কোচ পাল্টেছে, বদলে গিয়েছে টিমও, কিন্তু একই তিমিরে SCEB, পারবে আজ ঘুরে দাঁড়াতে?

এসসি ইস্টবেঙ্গল গত বার যেখানে শেষ করেছিল, সেখান থেকেই যেন এ বার ফের শুরু করেছে তারা। কোচ বদলে গিয়েছে, টিমও কার্যত নতুন। তবু আইএসএল যুদ্ধে সেই একই তিমিরে দাঁড়িয়ে এসসি ইস্টবেঙ্গল। বরং প্রথম তিন ম্যাচে গোল খাওয়ার নিরিখে রবি ফাওলারের দলকেও ছাপিয়ে গিয়েছে ম্যানুয়েল দিয়াজের লাল-হলুদ।এখনও পর্যন্ত প্রথম তিন ম্যাচে ১০ গোল খেয়ে ফেলেছে তারা। আর গোল খাওয়ার সংখ্যাটাও দিনে দিনে বাড়ছে লাল-হলুদের।

জামশেদপুর এফসি-র বিরুদ্ধে ১ গোল দিয়ে ১ গোল খেয়েছিল তারা। ডার্বিতে এটিকে মোহনবাগানের কাছে ৩ গোল হজম করেছিল। কোনও গোল তারা করতে পারেনি। আর ওড়িশা এফসি-র কাছে তো ৬ গোল খেয়েছে। তবে এই ম্যাচে ইস্টবেঙ্গল ৪ গোল দিয়েছিল। এটা কিছুটা হলেও প্লাস পয়েন্ট। তবে যাই হোক না কেন, চেন্নাইয়িনের বিরুদ্ধে আজ কিন্তু অনেকটাই পিছিয়ে থেকে শুরু করবে লাল-হলুদ ব্রিগেড। তার অবশ্য কতকগুলি কারণ রয়েছে।ট্রেন্ডিং স্টোরিজ

১) চেন্নাইয়িন ২ ম্যাচ খেলে দু’টিতেই জিতেছে। হায়দরাবাদ এফসি এবং নর্থইস্টকে তারা হারিয়েছে। স্বাভাবিক ভাবে মানসিক ভাবে অনেকটাই এগিয়ে থাকবে চেন্নাইয়ের দলটি।

২) প্রথম ম্যাচ ড্র এবং বাকি দুই ম্যাচে হার, দেওয়ালে একেবারে পিঠ ঠেকে গিয়েছে এসসি ইস্টবেঙ্গলের। এখান থেকে আদৌ কি লাল-হলুদ ঘুরে দাঁড়াতে পারবে?

৩) ওড়িশা এফসি-র বিরুদ্ধে ৪ গোল দিয়েছিল লাল-হলুদ। পাশাপাশি ৬ গোল তারা হজমও করেছিল। রক্ষণের যা কঙ্কালসার দশা, তাতে এ রকম ডিফেন্স নিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোটা সত্যিই কঠিন।

৪) লাল-হলুদ কোচই নিজেই হাল ছেড়ে দিয়েছেন। ওড়িশার বিরুদ্ধে হারের পর লাল-হলুদের স্প্যানিশ কোচের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, কবে জয়ে ফিরবে তাঁর দল? যার উত্তরে দিয়াজ বিস্ফোরক মন্তব্য করেন, ‘এটা সত্যিই একটা বড় প্রশ্ন। দল কবে জিতবে সেটা আমারও জানা নেই। যা দল আমাদের হাতে আছে, তাই নিয়েই খেলতে হবে। এই ধরনের ম্যাচ খেলার মতো যথেষ্ট দক্ষতা আমাদের আছে বলে মনে হয় না। মূলত সেট পিসেই আমরা পিছিয়ে যাচ্ছি এবং প্রতিপক্ষরা আমাদের গোল দিয়ে যাচ্ছে। আমাদের কাজ একটা লক্ষ্য স্থির করে সেই লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যাওয়া। কিন্তু ইন্ডিয়ান সুপার লিগের জন্য যে মানটা দরকার, সেখানে আমরা এখনও পৌঁছতে পারিনি।’ কোচই যদি দলের প্রতি বিশ্বাস না রাখতে পারেন, সে ক্ষেত্রে সেই দলের কী হাল হতে পারে, সেটা পরিষ্কার।

৫) কোচের স্ট্র্যাটেজি নিয়েও প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে। কোচ  দলটাই  ঠিকমতো সাজাতে পারছেন না দাবি করেছেন বিশেষজ্ঞরা। দলে সংহতি আনতে তিনি ব্যর্থ। বিশেষজ্ঞরা প্রশ্ন তুলেছেন, কেন আদিল খানকে শুরু থেকে খেলাচ্ছেন না কোচ? বিপক্ষের আক্রমণ ভাগের ফুটবলারদের শক্তি অনুযায়ী রক্ষণ সাজাতে হয়। অনুশীলনে বারবার মহড়া দিতে হয় ওদের আটকানোর। সে সব কিছুই কেন খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না ইস্টবেঙ্গলের খেলায়? এসসি ইস্টবেঙ্গলের ডিফেন্ডারদের দেখে মনে হচ্ছে, প্রতিপক্ষ সম্পর্কে কোনও ধারণাই নেই। হোমওয়ার্ক করানোর দায়িত্ব কোচের। আর সেই দায়িত্ব কোচ ঠিক মতো পালন করছেন না।

ওড়িশার কাছে বাজে ভাবে হারের পর মঙ্গলবার রাতেই জরুরি বৈঠক ডেকেছিলেন ইস্টবেঙ্গল কর্তারা। সেই সন্ধ্যায় প্রায় ঘণ্টাখানেক আলোচনার পরে হরিমোহন বাঙুরকে চিঠি পাঠিয়ে কর্তারা বলেন, দলে ভারসাম্য আনার জন্য যে যে বিভাগে ফুটবলার প্রয়োজন, তা নিতে হবে। সূত্রের খবর, কোন কোন ফুটবলারকে নেওয়া উচিত, তার তালিকাও নাকি ক্লাব কর্তারা বানিয়ে ফেলেছেন।

কিন্তু সব ভাল ফুটবলারদেরই ইতিমধ্যেই সই করি ফেলেছে বিভিন্ন আইএসএল ক্লাব। সেক্ষেত্রে লাল হলুদ কর্তাদের নজরে থাকা কলকাতা লিগ এবং সন্তোষ ট্রফি খেলা কিছু বাঙালি ফুটবলার থাকতে পারেন তালিকায়। কিন্তু তাঁরা এলেই, বা দিয়াজ নিতে রাজি হলেই যে ইস্টবেঙ্গলের হাল ফিরবে, সে কথা নিশ্চিত করে বলা যায় না!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.