‘বিরাটকে সরাতে চাইনি, বলির পাঁঠা করা হয়েছে আমাদের’, বোর্ডের দিকে আঙুল চেতন শর্মাদের

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতের ব্যর্থতার জেরে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে চেতন শর্মার নেতৃত্বাধীন নির্বাচক কমিটিকে। ইতিমধ্যেই নতুন কমিটিতে জায়গা পেতে আবেদন করেছেন অনেকে। ঠিক কী কারণে সরানো হয়েছে নির্বাচকদের? বিশ্বকাপের দল নির্বাচনে ব্যর্থতা? একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত নেওয়া? নাকি অন্য কোনও কারণ? পদ যাওয়ার পরে মুখ খুলেছেন এক নির্বাচক। তাঁর অভিযোগ, বলির পাঁঠা করা হয়েছে তাঁদের। স্বাধীন ভাবে তাঁরা কাজ করতে পারেননি। কিন্তু ব্যর্থতার দায় পুরোপুরি তাঁদের উপর চাপানো হচ্ছে।

সংবাদমাধ্যম ইনসাইড স্পোর্টস ও স্কাইএক্সচ জানিয়েছে, এক নির্বাচক তাঁদের কাছে মুখ খুলেছেন। তিনি বলেছেন, ‘‘ভারতীয় বোর্ড আমাদের জেনে শুনে চলন্ত বাসের তলায় ফেলে দিয়েছে। ওদেরও উচিত ছিল দায় নেওয়া। অধিনায়ক বদলের দায়িত্ব আমাদের একার ছিল না। নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বার বার হস্তক্ষেপ করেছে বোর্ড। বিসিসিআইয়ের নির্দেশেই আমরা রোটেশন পদ্ধতি চালু করেছিলাম। কিন্তু এখন আমাদের বলা হচ্ছে, ৯ মাসে কেন ৮ বার অধিনায়ক বদল করা হল।’’

কে বা কারা তাঁদের চাপ দিয়েছিলেন সেটা অবশ্য জানাননি ওই নির্বাচক। তিনি বলেছেন, ‘‘আমি কারও নাম নেব না। কিন্তু তিনটি ফরম্যাটেই নতুন অধিনায়ক নিয়োগের সিদ্ধান্ত আমাদের একার ছিল না। আমাদের মধ্যে কয়েক জন চেয়েছিল, ২০২৩ সাল পর্যন্ত কোহলিকে অধিনায়ক রাখতে। কিন্তু বিরাটকে সরতে হয়েছিল। কারণ, বিসিসিআইয়ের অনেক কর্তা আলাদা আলাদা ফরম্যাটে আলাদা আলাদা অধিনায়ক রাখতে রাজি ছিলেন না।’’

শুধুমাত্র ক্রিকেটারদের বিশ্রামের জন্যই অধিনায়কত্বে এত বদল করা হয়েছিল বলে দাবি করেছেন তিনি। বলেছেন, ‘‘রোহিতের বয়স ৩৫। তিনটে ফরম্যাটে টানা নেতৃত্ব দেওয়া ওর পক্ষে কঠিন। তাই আমরা রাহুলকে অধিনায়ক করেছিলাম। ওকে চোট পেয়ে রিহ্যাবে যেতে হল। তাই আবার অধিনায়ক করতে হল। কিন্তু এখন সবটাই আমাদের দোষ বলা হচ্ছে।’’ এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত অবশ্য এই অভিযোগের জবাবে কিছু জানায়নি বোর্ড।

ভারতীয় বোর্ড নতুন কমিটির যে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে তার জন্য ইতিমধ্যেই আবেদন করেছেন নয়ন মোঙ্গিয়া, সলিল আঙ্কোলা ও লক্ষ্মণ শিবরামকৃষ্ণণ। ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত নাম জমা দেওয়া যাবে। তার পরে নতুন কমিটি ঘোষণা করবে বোর্ড।

নতুন নির্বাচক কমিটিকে প্রধানত আটটি দায়িত্ব দেওয়া হবে। সেগুলি হল:

  • প্রতিটি ফরম্যাটের জন্য অধিনায়ক নির্বাচন করা।
  • স্বচ্ছ ভাবে সব থেকে শক্তিশালী দল তৈরি করা।
  • জাতীয় দলের জন্য একটি শক্তিশালী রিজার্ভ বেঞ্চ তৈরি করা।
  • যখন প্রয়োজন পড়বে দলের বৈঠকে অংশ নেওয়া।
  • নিয়মিত ঘরোয়া ও আন্তর্জাতিক ম্যাচ দেখতে যাওয়া।
  • প্রতি তিন মাসে বিসিসিআইয়ের অ্যাপেক্স কাউন্সিলের কাছে দলের পারফরম্যান্সের খতিয়ান তুলে ধরা।
  • বিসিসিআই নির্দেশ দিলে দল নির্বাচন নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করা।
  • বিসিসিআইয়ের নিয়ম ঠিক ভাবে পালন হচ্ছে কি না তা খতিয়ে দেখা।

বিসিসিআই সূত্রে খবর, নতুন কমিটির প্রথম কাজ হবে তিনটি ফরম্যাটের অধিনায়ক নির্বাচন করা। তা থেকেই মনে করা হচ্ছে, দু’জন আলাদা অধিনায়কের পথে হাঁটতে পারে বোর্ড। টেস্ট ও এক দিনের অধিনায়ক থেকে যাবেন রোহিত। কিন্তু টি-টোয়েন্টির অধিনায়ক হিসাবে তাঁর জায়গায় বসতে পারেন হার্দিক। এমনিতেই আইপিএলে গুজরাত টাইটান্সকে চ্যাম্পিয়ন করার পর থেকে হার্দিককে ভারতের ছোট ফরম্যাটের অধিনায়ক করার বিষয়ে সওয়াল করেছেন সুনীল গাওস্কর, রবি শাস্ত্রীরা। বিসিসিআইও হয়তো সে কথাই ভাবছে। অধিনায়ক হিসাবে হার্দিক ছাড়া যশপ্রীত বুমরার কথা ভাবা হলেও বুমরার চোটপ্রবণতা তাঁর অধিনায়ক হওয়ার পথে বাধা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.