যা প্রত্যাশা করা হয়েছিল তাই হল। সর্বভারতীয় ফুটবল সংস্থার (এআইএফএফ) সভাপতি পদে নির্বাচিত হলেন কল্যাণ চৌবে। শুক্রবার নির্বাচনে ভাইচুং ভুটিয়াকে ৩৩-১ ভোটে হারিয়ে দিলেন তিনি। এআইএফএফ-এর ৮৫ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম কোনও প্রাক্তন ফুটবলার সভাপতি পদে বসতে চলেছেন। এআইএফএফ-এর শীর্ষপদে আবার এক বাঙালিকে দেখা যেতে চলেছে। শেষ বার সভাপতি হয়েছিলেন প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি। সহ-সভাপতি পদে নির্বাচিত হলেন কর্নাটক রাজ্য সংস্থার সভাপতি এন এ হ্যারিস। কোষাধ্যক্ষ হলেন কিপা অজয়।
ভোটে যতই লড়তে হোক, সভাপতি পদে কল্যাণ যে অনেক বেশি ভোট পাবেন, এটা নিয়ে কোনও সন্দেহের অবকাশ ছিল না। বেশির ভাগ রাজ্য সংস্থার সমর্থন ছিল তাঁর দিকেই। ভোটের অনেক আগে থেকেই রাজ্য সংস্থাগুলির সঙ্গে বৈঠক করে তাদের সমর্থন আদায় করে নিয়েছিলেন কল্যাণ। ভোটের ফলেও তাঁর ইঙ্গিত মিলেছে। ভাইচুং দাঁড়াতে পারেননি। দু’টি সংস্থা ছিল তাঁর পিছনে। ভোটের ফলে দেখা যাচ্ছে, মাত্র একটি ভোট পেয়েছেন। অর্থাৎ তাঁর পাশে দাঁড়ানো রাজ্য সংস্থারও আস্থা অর্জন করতে পারেননি ভাইচুং।
ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ককে তাঁর নিজের রাজ্য সংস্থা সিকিমই সমর্থন করেনি। তিনি লড়েছেন অন্ধ্রপ্রদেশ ফুটবল সংস্থার হয়ে। সমর্থন করেছিল রাজস্থান ফুটবল সংস্থা। অন্য দিকে, কল্যাণ দাঁড়িয়েছিলেন গুজরাত রাজ্য সংস্থার হয়ে, যে রাজ্যের বাসিন্দা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। কল্যাণ নিজেও বঙ্গ বিজেপির সক্রিয় সদস্য। ফলে রাজনৈতিক ভাবে সমস্ত সমর্থন ছিল তাঁর দিকেই।
ভাইচুংকে নির্বাচনে জিততে গেলে অসাধ্যসাধন করতে হত। তিনি বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে, বিভিন্ন ভাবে সমর্থন আদায় করার চেষ্টা করেছেন। উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিকে আবেদন করেছিলেন তাঁর পাশে দাঁড়ানোর জন্য। সেই আবেদন কাজে দিল না। অন্তত এ বারের মতো ভারতীয় ফুটবলের মসনদে বসার স্বপ্ন অধরাই থেকে যাচ্ছে ভাইচুংয়ের কাছে।
প্রসঙ্গত, মনোনয়ন জমা দেওয়ার আগেই নিজের পরিকল্পনা জানিয়েছিলেন কল্যাণ। তিনি বলেছিলেন, “ফুটবলের ভাল-খারাপ দুটো দিকই দেখেছি। ফুটবলার হিসাবে ট্রেনে শৌচাগারের পাশে বসে যেতে হয়েছে। আবার বিলাসবহুল হোটেলেও থেকেছি। এক জন ফুটবলারকে কী কী সমস্যার মধ্যে দিয়ে যেতে হয় সেটা আমি জানি। তাই ওদের জন্য কাজ করতে হলে কোনও বই পড়তে হবে না। আমার ২৫ বছরের ফুটবল জীবনের অভিজ্ঞতা কাজে লাগাব। ফুটবলারদের জন্য কাজ করব।”
সভাপতি হলে প্রতিটি রাজ্যের ফুটবল সংস্থার দিকে তিনি নজর দেবেন বলে জানিয়েছিলেন কল্যাণ। তিনি বলেন, “প্রতিটি রাজ্যে ১০ হাজার বর্গফুটের অফিস তৈরি করব। পেশাদারদের দিয়ে ফুটবলকে চালাতে হবে। সবার আগে মূল বিষয়গুলো ঠিক করতে হবে।” পুরুষ ও মহিলাদের ফুটবলকে তিনি সমান গুরুত্ব দেবেন বলে জানিয়েছেন কল্যাণ।