যশস্বীর যশে সপ্তম জয় রাজস্থানের, আইপিএলে আবার হারল হার্দিকের মুম্বই

মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে আইপিএলের ১০০তম ম্যাচ সুখের হল না হার্দিক পাণ্ড্যের। বৃষ্টি বিঘ্নিত ম্যাচে রাজস্থান রয়্যালসের কাছে তাঁর দল হেরে গেল ৮ উইকেটে। সবাইকে অবাক করে টস জিতে প্রথমে ব্যাট নিয়েছিলেন হার্দিক। মুম্বই করে ৯ উইকেটে ১৭৯ রান। জবাবে রাজস্থান ১৮.৪ ওভারে ১ উইকেটে করল ১৮৩ রান। সঞ্জু স্যামসনের দলের জয়ের দুই নায়ক যশস্বী জয়সওয়াল এবং সন্দীপ শর্মা। ৯ উইকেটে ম্যাচ জিতে আইপিএলের প্লেঅফের দিকে আরও এক পা এগিয়ে গেল প্রতিযোগিতার প্রথম বারের চ্যাম্পিয়নেরা।

১৮০ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা একটু ধীরে করেন যশস্বী এবং জস বাটলার। তবে ইনিংস যত এগিয়েছে তত রান তোলার গতি বাড়িয়েছেন রাজস্থানের ব্যাটারেরা। সঞ্জুদের ইনিংসের ৬ ওভারের পর বৃষ্টি নামে। ৪০ মিনিট বন্ধ থাকে খেলা। তাতেও রাজস্থানের ইনিংসে বিঘ্ন ঘটেনি। বাটলার ২৫ বলে ৩৫ রান করে পীযূষ চাওলার বলে আউট হয়ে গেলেও ২২ গজের অন্য প্রান্তে অবিচল ছিলেন যশস্বী। নিজের এবং দলের ইনিংসকে মসৃণ ভাবে এগিয়ে নিয়ে গেলেন তিনি। যশপ্রীত বুমরাকেও রেয়াত করলেন না তরুণ ওপেনার। এ বারের আইপিএলে তেমন রান পাচ্ছিলেন না। প্রশ্ন উঠছিল তাঁর ফর্ম নিয়ে। সোমবার সমালোচকদের জবাব দিল তাঁর অনবদ্য শতরানের ইনিংস। ৫৯ বলে শতরান পূর্ণ করলেন যশস্বী। শেষ পর্যন্ত তিনি অপরাজিত থাকলেন ৬০ বলে ১০৪ রানে। মারলেন ৯টি চার এবং ৭টি ছক্কা। মাঠের সব দিকে শট নিলেন।

যশস্বীকে যোগ্য সঙ্গত করলেন রাজস্থান অধিনায়ক সঞ্জুও। তিনিও সাবলীল ভাবে ব্যাট করলেন। মুম্বইয়ের বোলারেরা রাজস্থানের ব্যাটারদের তেমন কোনও সমস্যায় ফেলতেই পারেননি গোটা ইনিংসে। সঞ্জুর ব্যাট থেকে এল ২৮ বলে ৩৮ রানের ঝকঝকে ইনিংস। মারলেন ২টি করে চার এবং ছয়। মুম্বইয়ের বোলারদের মধ্যে পীযূষ ৩৩ রানে ১ উইকেট পেলেন। জয়পুরের ২২ গজে সাধারণ দেখাল বুমরা, হার্দিকদের।

প্রথমে জয়পুরের ২২ গজে সুবিধা করতে পারেননি মুম্বইয়ের উপরের দিকের ব্যাটারেরা। সন্দীপ এবং ট্রেন্ট বোল্টের দাপটের সামনে ২০ রানে ৩ উইকেট হারায় মুম্বই। তার পরেও মুম্বইকে লড়াই করার মতো জায়গায় পৌঁছে দেন দুই তরুণ তিলক বর্মা এবং নেহাল ওয়াধেরা। পর পর আউট হয়ে যান রোহিত শর্মা (৬), ঈশান কিশন (শূন্য) এবং সূর্যকুমার যাদব (১০)। বড় রান পেলেন না পাঁচ নম্বরে নামা মহম্মদ নবিও। আফগানিস্তানের অলরাউন্ডার করলেন ১৭ বলে ২৩ রান। মারলেন ২টি চার এবং ১টি ছয়। ৫২ রানে ৪ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর মুম্বইয়ের ইনিংসের হাল ধরেন তিলক এবং নেহাল। ছয় নম্বরে ব্যাট করতে নামা নেহালের ব্যাট থেকে এল ২৪ বলে ৪৯ রানের ইনিংস। মারলেন ৩টি চার এবং ৪টি ছয়। মাত্র ১ রানের জন্য অর্ধশতরান হাতছাড়া করলেও বোল্টের বলে আউট হওয়ার আগে তিলকের সঙ্গে ৯৯ রানের গুরুত্বপূর্ণ জুটি গড়ে তোলেন তিনি।

রাজস্থানের বিরুদ্ধে মুম্বইয়ের ইনিংসকে ভরসা দিলেন মূলত তিলক। চার নম্বরে নেমে ২২ গজের এক প্রান্ত আগলে রেখেছিলেন শেষ পর্যন্ত। তিনি করলেন ৪৫ বলে ৬৫ রান। তাঁর ইনিংসে রয়েছে ৫টি চার এবং ৩টি ছক্কা। রান পেলেন না অধিনায়ক হার্দিকও (১০)। মুম্বইয়ের শেষ দিকের ব্যাটারেরাও উল্লেখযোগ্য কিছু করতে পারেননি।

এই ম্যাচে নবিকে আউট করে বিশ্বের প্রথম ক্রিকেটার হিসাবে আইপিএলে ২০০ উইকেট নেওয়ার নজির গড়লেন যুজবেন্দ্র চহাল। ৪৮ রান খরচ করে একটিই উইকেট পেলেন লেগ স্পিনার। সফলতম সন্দীপ ১৮ রানে ৫ উইকেট নিলেন। রাজস্থানের অন্য বোলারদের মধ্যে বোল্ট ৩২ রানে ২ উইকেট, আবেশ খান ৪৬ রান দিয়ে ১ উইকেট নিলেন। এ দিনও উইকেট পেলেন না রবিচন্দ্রন অশ্বিন। বোল্ট এ দিন টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ২৫০ উইকেট পূর্ণ করলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.