ৫-২ গোলে জিতলেও খুব একটা ছন্দে ছিলেন না ডিফেন্ডাররা। রক্ষণের ভুলেই তিনটি গোল খেতে হয়েছিল। গত কয়েক দিন ধরে রুদ্ধদ্বার অনুশীলনে এই ভুলত্রুটি শুধরে নিতেই মরিয়া ছিলেন জুয়ান।
এ দিকে ডার্বি নিয়ে উন্মাদনা ক্রমশ বাড়ছে। আজ, মঙ্গলবার সকাল ১১টা থেকে যুবভারতীর এক ও চার নম্বর গেট থেকে ‘অফলাইন’ টিকিট বিক্রি শুরু হবে। চলবে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত। মোহনবাগান গ্যালারির টিকিট দেওয়া হবে চার নম্বর গেটের কাউন্টার থেকে। ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরা টিকিট কাটতে পারবেন যুবভারতীর এক নম্বর গেটের কাউন্টার থেকে।