শুক্রবারের ক্রমাগত বৃষ্টির দরুন অ্যাজেস বোলের স্যাঁতসেঁতে বাইশ গজ, ডিউক বলের মুভমেন্ট, কিউয়িদের পাঁচ পেসার। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালে(WTC Final) ভারতের ব্যাটিং লাইন আপকে কড়া চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিতে এই তিনটি বিষয় যথেষ্ট ছিল। আলটিমেট টেস্টে(The Ultimate Test) টস হেরে কোহলির দলের ‘বিরাট’ ব্যাটিং যেন বাঘের মুখে। বিলেতের মাটিতে ওপেনার হিসেবে আবার রোহিত-গিল জুটির অভিষেক। কী হয় দেখার অপেক্ষায় তর সইছিল না অনুরাগীদের।
কিন্তু শনিবার প্রথম ঘন্টার ব্যাটিং দেখে রোহিত-গিল জুটিকে একবারও মনে হয়নি তারা জুটি হিসেবে ইংল্যান্ডের মাটিতে প্রথম। কোন সুযোগ নয়, প্রথম এক ঘন্টায় যাকে বলে নিখুঁত ব্যাটিং ওপেনারদ্বয়ের। ডিউক বলের(Duke Ball) বাড়তি মুভমেন্টে আলাদা করে সমস্যায় পড়তে দেখা যায়নি কাউকেই। রোহিতের(Rohit Sharma) চেনা ড্রাইভ, গিলের(Shubhman Gill) আত্মবিশ্বাসী পুলে দিনকয়েক আগেই ইংল্যান্ড ব্যাটিং লাইন-আপকে কাঁপুনি ধরানো কিউয়ি বোলিংব্রিগেডকে কেমন যেন অচেনা লাগছিল। ওপেনিং জুটিতেই ৫০ তুলে ভারতকে একটা দারুণ শুরু এনে দেন দুই ওপেনার।
কিন্তু মধ্যাহ্নভোজের বিরতির আগে হঠাতই ছন্দপতন। দলীয় ৬২ রানের মাথায় দীর্ঘকায় জেমিসনের(Kyle Jamieson) ডেলিভারিতে ঠকলেন রোহিত। একটা ফুল লেংথ ডেলিভারি ড্রাইভ করতে গিয়ে স্লিপে ভারতীয় ওপেনার ৩৪ রানে (৬৮) ধরা পড়লেন সাউদির(Tim Southee) হাতে। সঙ্গীকে হারিয়ে লম্বা হল না গিলের ইনিংসও। ওয়্যাগনারের(Neil Wagner) প্রথম ওভারেই উইকেট ছুঁড়ে দিলেন পঞ্জাব ওপেনার। ৬৪ বলে ২৮ রানের সাহসী ইনিংস খেলে ফিরে যান নাইট ব্যাটসম্যান। লম্বা হয়নি পূজারার(Cheteshwar Pujara) ইনিংস। বিরতির পর ৩৫ বলে রানের খাতা খোলেন ‘মিস্টার ডিপেন্ডবল’। কিন্তু দু’টি বাউন্ডারি সহযোগে ৫৪ বলে ৮ রান করে বোল্টের(Trent Boult) বলে এলবিডুব্লু হয়ে ফেরেন তিনি। লড়াই শুরু হয় অধিনায়ক এবং তাঁর ডেপুটির।
সেই লড়াই জারি থাকে দিনান্ত পর্যন্ত। প্রথম দু’টি সেশন নির্বিঘ্নে হলেও দ্বিতীয়দিন তৃতীয় সেশনে বৃষ্টি খেলায় বিঘ্ন ঘটায়। মেঘাচ্ছন্ন আবহাওয়ায় তাড়াতাড়িই কমে আসে দিনের আলো। ফলে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই বন্ধ হয়ে যায় খেলা। ৯৮ ওভার খেলা হওয়ার কথা থাকলেও ৬৪.৪ ওভারের বেশি গড়ায়নি প্রথমদিনের খেলা। তৃতীয় সেশনে খেলা সেই অর্থে খেলা গড়ায়নি বললেই চলে। তবে দ্বিতীয়দিনের শেষে কিউয়ি বোলারদের কাঁধে জাঁকিয়েই বসেছেন কোহলি এবং তাঁর ডেপুটি রাহানে। ১২৪ বল খেলে মাত্র একটি বাউন্ডারি সহযোগে কোহলির(Virat Kohli) ৪৪ রান দৃষ্টান্ত। রাহানে(Ajinkya Rahane) ৭৯ বলে অপরাজিত ২৯ রানে।
তৃতীয়দিন ভারতের ইনিংসকে কতদূর এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেন অধিনায়ক এবং ডেপুটি সেটাই দেখার। তবে অনুরাগীদের প্রত্যাশা বৃষ্টি যেন লম্বা ইনিংস খেলে ‘খলনায়ক’ না বনে যায়।