অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টি সিরিজ়ের প্রথম দু’টি ম্যাচে তিনি রান করতে পারেননি। আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে এশিয়া কাপে শতরানের পর বিরাট কোহলির সাময়িক খারাপ ছন্দ দেখে কিছুটা চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলেন সমর্থকরা। তৃতীয় ম্যাচেই সব আশঙ্কা দূর করে দিলেন কোহলি। অর্ধশতরান করে দলকে জেতাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিলেন। এমনকি, রবিবার অর্ধশতরানের পর ব্যাট তুলে উচ্ছ্বাসও করতে দেখা যায়নি তাঁকে। শুধু এক বার ব্যাটটা আকাশের দিকে তুললেন। ব্যস, ওইটুকুই। রানে ফিরতে এবং নিজের পরিকল্পনা কাজে লাগাতে তিনি কতটা মরিয়া ছিলেন, সেটা এর থেকেই বোঝা গিয়েছে।
কোহলির কথাতেও তারই প্রকাশ। আগের ম্যাচে অ্যাডাম জাম্পার বলে আউট হয়েছিলেন। অজি স্পিনারের বিরুদ্ধে বিশেষ প্রস্তুতি নিতে এ দিন খেলা শুরুর দেড় ঘণ্টা আগেই মাঠে চলে আসেন। গোটা দল আসার আগেই। তার মধ্যে নেটে অনুশীলন করে কাটিয়েছেন আধ ঘণ্টা। তারই ফসল যে অর্ধশতরান, সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। কোহলি বলেছেন, “বিশ্রাম নিয়ে ফিরে আসার পর ব্যাটিংয়ের প্রতিটা মুহূর্ত উপভোগ করেছি। এশিয়া কাপেও ভাল খেলেছি। আজ দেড় ঘণ্টা আগে মাঠে চলে এসেছি। ৩০ মিনিট ধরে নেটে অনুশীলন করেছি। যে ভাবে খেলার পরিকল্পনা করছি, সেটা নিয়ে খুশি। ফিটনেস নিয়েও পরিশ্রম করছি। অনুশীলন বা জিমে যাওয়ার ব্যাপারে আগের মতোই আগ্রহ রয়েছে। আগের ম্যাচে ভাল খেলতে না পারার ব্যাপারটা মাথায় ছিল। আজ দলের জয়ে অবদান রাখতে পেরে খুশি। বড় রান না পেলে আর হা-হুতাশ করি না। পরের ম্যাচ নিয়েই ভাবতে শুরু করি। এ ভাবেই খেলে যেতে চাই।”
রাহুল শুরুতেই আউট হয়ে যাওয়ার পর কোহলির ঘাড়ে অনেকটাই দায়িত্ব এসে পড়েছিল। সেই দায়িত্ব ভাল ভাবেই পালন করেছেন তিনি। কোহলির কথায়, “তাই জন্যেই তো আমি তিনে ব্যাটিং করি। ওই জায়গায় নিজের অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে চাই। শুরুটা ভাল হওয়ার পরেই জাম্পাকে আক্রমণ করা শুরু করি। আজ জাম্পাকে মারব ঠিকই করে রেখেছিলাম। ও ভাল বোলার। অভিজ্ঞতা থেকে বুঝেছি, ও সব সময় চেষ্টা করে আমার রানের গতি কমিয়ে রাখতে স্টাম্প লক্ষ্য করে বল করার। তাই জন্যে আগে থেকে লেগ স্টাম্পে স্টান্স নিয়েছিলাম। আগের ম্যাচের পর একটু হতাশ হয়ে পড়েছিলাম। তাই আজ মাঝের ওভারগুলোতে মারতে চেয়েছি, যাতে শেষের দিকে দল চাপে না পড়ে। ম্যাচটা এত দূর গড়ানো উচিত হয়নি। শেষ ওভারে ১১-র বদলে আমাদের চার-পাঁচ হয়তো তাড়া করা উচিত ছিল। চেয়েছিলাম অন্তত প্রতি ওভারে একটা চার মারতে।”
কোহলির কাজ আরও সহজ হয়ে যায় সূর্যকুমার যাদব ক্রিজে আসায়। শুরু থেকেই চালিয়ে খেলতে থাকেন সূর্য। তিনি ক্রিজে থাকাকালীন কোহলি একটু ধীর গতিতে খেলছিলেন। সেই প্রসঙ্গে বললেন, “রোহিত এবং রাহুল ডাগ আউট থেকে আমাকে বলছিল ধরে খেলতে। আমাদের তখন দরকার ছিল লম্বা জুটি গড়া। তাই আমি ধরে খেলার দিকে মন দিলাম। সূর্য আউট হওয়ার পর দুটো বল দেখে নিয়ে আবার আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে ফিরে আসি।”
সূর্য সম্পর্কে কোহলির প্রতিক্রিয়া, “ওকে নিয়ে আর নতুন করে কী বলব! যে কোনও পিচ, যে কোনও পরিস্থিতিতে ও ভাল খেলতে পারে। সেটা ও আগেই দেখিয়েছে। ইংল্যান্ডে গিয়ে শতরান করেছে। এশিয়া কাপে ভাল খেলেছে। অসাধারণ ব্যাটার। ওর হাতে শটের বৈচিত্র রয়েছে। তবে সেটা সঠিক সময়ে খেলা খুব গুরুত্বপূর্ণ। কোনও শট খেলতেই ভয় পায় না সূর্য।”