করোনার জেরে দীর্ঘ বিরতির পর আমিরশাহীতে (UAE) শুরু হয়েছে আইপিএল। তার উপর দর্শকশূন্য মাঠেই খেলতে হচ্ছে ক্রিকেটারদের। এমন পরিস্থিতিতে যে টিভি আর ডিজিটাল পর্দায় দর্শকের সংখ্যাটা রেকর্ড অঙ্কে পৌঁছে যাবে, তেমন আশাই করেছিল সম্প্রচারকারী চ্যানেলগুলি। তবে ফল আশাতীত। উদ্বোধনী ম্যাচেই তৈরি হল বিশ্বরেকর্ড!
মার্চ মাসের পর করোনার জেরে স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল খেলার দুনিয়া। শ্মশানের নিস্তব্ধতা নেমেছিল বাইশ গজে। যে ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীরা গোটা বছর ক্রিকেট দেখে অভ্যস্ত তাঁরা বছরের অর্ধেকটা সময়ই বাইশ গজের লড়াই দেখা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। তাই আইপিএল (IPL) ঘোষণা হতেই যেন স্বস্তি ফেরে। করোনা আবহে সন্ধে সাড়ে ৭টা থেকে দেশে কার্যত অঘোষিত কারফিউই জারি হয়ে গিয়েছে। প্রথম ম্যাচেই যার প্রমাণ মিলল। টিভির পর্দায় ধোনির চেন্নাই বনাম রোহিতের মুম্বই দ্বৈরথ দেখল রেকর্ড সংখ্যক দর্শক। ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডের (BCCI) সচিব জয় শাহ নিজেই জানালেন, ব্রডকাস্ট অডিয়েন্স রিসার্চ কাউন্সিলের (BARC) রিপোর্ট বলছে, টিভি এবং অনলাইন প্ল্যাটফর্মে ২০ কোটি মানুষ হাইভোল্টেজ চেন্নাই-মুম্বই ম্যাচের সাক্ষী থেকেছেন। আজ পর্যন্ত বিশ্বের কোনও লিগ বা কোনও টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী ম্যাচ এত মানুষ দেখেননি। অর্থাৎ আইপিএল ১৩-র প্রথম ম্যাচের ভিউয়ারশিপ হার মানিয়েছে ফুটবল বিশ্বকাপকেও! সাধে কী আর ভারতে ক্রিকেটকে ধর্ম বলে মানা হয়!
করোনার জেরে সমস্ত ক্রিকেটীয় সিরিজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় একটা সময় মাথার উপর বাজ ভেঙে পড়ার মতোই অবস্থা হয়েছিল বিসিসিআইয়ের। ক্রিকেট না ফিরলে প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকার ক্ষতির মুখে পড়তে হত বোর্ডকে। তাই আইপিএল আয়োজনের জন্য মরিয়া ছিলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়রা। আর চলতি বছর আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ স্থগিতের সিদ্ধান্ত নিতেই জট কাটে। ভারত নয়, করোনার জেরে আমিরশাহীতেই নিয়ে যাওয়া হয় টুর্নামেন্ট। তবে দর্শকদের উৎসাহে যে বিন্দুমাত্র ভাটা পড়েনি, তা স্পষ্ট। আইপিএলের অফিসিয়াল টুইটার হ্যান্ডেল থেকেও টুইট করে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করা হয়েছে। কথায় বলে মর্নিং শো’জ দ্য ডে। উদ্বোধনী ম্যাচই যেন জানান দিচ্ছে, বিসিসিআইয়ের লক্ষ্মীর ভাণ্ডার এবার উপচে পড়বে!