বয়স বিভ্রাট নিয়ে জড়িয়েছিলেন বিতর্কে, নৈহাটির সেই সুতীর্থা এবার খেলবেন অলিম্পিকে

কঠিন লড়াই জিতে এখন তিনি রীতিমতো সুপারস্টার। তীরন্দাজ অতনু দাসের পর বাংলা থেকে অলিম্পিকে যাওয়ার ছাড়পত্র পেলেন সুতীর্থা মুখোপাধ্যায় (Sutirtha Mukherjee)। তাও আবার মণিকা বাত্রাকে হারিয়ে। ফলে রীতিমতো ভারতীয় টিটির আঙিনায় সাড়া ফেলে দিলেন নৈহাটির মেয়ে।

দোহায় এশিয়ান কোয়ালিফিকেশন অলিম্পিক টুর্নামেন্টে মুখোমুখি হয়েছিলেন মণিকা-সুতীর্থা। এই লড়াইয়ে জিতলেই জুটত টোকিও যাওয়ার টিকিট। মণিকা এই মুহূর্তে ভারতীয় টিটিতে এক নম্বর স্থানে রয়েছেন। সুতীর্থা দু’য়ে। তার উপর চেনা শত্রু। ফলে দক্ষিণ এশিয়া জোনের এই লড়াইটা ছিল খুবই কঠিন। হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে সুতীর্থা জিতলেন ৭-১১,১১-৭,১১-৪, ৪-১১,১১-৫ ও ১১-৪। পৌলমী ঘটক, মৌমা দাসের পর বাংলার মহিলা টিটি (TT) খেলোয়াড় হিসাবে সুতীর্থা গেলেন অলিম্পিকে। ক্রমপর্যায়ে উপরের দিকে থাকার জন্য মণিকা বাত্রাও যাচ্ছেন অলিম্পিকে। পুরুষদের মধ্যে শরথ কমল ও জি সাথিয়ান যাচ্ছেন।

দোহায় ফোনে ধরতেই উচ্ছ্বসিত কন্ঠে সুতীর্থা বুঝিয়ে দিলেন, কতটা তিনি চাপমুক্ত হতে পেরেছেন। গত রিও অলিম্পিকেই (Tokyo Olympic) যেতে পারতেন। কিন্তু পাঁচ বছর আগে বয়সের কারণে তাঁকে সাসপেন্ড করেছিল টিটি ফেডারেশন। দুর্বিসহ দিনগুলোর কথা তুলে ধরে সুতীর্থা বলছিলেন, “পাঁচ বছর আগে যে ফর্মে ছিলাম সেবারই অলিম্পিকে খেলা প্রায় নিশ্চিত ছিল। কিন্তু বিশ্রী ঘটনা ঘটে যাওয়ায় আর খেলতে পারিনি। তাই এবার ঠিক করেছিলাম যেভাবেই হোক টোকিও যেতে হবে। সেই স্বপ্নপূরণ হয়েছে। তাছাড়া প্রতিটি খেলোয়াড় অলিম্পিকে নামার জন্য স্বপ্ন দেখে। ভাবে কবে সেই পৃথিবীর আসল জায়গায় পৌঁছতে পারবে। সেই আশাও পূর্ণ হল। আর একটা কারণে ভাল লাগছে। আমি যে খেলতে পারি, আমি যে কাউকে ঠকিয়ে বড় হতে চাইনি, সেটা আজ প্রমাণ করতে পেরেছি।”

আগামী তিন মাসের পরিকল্পনা কী হবে তা ২২ তারিখ অর্থাৎ সোমবার শহরে ফিরলে ঠিক করবেন। বসবেন কোচ সৌম্যদীপ বসু ও পৌলমী ঘটকের সঙ্গে। “সৌম্যদীপ দাদা ও পৌলমী দিদি যা বলবেন তাই করব। তবে ইচ্ছে আছে ইউরোপে ট্রেনিং নেওয়ার। ইচ্ছে থাকলেই তো হবে না। খরচ আছে। স্পনসর পেলে ইউরোপ যেতে পারি।” দোহা থেকে ফোনে জানিয়ে দিলেন সুতীর্থা।

সুতীর্থা বলে দিলেন, ফিটনেস ট্রেনিংয়ের উপর এবার জোর দেবেন। “ওজন একটু কমাতেই হবে। তাছাড়া চেষ্টা করব যে ভুলগুলো করেছি সেগুলো শুধরে নেওয়ার।” করোনার জন্য দীর্ঘদিন ট্রেনিং না করা সত্ত্বেও কীভাবে অলিম্পিকের ছাড়পত্র জোগাড় করলেন? “বাড়িতে অনলাইনে ফিটনেস ট্রেনিং করতাম। শ্যাডো প্র‌্যাকটিস চলত। বাড়ির সামনে নৈহাটিতে টিটি সেন্টারে গিয়ে প্র‌্যাকটিসে নামতাম।” ছোটবেলার কোচ মিহির ঘোষ মনে করছেন “মণিকাকে হারিয়ে কোয়ালিফাই করার মধ্যে আলাদা একটা আনন্দ থাকবেই। এই মুহূর্তে জাতীয় চ্যাম্পিয়ন ও। বিশ্ব র‌্যাঙ্কিংয়ে এগিয়ে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.